Duttapukur Blast: দত্তপুকুরেও ভানু বাগ-কেরামতের মতে দামালরা রয়েছে, ধরার সাহস আছে পুলিসের! বিস্ফোরক নওশাদ
Dutttapukur Blast: পিংলা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে মানুষের দেহাংশ বহুদূরের গাছে পর্যন্ত আটকে থাকতে দেখা গিয়েছিল। দত্তপুকুরের ক্ষেত্রে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশো মিটার দূরে কারও বাড়িতে হাত, কারও বাড়িতে পা উড়ে এসে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে এত মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কী ভাবে একটি পাড়ার মধ্যে বাজি কারখানা চলত।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দত্তপুকুরের বাজি কারখানার পেছনে কারা? তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী? এনিয়ে চলছে চাপানউতোর। এখনওপর্যন্ত দত্তপুকুরের মোচপুরের ওই বাজি কারখানার বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ঘটনার পরপরই খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ আঙুল তুলেছেন আইএসএফের দিকে। পাল্টা দিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শুধু তাই নয়, ঘটনায় এনআইএ তদন্তেরও দাবি তুললেন তিনি।
আরও পড়ুন-বিস্ফোরণের পেছনে আইএসএফ নেতা! চাঞ্চল্যকর দাবি খাদ্যমন্ত্রীর
রবিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভাঙড়ের বিধায়ক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি দাবি করেন, কোথা থেকে ওই বিপুল বিস্ফোরক এলাকায় আসত সেই সত্যিটা প্রকাশ করা হোক। এতবড় বিস্ফোরণ, কাকে ধরবে পুলিস? এখানে ভানু বাগের মতো দামাল ছেলে রয়েছে, সামসুল আছে, কেরামত আছে, আজিবর রয়েছে। এদের খোঁজ নিন, কোথায় এরা? এইসব দামাল ছেলেদের ধরার সাহস রয়েছে পুলিসের? পুলিস তাদের ধরতে পারে না তাই তোলাবাজি করছে। এখানে যে বাজি কারখানা রয়েছে তা পুলিসকে বারবার মানুষ জানিয়েছে। গ্রিন বাজি বাজে কথা। ওসব করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দামালরা আর বোমা মেরে বুথ দখল করতে পারবে? মানুষকে বোকা বানানোর জন্য গ্রিন বাজির কথা বলা হচ্ছে। এই ঘটনার পর আমার একটাই দাবি, এনআইএ তদন্ত হোক। যারা দোষী তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। মুর্শিদাবাদ থেকে শ্রমিক এনে এখান কাজ করা হতো। পুলিস তোলাবাজি করতে ব্যস্ত ছিল।
অন্যদিকে, ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের যোগ থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, বাড়ি মালিকের স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে কথা বললাম। তারা বলছেন, বিস্ফোরণের ঘটনার সহ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। এই বাজি কারখানাটি আমাদের বোর্ড বন্ধ করে দিয়েছিল। নতুন পঞ্চায়েত সদস্য এসে সালিশিসভা বসিয়ে কারখানা ফের চালু করে। খোঁজ নিয়ে জানলাম ওই সদস্য আইএসএফের।
মোছপুরে বিস্ফোরণের তীব্রতা দেখে অবাক হতে হয়। যে বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত। পাশের বাড়িগুলিও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ। কারও বাড়ির দেওয়াল ভেঙে গিয়েছে। কাররও বাড়ির মোটা পিলায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলের সামনেই একটি বাড়ির দরজা ভেঙেছে, জানালা উড়ি গিয়েছে, প্লাস্টার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে দেওয়াল থেকে। তার থেকেই ভয়ংকর বিষয় হল বিস্ফোরণে মানুষের দেহাংশ উড়ে গিয়ে পড়েছ কয়েকশো মিটার দূরে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরের বাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ। সেখানে উড়ে এসে পড়ে একটি ইট। সেই বাড়ির এক মহিলা বলেন, ঘরে বসেছিলাম। বিশাল বিস্ফোরণের একটা শব্দ পেলাম। দেখলাম বাড়ির মাঝখানে একটি হাত ও ইট এসে পড়ল। সেসব দেখেই বেহুঁশ হয়ে যান আমার শাশুড়ি। ছেলে মেয়েরা বলতে লাগল শরীর কেমন করছে।
পিংলা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে মানুষের দেহাংশ বহুদূরের গাছে পর্যন্ত আটকে থাকতে দেখা গিয়েছিল। দত্তপুকুরের ক্ষেত্রে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশো মিটার দূরে কারও বাড়িতে হাত, কারও বাড়িতে পা উড়ে এসে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে এত মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কী ভাবে একটি পাড়ার মধ্যে বাজি কারখানা চলত। এলাকারই এক গৃহবধূ বলেন, প্রথম প্রবল এক বিস্ফোরণের আওয়াজ হল। গোটা এলাকাটা অন্ধকার হয়ে যায়। আমার স্বামী অসুস্থ। তাকে নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলাম। বাইরে এসে দেখি একটা কাটা হাত পড়ে রয়েছে।