Durga Puja 2022: পুজোয় দুর্গার মুখ দেখেন না ডুয়ার্সের এই জনগোষ্ঠীর মানুষজন, কারণ জানলে অবাক হবেন
অসুর জনগোষ্ঠীর প্রবীণ সুকনা অসুর বলেন, পুজোয় মণ্ডপে যাই না। প্রসাদও খাই না। আসলে অসুর আমাদের রাজা ছিলেন। তাঁকে বধ করেছিলেন মা দুর্গা। তাই পুজোয় যাই না
অরূপ বসাক: মহালয়ার সঙ্গে দেবীপক্ষের সুচনা হয়ে গেল। কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে দুর্গা পুজো। আনন্দে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। রীতিমতো উৎসবের মেজাজে কাটবে পুজোর কটা দিন। তবে এই পুজো সবার জন্য আনন্দের নয়। কারও কারও কাছে বিষাদেরও। কেননা তাদের অসুর দেবতা মা দুর্গার হাতেই বধ হয়েছিল। এই কারণে পুজোর কটা দিন মা দুর্গার মুখদর্শন পর্যন্ত করেন না ডুয়ার্সের অসুর সম্প্রদায়ের মানুষজন। ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের ভুটান সীমান্ত লাগোয়া কেরন চা বাগানে একটি অংশে অসুর জনজাতির মানুষের বাস। দীর্ঘ কয়েক দশক এই চা বাগান এলাকায় রয়েছেন তারা। সর্বসাকুল্যে ৩৫০-৪০০ জন অসুর সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন এই গ্রামে।
আরও পড়ুন-মাথায় ঘুরছে মায়ের আত্মত্যাগ, দীপ্তির পাশে দাঁড়িয়েই ঘরে ফিরছেন 'চাকদহ এক্সপ্রেস'
এই চা বাগান এলাকায় দুর্গা পুজোর আয়োজন হলেও পুজোর অনুষ্ঠানে শামিল হন না অসুররা জনজাতির মানুষজন। গোটা গ্রাম যখন পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন, তখন অসুররা পুজোয় সামিল হয় না। সেই সময় কার্যত নিজেদের বাড়িতে বন্দি থাকেন। কারণ মা দুর্গার মুখ দেখা নিষেধ। তবে সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি এখন বদলেছে ।আজকের সময়ে অসুররাও পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন, এমনকি পুজোর সময় নতুন জামা কাপড় পরে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ান।
একটা সময় ছিল যখন বাড়ির কচিকাঁচাদের রীতিমতো সাবধান করে দেওয়া হতো যাতে তারা পুজোর মণ্ডপের দিকে পা না বাড়ায়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে পুজো মণ্ডপে যেতে সেই ভাবে আর বাধা দেওয়া হয় না। তবে এখনো অনেক অসুর সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন যারা পুজো মণ্ডপ থেকে দূরেই থাকেন।
অসুর জনগোষ্ঠীর প্রবীণ সুকনা অসুর বলেন, পুজোয় মণ্ডপে যাই না। প্রসাদও খাই না। আসলে অসুর আমাদের রাজা ছিলেন। তাঁকে বধ করেছিলেন মা দুর্গা। তাই পুজোয় যাই না। এখন বাড়ির ছোটরা আর এসব মানে না। মণ্ডপে চলে যায়। বড়রা এখনও যায় না। আমাদের বড়রা আমাদের বারবার বলতেন পুজোয়া যাওয়া যাবে না। অন্যদিকে, তৃণা অসুর নামে এক তরুণী বলেন, আমরা পুজোয় দেখতে যাই। নতুন কাপড়ও পরি। কেউ বাধা দেয় না।