রামের পুজো নিয়ে জোর তোড়জোড় গেরুয়া শিবিরে, বুধবার লকডাউন রাখতে বদ্ধপরিকর প্রশাসনও

বুধবার লকডাউনের মধ্যেই কলকাতার গড়িয়াহাট মোড়, রাসবিহারী মোড়, হাজরা মোড়, ৫নং গড়িয়া মোড়, এন্টালি মোড়, পদ্মপুকুর মোড় এবং বড়বাজারে পূজোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ

Reported By: অঞ্জন রায় | Edited By: অধীর রায় | Updated By: Aug 4, 2020, 11:39 PM IST
রামের পুজো নিয়ে জোর তোড়জোড় গেরুয়া শিবিরে, বুধবার লকডাউন রাখতে বদ্ধপরিকর প্রশাসনও
ছবি-নিজস্ব

নিজস্ব প্রতিবেদন: আঠাশ বছর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে এক বিতর্কের সূচনা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে তা সমাপ্তি ঘটে। বুধবার রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর মধ্যে দিয়ে সূচনা হবে এক নতুন অধ্যায়ের। তাই আগামিকাল অকাল দীপাবলির ডাক দিয়েছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ।

অযোধ্যয় রাম মন্দির শিলান্যাসের পর সন্ধ্যায় রাজ্যের প্রতি ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে উত্সব পালনের আবেদন করছে বিজেপি। বিশ্বহিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে প্রায় দু'হাজার প্রদীপ দেওয়া হবে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।

আরও পড়ুন-তুঙ্গে ভূমিপুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, তদারকিতে মুখ্যমন্ত্রী
 
বিজেপি, বিশ্ববিন্দু পরিষদ কিংবা আরএসএস রাম মন্দিরের শিলান্যাসের দিনটিকে যখন জাতীয় উত্সবের তকমা লাগাতে চাইছে তখন পূর্বঘোষিত রাজ্যজুড়ে লকডাউন কঠোরভাবে পালনের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। একদিকে লকডাউন আর অন্যদিকে উতসব এই বিষয়কে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে একটা অস্থিরতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন।

বুধবার লকডাউনের মধ্যেই কলকাতার গড়িয়াহাট মোড়, রাসবিহারী মোড়, হাজরা মোড়, ৫নং গড়িয়া মোড়, এন্টালি মোড়, পদ্মপুকুর মোড় এবং বড়বাজারে পূজোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ। আবার করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী পুলিসকে কড়া হাতে লকডাউন মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি বুধবার থেকে আনলক ৩-এ কেন্দ্রের নির্দেশে জিম ও যোগা কেন্দ্রগুলি খোলার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্য কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে বুধবার বাংলায় কমপ্লিট লকডাউন। ৫ অগাস্ট নয় রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৬ অগাস্ট থেকে জিম ও যোগা কেন্দ্র খোলা হবে।

এরকম এক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় পূজোআর্চায় কতটা ছাড় দেবে প্রশাসন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় বিশ্বহিন্দু পরিষদের উদ্যোগে রাম লক্ষণ এবং সীতার  পূজো হয়েছে।

আরও পড়ুন-'রাম মন্দিরের ভূমি পুজো, এতবড় উত্সবকে নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে পুলিস'

করোনা গোটা দুনিয়াজুড়েই একটা ভয়াবহ সমস্যা। সেই জায়গায় লকডাউনে পূজো কতটা যুক্তিসঙ্গত?  জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি  দিলীপ ঘোষের যুক্তি, ''এটা বিজেপির অনুষ্ঠান নয়। আমরা প্রথম থেকে নিয়ম মেনে লকডাউন মানতে সহযোগিতা করেছি। বুধবারও তাই হবে। কিন্তু দেশব্যাপী যে বিরাট উৎসবের আয়োজন হয়েছে তাতে বাংলার লোক সামিল হতে পারছে না এটাই দুঃখের। এখানকার সরকার ইচ্ছে করে বুধবার লকডাউনের দিন ঠিক করেছে। চারবার ডেট পাল্টেছে আর একবার করতে পারত। আমি নিজে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু শোনেনি। সমাজের লোক এটাকে উতসব হিসেবে পালন করবে। বিভিন্ন মন্দির সাজানো হয়েছে। ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। পুজোর আয়োজন হয়েছে। আমি রাজ্যবাসীকে বলেছি আপনার পূজোর আয়োজন করুন , আমিও তাতে অংশগ্রহণ করব।''

পুলিসের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি, ''পুলিসের আইনশৃঙ্খলা দেখার কথা সেটাই তাঁরা দেখুক । বুধবার যে উতসব হবে সেটা সবাই নিয়ম মেনেই করবে। আমার মনে হয় এতে সংঘর্ষের কোনো জায়গা নেই। আর যদি শাসকদল  মনে করেন পুলিশ দেখিয়ে লাঠি দেখিয়ে সমস্ত আয়োজন বন্ধ করে দেবে সেটার ফল উল্টো হতে পারে।''

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, রাম মন্দিরের শিলান্যাসকে সামনে রেখে একছাতার তলায় এসেছে বিজেপি,বিশ্বহিন্দু পরিষদ এবং আরএসএস। উদ্দেশ্য, ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য জমি তৈরি করা।

.