Durga Puja at Belur Math: শতবর্ষ অতিক্রান্ত বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর মহিমা আজও অক্ষুণ্ণ! জন্মাষ্টমীতে কী হল সেখানে?
Rituals of Durga Puja at Belur Math on Janmashtami: হাতে খুব কম সময় ছিল। ওই অল্প সময়ে দুর্গাপুজোর মতো বড় আয়োজন করা খুব কঠিন। কিন্তু তা-ও মঠের সন্ন্যাসীরা তা করতে পারলেন। তবে শুরু থেকেই সমস্যা ছিল। মূল সমস্যা ছিল পুজোর জন্য প্রতিমা পাওয়া। সে এক আশ্চর্য ঘটনা বটে!
দেবব্রত ঘোষ: চিরাচরিত প্রথা মেনে আজ, জন্মাষ্টমীর পুণ্য প্রভাতে বেলুড় মঠে দেবী দুর্গার কাঠামো পূজা হল। নিয়মমতো মূল মন্দিরে ঠাকুরের মঙ্গলারতির পরে কাঠামো পুজা শুরু হয়। মঠের সন্ন্যাসী এবং মহারাজেরা পুষ্প অর্ঘ্য দেন। পরে গীতা পাঠ ও আরতি প্রভৃতি হয়। এক হিসেবে, বলা যেতে পারে, এ বছরের দেবী দুর্গার আবাহন-পর্ব শুরু হল বেলুড় মঠে। অন্য দিকে, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ সোমবার বেলুড় মঠের মূলমন্দিরের ভেতরে ফুলমালা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করা হয়।
বেলুড় মঠের দুর্গাপুজো বাঙালির প্রাণের পুজো। শতবর্ষ অতিক্রান্ত এই পুজো নিয়ে বাঙালির গর্বের শেষ নেই। ১৯০১ সালে বেলুড় মঠে প্রথম দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। স্বামী বিবেকানন্দের হাতেই বেলুড়ের প্রথম দুর্গাপুজোর শুরু। স্বামীজি এবং তাঁর সন্ন্যাসীর ভাইয়েরা যে নতুন জীবনধারার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেজন্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে তাঁরা বেশ সমালোচিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করাই ছিল প্রথম দুর্গাপুজো করার অনেকগুলি কারণের একটি। সে সময়ে কলকাতার হিন্দুসমাজ স্বামীজির পশ্চিমে যাওয়া নিয়েও ইস্যু তৈরি করেছিল। সেই প্রেক্ষিতে, মঠের দুর্গাপুজো স্থানীয়দের মধ্যে নতুন এই সন্ন্যাসী সঙ্ঘ সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা দূর করতে সাহায্য করেছিল। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। স্বামী বিবেকানন্দ নারীর মাতৃত্বকে পুজো করতে চেয়েছিলেন, মানুষকে বিষয়টি শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই চাওয়াটার একটা প্রকাশ এই দুর্গাপুজো।
তবে এ সব ছাড়াও ছিল এক ভাবগত কারণ। ওই ১৯০১ সালেই দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগে স্বামী ব্রহ্মানন্দের এক আশ্চর্য দর্শন হল! তিনি দেখলেন, মা দুর্গা যেন দক্ষিণেশ্বর থেকে গঙ্গা পেরিয়ে বেলুড় মঠে আসছেন! স্বামীজি স্বামী ব্রহ্মানন্দের এই দর্শন-কথা শুনেই তাঁকে অবিলম্বে মঠে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিতে বললেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh: সম্ভাব্য হাসিনা-যোগ? ভারতে কর্মরত ২ কূটনীতিককে বরখাস্ত বাংলাদেশের!
হাতে খুব কম সময় ছিল। ওই অল্প সময়ে দুর্গাপুজোর মতো বড় আয়োজন করা খুব কঠিন। কিন্তু তা-ও মঠের সন্ন্যাসীরা তা করতে পারলেন। তবে শুরু থেকেই সমস্যা ছিল। মূল সমস্যা ছিল পুজোর জন্য প্রতিমা পাওয়া। কুমারটুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একটি দোকানেই দুর্গার একটি মূর্তি পড়ে আছে! কেননা যাঁরা বায়না দিয়েছিলেন তাঁরা প্রতিমা নিতে আসেননি। তাই প্রতিমাশিল্পী আর অপেক্ষা না করে এটি সন্ন্যাসীদের বিক্রি করতে রাজি হলেন। এই ভাবে নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বেলুড় মঠের প্রথম দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হল। যা আজও পূর্ণ মহিমায় চলছে!