Manoj Tiwary, BEN vs SAU: বদলার আবহের ফাইনালে ইডেনে 'গ্রিন টপ', সৌরাষ্ট্রকে হুঙ্কার দিলেন মনোজ
মাঠ ছাড়ার আগে জোরকদমে অনুশীলন করলেন মনোজ, অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিমন্যু ইশ্বরণরা। বিপক্ষের উনাদকাট, চেতন সাকারিয়াদের সামলাতে অনুশীলনে বাঁহাতি নেট বোলারদের বিরুদ্ধে মহড়া নিয়েছেন সুদীপ ঘরামি-করণ লালরা।
সব্যসাচী বাগচী
এই ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) বাংলা দলের অনেক ভালো-মন্দ স্মৃতি রয়েছে। ক্রিকেটের নন্দন কাননের বাইশ গজে রচিত হয়েছে অনেক ইতিহাস। তবে এবারের ইডেন একেবারে আলাদা। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। ফের একবার ইডেনে রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল (Ranji Trophy Final 2023) খেলতে নামবে বঙ্গব্রিগেড। প্রতিপক্ষ সৌরাষ্ট্র (Saurashtra)। এমন একটা বিপক্ষ, যাদের কাছে রাজকোটে (Rajkot) ২০১৯-২০ মরসুমের ফাইনাল হেরেছিল বাংলা। এবার জয়দেব উনাদকাট (Jaydev Unnadkat)-অর্পিত ভাসাবাদাদের (Arpit Vasavada) বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার পালা। এমন একটা মেগা ফাইনালের আগে একেবারে চেগে রয়েছেন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary)। সেটা তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই পরিষ্কার। বিপক্ষকে হারিয়ে ৩৩ বছর পর ফের একবার ঘরের মাঠে ফাইনাল জয়ের হাতছানি। হেড কোচ লক্ষ্মী রতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla) ও মনোজের বাংলা বিপক্ষকে ঘাসে ভরা বাইশ গজে স্বাগত জানাচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেমি ফাইনালে দারুণ পারফর্ম করেছিলেন প্রদীপ্ত প্রামাণিক (Pradipta Pramanik)। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬০ রান করার সঙ্গে নিয়েছিলেন ৫১ রানে ৫ উইকেট। তবুও এবার ঘাসে ভরা বাইশ গজের ফাইনালে তাঁর খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। বরং ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে পারফর্ম করা আকাশ ঘটককে (Aakash Ghatak) চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এদিকে বাঁ পায়ের আঙুলে চোট পেয়েছিলেন ঈশান পোড়েল (Ishan Porel)। সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হওয়ার বলে চোট পান ঈশান। পঞ্চম দিন প্রথম ওভারে আবেশ খানের বল সরাসরি এসে ঈশানের বাঁ পায়ে আঙুলে পড়েছিল। ড্রেসিংরুমে ফিরে জুতো খুলতেই দেখেন জায়গাটা ফুলে গিয়েছে। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে আর মাঠে নামতে পারেননি ঈশান। যদিও এদিন মাঠে নেমে কয়েক ওভার বল করেন এই জোরে বোলার। ফলে আকাশ দীপ ও মুকেশ কুমারের সঙ্গে ঈশান নামলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। আর তাই চার বোলারের সঙ্গে শাহবাজ আহমেদকে জুড়ে দিয়ে বিপক্ষের ব্যাটারদের বধ করতে চাইছেন মান্নি।
আরও পড়ুন: Ranji Trophy Final 2023, BEN vs SAU: পুরো ডিআরএস-কে স্বাগত জানালো মনোজের বঙ্গব্রিগেড
অনুশীলনের শেষে মনোজ বলেন, "ইডেনের পিচ নিয়ে আমরা খুবই খুশি। এমনই পিচ চেয়েছিলাম। এই পিচে ঘাস থাকার জন্য জোরে বোলাররা বাড়তি সুবিধা পাবে। আমরা যেমন চাইছিলাম তেমনই পিচ পাচ্ছি। এবার মাঠে নেমে পারফর্ম করতে চাই। ওদের দলে জয়দেব উনাদকাট আছে। ও ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে আসছে। তবে যদি দুই দলের জোরে বোলারদের তফাৎ করি, তাহলে আমাদের বোলাররা অনেকটা এগিয়ে রয়েছে।"
এরপরেই সৌরাষ্ট্রকে চাপে রাখার জন্য মাঠের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটালেন মনোজ। স্পষ্ট বলে দিলেন, "সৌরাষ্ট্র খুব ভালো দল। গত কয়েক বছর ওরা সব ফরম্যাটেই ভালো পারফরম্যান্স করেছে। ওদের দলে চেতেশ্বর পূজারা ও উনাদাকাট ছাড়া বড় নাম নেই। সবাই একজোট হয়ে পারফর্ম করেছে বলেই সৌরাষ্ট্র সাফল্য পাচ্ছে। যদিও ওরা রাজকোট কিংবা অন্য ভেন্যুর স্লো উইকেটে খেলতে পছন্দ করে। আর তাই আমার মন বলছে এটা একপেশে ফাইনাল হবে। আর ফাইনাল জিতে চ্যাম্পিয়ন হব আমরা।" নিজের দলের সার্বিক শক্তি বিচার করেই এই মন্তব্য তাঁর। বিপক্ষ সৌরাষ্ট্র মাঠে নামার আগেই ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে দিলেন বঙ্গ অধিনায়ক। ফাইনালে দলকে উজ্জীবিত করতে মাঠে থাকার কথা ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের। ফল আশানুরূপ হলে, মাঠে দেখা দেখা যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
এদিকে মাঠ ছাড়ার আগে জোরকদমে অনুশীলন করলেন মনোজ, অনুষ্টুপ মজুমদার, অভিমন্যু ইশ্বরণরা। বিপক্ষের উনাদকাট, চেতন সাকারিয়াদের সামলাতে অনুশীলনে বাঁহাতি নেট বোলারদের বিরুদ্ধে মহড়া নিয়েছেন সুদীপ ঘরামি-করণ লালরা। অধিনায়ক মনোজকে নেটে বোলিং করলেন কোচ লক্ষ্মীও। মেগা ফাইনালের পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে। অবাধ দর্শক প্রবেশের ব্যবস্থা রাখছে সিএবি। ইডেনের বি, সি, কে, এল ব্লকে বসে খেলা দেখতে পারবেন দর্শকরা। গ্যালারি ভরানোর জন্য লাগবে না কোনও টিকিট। সোমবার কলকাতা পুলিসের সঙ্গে কথা বলে সরকারি অনুমতি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে সিএবি। কারণ বঙ্গব্রিগেডের জন্য গলা ফাটাতে তৈরি বাংলা।