শান্তিনিকেতনে প্রাচীর বিতর্ক অব্যাহত, ব্যানার ও গানে প্রতিবাদে সামিল আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শুধু পৌষমেলার মাঠ প্রাচীর দিয়ে ঘেরার সিদ্ধান্ত নেয়নি। বুধবার সকালে জানা গেছে সঙ্গীতভবনের সামনের দিক, রতনপল্লি সহ শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকা বড়বড় প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অশান্ত শান্তিনিকেতন। রণক্ষেত্র বিশ্বভারতী। এটা শুধু বাঙালীর আবেগকে আঘাত করেনি, কুলষিত করেছে বাংলা ঐতিহ্যকে। গত সোমবার থেকে শান্তিনিকেতনে যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে তা থামার কোন লক্ষণ নেই বরং প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন বিতর্ক দানা বাঁধছে।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শুধু পৌষমেলার মাঠ প্রাচীর দিয়ে ঘেরার সিদ্ধান্ত নেয়নি। বুধবার সকালে জানা গেছে সঙ্গীতভবনের সামনের দিক, রতনপল্লি সহ শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকা বড়বড় প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। পৌষমেলার মাঠ তো আগেই ঘেরার চেষ্টা করেছে। আর এই পৌষমেলার মাঠে প্রাচীর দেওয়া নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত।
উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনের সঙ্গীত ভবনের সামনে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রায় ৯ ফুট উচ্চতার প্রাচীর তৈরির কাজ৷ এবার এর প্রতিবাদে পথে নামলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, আশ্রমিক থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের প্রবীন বাসিন্দারা। বুধবার সকালে সবাই মিলে হাতে লেখা ব্যানার নিয়ে এবং গান গেয়ে বিক্ষোভ দেখায় সঙ্গীত ভবনের সামনে। শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, প্রাক্তনী সহ এলাকার প্রবীণ নাগরিকদের দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই হিটলারি মানসিকতায় শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যকে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় বড়বড় প্রাচীর তুলে দেওয়া ফলে তাঁরাও বন্দিদশা চলে যেতে বসেছে। কারণ বিশ্বভারতী তাঁদের নিজেদের জায়গায় প্রাচীর তুললেও তার পাশেই রয়েছে ব্যক্তিগত মালিকানার সম্পত্তি। সেখানে বাড়ি তৈরি করে বহুবছর ধরে বসবাস করছেন আশ্রমিক, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী সহ সমাজে প্রতিষ্ঠিত নানা মানুষ।
তাই প্রতিবাদে নেমে সবাই সংঘবদ্ধ হয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, “ এতবড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কারোর সঙ্গে কথা বলা হয়নি। শান্তিনিকেতন বাংলার আবেগ। বিশ্বভারতীর সম্পত্তি হলে বাংলার আবেগকে আঘাত করার অধিকার তাঁদের নেই। এই ঐতিহ্যকে এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। শান্তিনিকেতনের মানুষকে বন্দিদশার জীবনে নিয়ে যেতে চাইছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।“
আরও পড়ুন: থ্যাঁতলানো মাথা, ক্ষতবিক্ষত শরীর, পুরনো ভবনের ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে উদ্ধার ২ শ্রমিকের দেহ
অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককে। ইতিমধ্যেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর কেন্দ্রের কাছে নিরাপত্তাও চেয়েছে তাঁরা।