Mamata in Suri: 'আধার লিঙ্ক কেটে দিলেই আমাদের জানান, ভয় পাবেন না, আমি আছি'

Mamata in Suri: ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে খেলা চলছে। বলুন তো হিন্দুদের যে সিস্টেমে বিয়ে হয় তা মুসলমানদের তা হয় কি? আধিবাসীদের যে সিস্টেমে বিয়ে হয় তা কি খ্রিষ্টানদের হয়? আপনি কি কাপড় পরবেন তাও কি ওরা ঠিক করে দেবে?

Updated By: Feb 18, 2024, 03:42 PM IST
Mamata in Suri: 'আধার লিঙ্ক কেটে দিলেই আমাদের জানান, ভয় পাবেন না, আমি আছি'

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মানুষের কাছে আধার কার্ড বাতিলের চিঠি আসছে। এনিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগেই বর্ধমানের জামালপুরে কয়েকজনের আধার বাতিলের চিঠি এসেছে রাঁচি থেকে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জেও এরকম চিঠি পেয়েছেন কয়েকজন। সবাই এখন অথৈ জলে। অচল আধার নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। রবিবার সিউড়ির সভায় এনিয়ে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই, আধার ডি-অ্যাক্টিভেটের চিঠি পেয়ে অথৈ জলে নদিয়া সীমান্তের বহু মানুষ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার কাছে খবর আছে অনেকের আধার লিঙ্ক কেটে দেওয়া হচ্ছে। জামালপুরে ৫০ জনের কাটা হয়েছে, বীরভূমে কাটা হচ্ছে, উত্তর ২৪ পরগনাতেও কাটা হচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও কাটা হচ্ছে, নর্থ বেঙ্গলেও কাটা হচ্ছে। প্রথম বলছিল আধার না হলে চোখে আঁধার দেখবে। তোমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হবে না, তুমি কোনও সুযোগ পাবে না। কোন অধিকারে তুমি কাউকে কিছু না জিজ্ঞাসা করে তার আধার কার্ড কেটে দিচ্ছ? ভোটের আগে তারা যাতে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা না পায়, রেশন না পায় , লক্ষ্মীর ভান্ডার না পায় তার জন্য এসব চক্রান্ত করা হচ্ছে। স্পষ্ট বলে যাচ্ছি, রাজ্যের কোনও প্রকল্প আধারের জন্য বন্ধ হবে না। আর যে কাজটা দিল্লি করছে তাতে ওদের থোতা মুখ ভোঁতা করে দেব। প্রথমে বলবে আধার কার্ড করো না হলে স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। আধার করবে, রেশন কার্ড করবে, কোভিড কার্ড করবে, জন্ম-মৃত্যুর কার্ড করবে! কার্ডগুলোকে কি গলায় ঝুলিয়ে রাখবে? তারপর কার্ডগুলো বাতিল করে দেবে। আপনাদের বলছি ভয় পাবেন না আমি আছি।  বাংলার কোনও প্রকল্পকে আধারের সঙ্গে যোগ করতে দেব না। সাবধান আবার এনআরসি করার চক্রান্ত হচ্ছে। ক্যা ক্যা করতে শুরু করতে শুরু করেছে আবার। এক মাসের মধ্যে ভোট ঘোষণা হবে। তার আগেই ভোটের লিস্ট থেকে নাম কাটার চেষ্টা হচ্ছে। ভোটার লিস্টে নাম তুলুন। সিভিক ভল্যান্টিয়ার, আশাকর্মী, আইসিডিএসের মেয়েরা আছেন, তাদের বলব দেখুন তো কোথায় কোথায় কার কার আধার কার্ড বাতিল করা হচ্ছে। সিএসকে বলব একটা অনলাইন পোর্টাল চালু করে দিক। যাদের আধার বাতিল করা হচ্ছে তারা এক্ষুনি আমাদের জানান। ব্যাঙ্ক যদি মনে করে আধার ছাড়া কাজ করবে না তাহলে আমদেরও সমবায় আছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলনে, ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে খেলা চলছে। বলুন তো হিন্দুদের যে সিস্টেমে বিয়ে হয় তা মুসলমানদের তা হয় কি? আধিবাসীদের যে সিস্টেমে বিয়ে হয় তা কি খ্রিষ্টানদের হয়? আপনি কি কাপড় পরবেন তাও কি ওরা ঠিক করে দেবে? বলছে ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন। তার মানে কি রাষ্ট্রপতি শাসন? আমরা বুঝে নেব। বুঝিয়ে দেব আমরা খেলতেও জানি, পড়তেও জানি, আমরা দেখাতেও জানি। আর কেন্দ্র কাছে ভিক্ষে চাইব না। চ্যালেঞ্জ তো করবই। আমাদের টাকা তুমি তুলে নিয়ে যেতে পারবে না। ওরা পিএমএলএ অ্য়াক্ট করেছে। বিনা বিচারে বছরের পর বছর আটকে রেখে দেবে। ইমারজেন্সির সময়ে ইন্দিরা গান্ধী প্রায় ২ হাজার লোককে জেলে ভরে রেখে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন জিতবেন। কিন্তু উনি হেরে গিয়েছিলেন। ভুলে যাবেন না। সিএএ হলে কী হবে জানেন? ৫ বছর আপনার ভোটাধিকার বন্ধ। পাঁচ বছর বাদে ফের নাগরিক হবেন। মতুয়ারা নাগরিক নয়, মুসলিম, তপসিলিরা আমাদের নাগরিক নয়? একটা শরীরকে কি ২ ভাগে ভাগ করা যায়? এসব চলছে। চোপরাতে ৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কটা টিম গিয়েছে? মানুষের উপরে অত্যাচার হলে আমাদের সরকার ব্যবস্থা নেয়। একটা ঘটনা ঘটেছে। প্রথম ইডিকে পাঠিয়েছে। তারপর তার বন্ধু বিজেপিকে পাঠিয়েছে। তারপর তিলকে তাল করছে। আমি বলতে চাই যার যা অভিযোগ আছে তা তারা বলবে। আমাদের অফিসার যাবে। ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট অ্য়ারেস্ট হয়ে গিয়েছে। তোমরা কতজনকে অ্য়ারেস্ট করেছ? আমি কি পারি না অ্যারেস্ট করতে? একটু সময় দিচ্ছি, সুতো ছাড়ছি।

রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিরোধীরা বলে বাংলায় কাজ হয় না। আমি বলি তোমাদের চোখে কি ন্যাবা হয়েছে? ৩৪ বছর বামফ্রন্ট ছিল ক্ষমতায়। কী করছে এখানে? বিজেপি ১৮টা এমপি জিতিয়ে নিয়ে গিয়েছে গতবার। জিতিয়ে নিয়ে গিয়ে কী করেছে? একশো দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা পথশ্রী নিজেদের চাকায় করেছি। ৪৭ হাজার গরিব মানুষের বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি। এমাসের ২৬ তারিখ থেকে একশো দিনের কাজের টাকা দেওয়া শুরু করব। দুবছর ধরে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের সব ট্যাক্স তুলে নিয়ে যায় কেন্দ্র। আমরা ট্যাক্স তুলতে পারি না এখন। আর মাছের তেলে মাছ ভেজে ছবি দেখায়। বলছে ঘর ঘর মে জল দিয়া। জায়গা কে দিয়েছে? রক্ষণাবেক্ষণ কে করছে? তোমরা জিনিসের দাম বাড়াচ্ছো, আজ কৃষকরা রাস্তায় মরছে। এত সমস্যা নিয়ে কাজ করি, বিজেপি চেষ্টা করে কোনও না কোনও ইস্যু খাড়া করে ঝামেলা বাধাতে। কোথায় আদিবাসীদের সঙ্গে মুসলিমদের ঝামেলা বাধিয়ে দিচ্ছে, কোথায় হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানের দাঙ্গা বাধায়। কখনও শিখদের সঙ্গে খ্রিষ্টানদের দাঙ্গা বাধায়। কৃষকদের উত্পাদিত ধান থেকে আমরা বেঁচে রয়েছি।আমাদের এখান কৃষকদের কোনও সমস্যা হয় না। অথচ পঞ্জাব জ্বলছে, হরিয়ানা জ্বলছে। কৃষকরা যাতে পৌঁছতে না পারে তার জন্য রাস্তায় ট্রাক কিলার লাগানো হচ্ছে।     

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp)

.