'অনেক তৃণমূল নেতার নাম বলে দেন, মুখ বন্ধ করতেই...', রাজু খুনে বিস্ফোরক দিলীপ
দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা চাই সিবিআই তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করে আনুক। না হলে সিট বা সিআইডি তদন্ত দিয়ে সত্যি ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। যাতে নেতাদের নাম না আসে।'
!['অনেক তৃণমূল নেতার নাম বলে দেন, মুখ বন্ধ করতেই...', রাজু খুনে বিস্ফোরক দিলীপ 'অনেক তৃণমূল নেতার নাম বলে দেন, মুখ বন্ধ করতেই...', রাজু খুনে বিস্ফোরক দিলীপ](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2023/04/02/414035-dilip-goshraju.jpg)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শনিবার ভরসন্ধ্যায় বর্ধমান জাতীয় সড়কের উপর আততায়ীর গুলিতে খুন কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝা। সেই ঘটনায় এবার বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'আবদুল লতিফ ওই গাড়িতেই ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। এর পিছনে কী চক্রান্ত আছে তা তো সময়েই জানা যাবে। কিন্তু আমাদের কাছে যে খবর আছে, রাজু ঝা-কে ডেকেছিল। তখন তিনি অনেক তৃণমূল নেতার নাম বলে দিয়েছিলেন। আবার ৩ তারিখ তাঁর ডাক পড়েছিল। সেদিন হয়তো তিনি অনেকের নাম বলে দিতে পারতেন। তাই মুখ বন্ধ করে দিতে এটা করা হয়েছে। যাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন বা যাঁরা পরিচিত তাঁরা বলছেন, শক্তিগড়ে দাঁড়াতেন না কখনই। কেন ওখানে দাঁড়ালেন? চক্রান্তের শিকার হয়েছেন তিনি। হয়তো কেউ পূর্ব পরিচিত ছিল। তাঁরাই ডেকে নিয়েগিয়েছিল।'
রাজু ঝা খুনে সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, 'আমরা চাই সিবিআই তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করে আনুক। না হলে সিট বা সিআইডি তদন্ত দিয়ে সত্যি ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। যাতে নেতাদের নাম না আসে।' দিলীপ ঘোষ আরও দাবি করেন, 'আমার হাত ধরে রাজু ঝা বিজেপিতে আসেননি।' তাঁর কথায়, 'রাজু ঝাঁ নির্বাচনের আগে আমাদের পার্টিতে যোগদান করেছিল।' দিলীপ ঘোষ তোপ দাগেন, 'এখন সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বোমা-বন্দুকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কারও জীবনের কোনও সুরক্ষা নেই। সে একজন বড় ব্যবসায়ী, যেভাবে হাইওয়ের উপরে তাঁকে খুন করা হয়েছে তাতে পশ্চিমবাংলার আইন শৃঙ্খলা কোথায় যাচ্ছে সেটা চিন্তার বিষয় হয়ে গিয়েছে।'
তদন্তে উঠে এসেছে নিহত রাজু ঝা-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আবদুল লতিফের। কে আবদুল লতিফ? কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ ঝা বা লালার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল আবদুল লতিফ। কয়লা পাচার দুর্নীতির তদন্তে যখন সিবিআই ও ইডি তত্পর হয়ে ওঠে, তখন ২০২১ সালের পর থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় লালা ও লালার সহযোগী সিন্ডিকেট। সেই সময় আবদুল লতিফ লালার সিন্ডিকেটের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিন্ন করে, রাজু ঝা-এর সঙ্গে যোগ দেয়। কারণ, ২০২১-এর পর থেকেই রাজু ঝা লিগ্যাল টেন্ডারগুলি পেতে শুরু করেছিল। আর সেখান থেকেই রাজু ঝা ও আবদুল লতিফের নয়া 'জোট' শুরু হয়। রাজুর বিরুদ্ধে অবৈধ কয়লা তুলে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে শনিবার সন্ধ্যায় রাজু ঝা-কে খুনের লক্ষ্যে আততায়ীরা নীল রঙের গাড়িতে করে দুর্গাপুরের দিক থেকে আসছিল। গাড়িটিতে পাওয়া গিয়েছে ৫টি নাম্বার প্লেট। প্রত্যেক টোলে সিসিটিভি ইনস্টলেশনের আগে গাড়ির নাম্বার প্লেট বদল করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিস মনে করছে, গাড়িতে ৩ জন ছিল। একটি সাদা রঙের ফরচুনা গাড়িতে ছিলেন রাজু ঝা। সন্ধে পৌনে ৮টা নাগাদ জাতীয় সড়কের উপর আমড়া মোড়ের কাছে ফরচুনা গাড়িটি গতি কিছুটা কম করেছিল। সেই সময় পিছন থেকে নীল রঙের গাড়িটি এসে, সাদা রঙের ফরচুনা গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপরই একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে চালকের ডান দিক লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন, হাওড়ায় সুকান্তকে 'বাধা'! দরকারে একা যাব, পালটা চ্যালেঞ্জ পুলিসকে