`পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আমি বেজায় খুশি`, বললেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ
`কৃষকরা পেঁয়াজের দাম একটু বেশি পাচ্ছে, তার জন্য সবার খুব দুঃখ হচ্ছে। কৃষকরা যদি চালের দাম বেশি পায়, লঙ্কার দাম বেশি পায়, পেঁয়াজের দাম বেশি পায়, আমি খুশি।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : পেঁয়াজের ঝাঁঝে চোখে জল দেশবাসীর। কমার কোনও লক্ষ্মণ নেই, বরং পেঁয়াজের দামের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। কলকাতায় পেঁয়াজের দর ছাড়িয়ে গিয়েছে দেড়শোর গণ্ডিও। ১৬০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে পেঁয়াজ। বাজারে গিয়ে পেঁয়াজে হাত দিলেই ছ্যাঁকা লাগছে। কিন্তু তাতে 'খুশি' বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এমনটাই দাবি করেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ।
এদিন সৌমিত্র খাঁ বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ায়, কৃষকরা বেশি দাম পাচ্ছে। তাতে তিনি বেশ খুশি ও উৎসাহিত। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে একইসঙ্গে তিনি টেনে আনেন কাটমানির প্রসঙ্গও। বিষ্ণপুর সাংসদ এদিন জি ২৪ ঘণ্টা প্রতিনিধিকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেন, "কলকাতায় সব কিছুতে কাটমানি আছে। পেঁয়াজের ওপরও কেউ কেউ কাটমানি খাচ্ছে। তাই দাম বেশি।" এরপরই তাঁর সংযোজন, "কৃষকরা যদি বেশি দাম পায়, আমি তাতে উৎসাহিত হচ্ছি। যখন ফ্ল্যাটের দাম ১ কোটি টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা হয়ে যায়, তখন তো কেউ কিছু বলে না। এখন কৃষকরা পেঁয়াজের দাম একটু বেশি পাচ্ছে, তার জন্য সবার খুব দুঃখ হচ্ছে। পেঁয়াজটা এমন কিছু ব্যাপার না, পেঁয়াজটা না খেয়েও থাকা যায়। আমি কৃষক এলাকার সংসদ, কৃষকরা যদি চালের দাম বেশি পায়, লঙ্কার দাম বেশি পায়, পেঁয়াজের দাম বেশি পায় আমি খুশি।" সৌমিত্র খাঁয়ের এই মন্তব্যের পরই শোরগোল পড়ে যায় সব মহলে। কটাক্ষ, সমালোচনায় সরব হন বিরোধীরা।
এদিকে একদিকে যখন সৌমিত্র খাঁ পেঁয়াজের দাম বাড়ায় নিজের 'খুশি' ব্যক্ত করছেন, ঠিক তখনই উল্টো পিঠে কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য ও অধীর চৌধুরী পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব হন। প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, "ভুলে গেছে দিল্লির সরকার, একবার পেঁয়াজের দামের জন্য সরকার পড়ে গিয়েছিল। এবার পেঁয়াজের দামের জন্য এই সরকারকে যেতে হবে।" কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, "উনি কি জানেন গ্রাম বাংলায় মানুষ শুধু একটু নুন-ভাতের সঙ্গে পেঁয়াজ খায়! উনি নাও খেতে পারেন, কিন্তু যাঁরা খান তাঁদের খাওয়া বন্ধ করার অধিকার ওনার নেই।"
আরও পড়ুন, খাস কলকাতায় গ্রেফতার মুটের ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকা কুখ্যাত মাওবাদী জঙ্গি
প্রসঙ্গত, গতকাল সংসদে পেঁয়াজ বিতর্কে এক সাংসদ অর্থমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "আপনি মিশরীয় পেঁয়াজ খাচ্ছেন কি না?" প্রশ্নের জবাবে নির্মলা বলেন, "চিন্তা নেই, বেশি পেঁয়াজ,রসুন খাই না। আসলে, আমার পরিবারে বেশি পেঁয়াজ ব্যবহারই হয় না।" যার জবাবে জেল ফেরৎ পি চিদাম্বরম আজ সংসদ ভবনে পা দিয়েই পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়েন, "তাহলে কি উনি অ্যাভোকাডো খান?"
বিজেপি মন্ত্রী, সাংসদদের পেঁয়াজের দাম নিয়ে 'উদাসীনতার' প্রতিবাদে এদিন সংসদে সরব হন অধীর চৌধুরীও। বলেন, "অর্থমন্ত্রী কাল ইজিপসিয়ান পেঁয়াজ বোঝাচ্ছিলেন। আমি জানতে চেয়েছি ১৪০ টাকা পেঁয়াজ কেন? প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। স্লোগানটা পাল্টে গিয়ে হয়ে গেছে, আমি খাব না, মজুতদারদের খেতে দেব।"