Malda: সকলেই মুসলিম ভোটার, তবু তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত আসন ঘোষণা কমিশনের; ভোট বয়কট মালদায়
কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মাসিদুর রহমানও নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। নির্বাচন কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্ত না বদলালে তাঁরা এবার ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
রণজয় সিংহ: পুরোপুরি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম। ভোটারদের সবাই মুসলিম। অথচ সেই এলাকাকেই এবার তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত আসন করেছে নির্বাচন কমিশন। এর জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। ক্ষুব্ধ স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যও। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ঘটনাটি পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রামের।
ছোটপুর ও ছোটপুর ভেস্টপাড়া গ্রাম দুটিতে আগে একটিমাত্র বুথ ছিল। সেই বুথ ভেঙে এবার ২/২ ও ৩/৩ করা হয়েছে। ২/২ বুথের অংশ হল ১৮৯। সেই বুথে মোট ৮৬৭ জন ভোটার। তাঁরা প্রত্যেকেই মুসলিম। অথচ ওই বুথটিই এবার তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত। অর্থাৎ এবার ওই গ্রামের কোনও বাসিন্দা নিজের এলাকার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। মহম্মদ ওবাইদুল শেখ নামে এক গ্রামবাসী জানান, ‘ঘটনাটি জানতে পেরেই আমরা বিডিওর কাছে গিয়েছিলাম। তাঁকে বলেছিলাম, এই গ্রামে একজনও হিন্দু ভোটার নেই। তাহলে আমাদের বুথ তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত হল কীভাবে? বিডিও আমাদের জানিয়ে দেন, তাঁর কিছু করার নেই। গোটা বিষয়টি জেলাশাসকের অধীনে। তিনি যা করার করবেন।‘
আরও পড়ুন: Kurmi Agitation: অবশেষে ১০১ ঘণ্টা পরে শেষ হল অবস্থান, নবান্নের সঙ্গে বৈঠকে 'না' কুড়মি সমাজের
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘সেকথা শুনে গ্রামের কয়েকজন জেলাশাসকের কাছেও যায়। কিন্তু তিনিও কিছু করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আমাদের সাফ কথা, আমরা এখানে বহিরাগত কোনও প্রার্থীকে মানব না। নির্বাচন কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্ত না বদলালে আমরা এবার ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।’
গ্রামের আরেক বাসিন্দা সাবির আলি বলেন, ‘জীবনে অনেক ভোট দিয়েছি। প্রতিবারই গ্রামের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছি। এবার শুনছি, গ্রামের কেউ নাকি এখানে প্রার্থী হতে পারবে না। কারণ, এই বুথটা তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। যে বুথে একটিও হিন্দু ভোটার নেই, সেই বুথ তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত কীভাবে হতে পারে? রাজ্য সরকার এই কাজ করে ঠিক করেনি। এবার আমরা কেউ ভোট দেব না।’
আরও পড়ুন: Week 2| Daily Cartoon| সোমান্তরাল| স্পর্শ-কাতর!
গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মাসিদুর রহমানও নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে পুরনো বুথকে ভেঙে দুটো করা হয়েছে। আমাদের বুথে প্রত্যেকেই মুসলিম ভোটার। কিন্তু সেই বুথকেই তফশিলি মহিলা সংরক্ষিত করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছি। দলের নেতৃত্বকেও জানিয়েছি। কিন্তু প্রত্যেকেই বলছে, আর কিছু করার নেই। পাড়ার লোক এবার ভোট দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, বহিরাগত কোনও প্রার্থীকে তারা ভোট দেবে না।’