অবিলম্বে বন্ধ হোক এই বিরসা-রাজনীতি, আন্দোলনের হুমকি আদিবাসী সমাজের
আসন্ন ভোটের দিকে তাকিয়েই কি বিরসা-বিতর্ক জিইয়ে রাখা, প্রশ্ন আদিবাসী মহলে
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিরসা মুন্ডাকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বন্ধ হোক, বন্ধ হোক বিরসাকে নিয়ে আদিবাসী সেন্টিমেন্টের রাজনীতি। গর্জে উঠল 'ভারত জাকাৎ মাঝি পারগানা মহল', 'ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ' ও 'পশ্চিমবঙ্গ ভূমিজ ভাষা কমিটি' । জঙ্গলমহলেও পড়ল এ সংক্রান্ত পোস্টার।
বিরসা মুন্ডার মূর্তি বিতর্কে নয়া মোড়। বিরসাকে নিয়ে রাজনীতি বন্ধ না হলে বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল আদিবাসীদের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। বিরসাকে নিয়ে রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় পড়ল পোস্টারও।
বিরসা-বিতর্ক জিইয়ে রেখে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক মাইলেজ পাওয়ার যে চেষ্টা শুরু হয়েছিল সেই চেষ্টাই কি এ বার ব্যুমেরাং হতে চলল? অন্তত তেমনটাই মনে করছে এ রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।
৫ নভেম্বর বাঁকুড়ায় পৌঁছে শহর লাগোয়া পুয়াবাগানে একটি আদিবাসী মূর্তিকে বিরসা মুন্ডার মূর্তি বলে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুরু হয় বিতর্ক। মূর্তিটি বিরসার নয়, সেটি এক আদিবাসী শিকারির-- এই দাবি করে পরের দিনই মাঠে নামে তৃণমূল। বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি মূর্তির শুদ্ধকরণও হয়। ১৫ নভেম্বর বিরসার জন্মদিনে ফের বিতর্ক উস্কে মূর্তিস্থলে হাজির হন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তাঁর উপস্থিতিতে ফের মূর্তিটির শুদ্ধকরণ হয়। আবার ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূর্তিস্থলে হাজির হয়ে পার্শ্ববর্তী জায়গায় বিরসার প্রায় ৪০ ফুট উঁচু মূর্তি স্থাপনের অঙ্গীকার করে তৃণমূল।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরসা মুন্ডা মূর্তি ইস্যু জিইয়ে রেখে বাঁকুড়া-সহ আশপাশের জেলার আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ককে নিজেদের পক্ষে টানতেই এই ইচ্ছাকৃত চেষ্টা শুরু হয়েছে ঘাস ও পদ্মফুল শিবিরে।
স্থানীয় বিজেপি নেতা পার্থসারথি কুন্ডু বলেন, 'বিরসার মূর্তি নিয়ে বিজেপি কোনও রাজনীতি করছে না। বিজেপি চিরকাল আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন চেয়েছে। এই রাজনীতিটা করছে বরং অন্য দল। তার মধ্যে তৃণমূল আছে, সিপিএম আছে।'
তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা অবশ্য বলেন, 'ভগবান বিরসার মূর্তি নিয়ে বিজেপি যে ভাবে রাজনীতি করছে তাতে আমাদের সমস্ত স্তরের আদিবাসী মহল প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে।'
কিন্তু দুই যুযুধান দলের বিরসা-সংক্রান্ত রাজনৈতিক কর্মপ্রক্রিয়ার মাঝেই এ বার গর্জে উঠল ভারত জাকাৎ মাঝি পারগানা মহল, আদিবাসী ভূমিজ সমাজ ও ভূমিজ ভাষা কমিটি-সহ একাধিক আদিবাসী সামাজিক সংগঠন। ইতিমধ্যেই সংগঠনগুলি এই রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন প্রান্তে পোস্টার ঝুলিয়েছে। সংগঠনগুলির দাবি, আদিবাসীদের কাছে ভগবানের সমতুল বিরসাকে নিয়ে দু'দলই যে ভাবে রাজনীতি শুরু করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ভাবে চললে অবিলম্বে আদিবাসীরা আরও বড় আন্দোলন গড়ে তুলবে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু-কল্যাণ দ্বৈরথে সরগরম বঙ্গরাজনীতি