১২০০ কিমি রাস্তা পেরিয়ে অসুস্থ বাবাকে গ্রামে আনা ধন্যি মেয়ের জন্য বড় পুরস্কার
সাইকেল ফেডারেশন এরই মধ্যে জ্যোতির সঙ্গে কথা বলেছে। ফেডারেশন—এর কর্তারা মনে করছেন, সাতদিনে ১২০০ কিমি রাস্তা সাইকেল চালানো মুখের কথা নয়। তাও আবার একা নয়। ক্যারিয়ারে অসুস্থ বাবাকে বসিয়ে।
নিজস্ব প্রতিবেদন— ১২০০ কিমি রাস্তা সাইকেল চালিয়ে পার করেছিল জ্যোতি কুমারী। তাও একা নয়। সাইকেলের ক্যারিয়ার—এ ছিল তাঁর বাবাও। ১৫ বছরের মেয়ে জ্যোতি কুমারী। অসুস্থ বাবাকে নিয়ে ১২০০ কিমি রাস্তা পার করে বিহারে নিজের গ্রামে ফিরেছে সে। আর এমন একখানা অসাধ্য সাধন করায় বড়সড় চমক অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। জ্যোতিকে ট্রায়ালে ডেকেছে সাইকেল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া। সামনের মাসে ট্রায়ালের জন্য দিল্লি যাবে জ্যোতি। দিল্লি যাওয়ার যাবতীয় খরচ বহন করবে সাইকেল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া। সাইকেল ফেডারেশন—এর চেয়ারম্যান ওঙ্কার সিং জানিয়েছেন, ট্রায়ালে পাস করলে জ্যোতিকে দিল্লির ন্যাশনাল সাইকেল অ্যাকাডেমিতে রাখা হবে।
সাইকেল ফেডারেশন এরই মধ্যে জ্যোতির সঙ্গে কথা বলেছে। ফেডারেশন—এর কর্তারা মনে করছেন, সাতদিনে ১২০০ কিমি রাস্তা সাইকেল চালানো মুখের কথা নয়। তাও আবার একা নয়। ক্যারিয়ারে অসুস্থ বাবাকে বসিয়ে। জ্যোতির এমন কাণ্ড অবাক করছে কর্তাদের। ক্লাস এইটে পড়ে জ্যোতি। কিন্তু টাকার অভাবে আর কতদিন পড়াশোনা চালাতে পারবে সে জানা নেই। গুরুগ্রামে রিক্সা চালিয়ে উপার্জন করতেন জ্যোতির বাবা। কিন্তু গত মার্চে তার বাবা মোহন পাশওয়ান এক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম হন। এর পর লকডাউন। বাবাকে গুরুগ্রামে আনতে গিয়ে আটকে পড়ে সে। বাবার কাজ নেই। হাতে টাকা নেই। খাবার নেই। এর মধ্যে যে বাড়িতে তাঁর বাবা ভাড়া থাকতেন সেই বাড়িওয়ালা তাদের ভাড়া না দিলে তুলে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। বাধ্য হয়েই বাবাকে সাইকেলে চাপিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আরও পড়ুন— অসুস্থ বাবাকে সাইকেলে নিয়ে ১২০০ কিমি পথ পাড়ি, ধন্যি মেয়ে বটে!
এতটা রাস্তা সাইকেলে পাড়ি দিতে মেয়েকে বারণ করেছিলেন মোহন পাশওয়ান। কিন্তু জ্যোতি কথা শোনেনি। শেষমেশ তার জেদ তাকে জিতিয়ে দেয়। অসুস্থ বাবাকে সাইকেলে চাপিয়ে গ্রামে ফিরে আসে জ্যোতি। এখানে এসেও অর্থকষ্ট থাকবে। হয়তো দুবেলা খাবার জুটবে না। তবু নিজের বাড়িতে থাকা যাবে। কিছু একটা ব্যবস্থা ঠিকই হবে। ধার করে একখানা সাইকেল কেনে জ্যোতি। তার পর পাড়ি দেয় ১২০০ কিমি রাস্তা। সাত দিন ধরে সাইকেল চালায় সে। এর মধ্যে দুদিন আবার খাবারও জোটেনি। খালি পেটে থাকলেও মনের জোর কমেনি জ্যোতির।