'তথ্যমিত্র কেন্দ্রে যাবেন না' ঝাড়গ্রামে মমতা
কষ্ট করে রক্তের জায়গায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন, সেখানে কেউ টাকা ঢেলে অশান্তি তৈরি করলে যেন রুখে দাঁড়ান মানুষ, বললেন মমতা
নিজস্ব প্রতিবেদন: পুজোর আগেই পুজোর উপহার পেয়ে গেল ঝাড়গ্রাম। ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার পক্ষে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্ত নিলেন।
'পথশ্রী' প্রকল্প নিয়ে আশার কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, আগের চেয়ে জেলায় রাস্তাঘাটের প্রচুর উন্নতি হয়েছে। তবু কিছু মানুষ এ নিয়ে অপপ্রচার করছেন। সেই সব উন্নয়ন-বিরোধী মানুষ সরকারের কাজ নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছেন বলে নাম না করে তিনি তোপ দাগেন বিজেপিকে। ভোটের আগে-আগে স্থানীয় রাজনীতিতে অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের প্রভাব-প্রতিপত্তিও তিনি বরদাস্ত করবেন না, এই মর্মেও নাম না করে বিজেপির দিকে ছুড়ে দেন অভিযোগের তীর।
অন্য দিকে, জেলাবাসীদের তিনি সটান নিষেধ করলেন 'তথ্যমিত্র কেন্দ্রে' না যেতে। বরং সরকারি যে কোনও তথ্য় জানতে তাঁরা যেন 'বাংলা সহায়ক কেন্দ্রে' (বিএসকে) যান। তিনি অভিযোগ করলেন, তথ্যমিত্র কেন্দ্র থেকে ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়। লোধাদের মধ্যে যে সামান্য কয়েকজন স্নাতক হয়েছেন, তাঁদের যাতে এই সব বিএসকে-তে যুক্ত করিয়ে দেওয়া যায়, সেই বিষয়েও নির্দেশ দিলেন তিনি।
বাবুই ঘাস কেন্দু পাতা ইত্যাদি দিয়ে যে সব শিল্পকর্ম করেন জেলার মানুষেরা তাঁদের জন্য তিনি একটি প্রকল্পের কথা ভাবছিলেন। সেই প্রকল্পের নামও মিটিং চলার ফাঁকেই ঠিক করে ফেললেন-- 'বাবুই-বসন্ত'। একটা ফুটবল অ্যাকাডেমি যাতে করা যায়, সেই বিষয়েও ভাবনা-চিন্তা করা হবে বলে আশ্বস্ত করলেন। ট্রাইবাল মিউজিয়ম করার ব্যাপারেও তাঁর সায় রয়েছে। এর পাশাপাশি, সাংবাদিক ভবনের জন্য জমি দেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক থেকেই বইগা উপজাতিদের জন্য কিছু করার অনুরোধ এল। সেই অনুরোধ রাখেন মমতা। লোধাদের জন্যও অনুরোধ-সাপেক্ষে তিনি একটি শিক্ষা আশ্রম করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। লোধাদের জব কার্ড নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে শুনে সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন।
কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গেও তিনি আশার কথা শোনালেন। জঙ্গলমহলে ইতিমধ্যেই আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে বলে উল্লেখ করলেন। বললেন, মাওবাদীদের কাজ দেওয়ার কথা। কষ্ট করে রক্তের জায়গায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন, সেখানে আর তিনি চান না কোনও ঝামেলা বাঁধুক। ভোটের আগে এখানে কেউ টাকা ঢেলে অশান্তি যেন তৈরি না করে, সে ব্যাপারেও তিনি তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, এরকম হলে যেন রুখে দাঁড়ান মানুষ।
সব মিলিয়ে ঝাড়গ্রাম প্রশাসনিক বৈঠকে কাজের হিসেবনিকেশ নেওয়া, নতুন উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করা এবং বিরোধী রাজনীতি দলকে বার্তা দেওয়ার একটা মিশেল দেখা গেল। যে বৈঠকে মমতা ছিলেন মমতাতেই।
আরও পড়ুন: 'মাটি সৃষ্টি পৃথিবীকে আর একবার পথ দেখাবে', বললেন মমতা