Birbhum Flood: বন্যায় ডুবল লাভপুরের ১৫ গ্রাম, মাইথন থেকে ছাড়া জলে জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা হাওড়া-হুগলির একাংশ

Birbhum Flood: ঝাড়খণ্ডের অতি বৃষ্টিপাতের ফলে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হল আড়াই লক্ষ কিউসেক। যে জল দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে এসে পড়বে রাত আটটা নাগাদ

Updated By: Sep 17, 2024, 01:28 PM IST
Birbhum Flood: বন্যায় ডুবল লাভপুরের ১৫ গ্রাম, মাইথন থেকে ছাড়া জলে জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা হাওড়া-হুগলির একাংশ

প্রসেনজিত্ মালাকার ও চিত্তরঞ্জন দাস: টানা বৃষ্টিতে বীরভূমের লাভপুরে কুরে নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যার কবলে পড়েছে ১৫টি গ্রাম। এর মধ্যে ৬-৭টি গ্রাম প্রায় সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গতকাল লাভপুরের ঠিবা এলাকায় কুরে নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এর ফলে রামঘাঁটি, বলরামপুর, জয়চন্দ্রপুর, খাঁপুরসহ কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণভাবে জলমগ্ন হয়েছে। এই মুহূর্তে এসব গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে স্পিডবোট। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব গ্রামে পৌঁছানো সম্ভব, সেখানে স্পিডবোটের মাধ্যমে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও উদ্বেগের খবর হল মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে আরও আড়াই লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল দুর্গাপুর ব্যারেজে এসে পড়বে আজ রাত আটটা নাগাদ।

আরও পড়ুন-কেজরির প্রস্তাবেই সায়, দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করে ফেলল আপ

টানা বৃষ্টির কারণে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেলেও গতকাল থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে, ফলে নদীর জল ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে। তবে এলাকাবাসীরা ক্ষুব্ধ, কারণ এক মাসের ব্যবধানে দুইবার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা শাসক বিধান রায় ও স্থানীয় বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা। তাঁরা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে, বন্যার জল অনেক ঘরবাড়ি এবং চাষের জমি ডুবিয়ে দিয়েছে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথমে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করা হয়েছে এবং বর্তমানে ত্রাণ বিতরণের কাজ চলছে।

ঝাড়খণ্ডের অতি বৃষ্টিপাতের ফলে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হল আড়াই লক্ষ কিউসেক। যে জল দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে এসে পড়বে রাত আটটা নাগাদ। এর আগে যে জল ছাড়া হয়েছে সেই জলও এখন অর্থাৎ সকাল এগারোটা নাগাদ দেড় লক্ষ কিউসেক। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে যে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, তার ফলে দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে থেকেও জল ছাড়ার পরিমান আরও বেড়ে দু লক্ষ কিউসেক এর উপর কাছাকাছি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । দামোদরের আশেপাশের নিম্নবর্তী অঞ্চলে বন্যার হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে। দুর্গাপুরের দামোদর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমান এখন দেড় লক্ষ কিউসেক। পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়ার যে সব অঞ্চল দামোদরের ধারে, সেই জায়গাগুলোতে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান, সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় মজুমদার। এছাড়াও ঝাড়খণ্ডে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে সিকাটিয়া জলাধার থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ ৪২ হাজার কিউসেক। তার ফলে অজয় নদেও জল বয়ে চলেছে।

অন্যদিকে গভীর নিম্নচাপের জেরে চারদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে বেড়েছে কংসাবতী, যমুনা নদী সহ অন্যান্য নদীর জলস্তর । ভারী বৃষ্টিতে কংসাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় পুরুলিয়ার আড়ষা ব্লকের বামুনডিহা ও পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের কাঁটাবেড়া গ্রামের সংযোগস্থল হিসেবে ব্যবহার করা অস্থায়ী বাঁশের সেতু ভেঙে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে দুই প্রান্তের বাসিন্দাদের। যার ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন বামুনডিহা, জুরাডি, তুম্বাঝালদা, কাঞ্চনপুর, কুদগাড়া, জামবাইদ, বিরচালি, মানপুর, আহাড়রা সহ ১৫-২০ টি গ্রামের মানুষ ।

অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যায় বান্দোয়ানের কুইলাপাল থেকে ঝাড়গ্রামের ঝিলিমিলি যাওয়ার রাস্তার উপর যমুনা নদীর ব্রিজ দিয়ে পারাপার করার সময় জলের তোড়ে আটকে যায় এক নাবালক। কোনরকমে ব্রিজের খুঁটি ধরে থাকে দীর্ঘক্ষণ । প্রত্যক্ষ দর্শীরা তা দেখতে পেয়ে খবর দেয় স্থানীয় থানায় । কুইলাপাল ফাঁড়ির পুলিশ তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে। ওই নাবালকের নাম মাইকেল টুডু, বাড়ি বাঁকুড়া জেলার হারামগড়া গ্রামে । ব্রিজের উপর দিয়ে জল বয়ে চলার পরেও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করার সময় জলের তোড়ে আটকে যায় নাবালক ।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.