দাড়িভিট কাণ্ডে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের, আজ থেকে স্কুলে শুরু হল পঠনপাঠন
দাড়িভিট কাণ্ডে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ২ নিহত ছাত্রের পরিবার।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দাড়িভিট কাণ্ডে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইইোর্ট। স্কুলে পড়ুয়া-পুলিস সংঘর্ষ, গুলি চলা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ২ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২১ সেপ্টেম্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। পড়ুয়া-পুলিস সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় স্কুল চত্বর। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার নামে এক প্রাক্তন ছাত্রের। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাপস বর্মন নামে আরও এক প্রাক্তনীর। এই ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
নিহত ছাত্রদের পরিবারের দাবি করে, পুলিসের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন উত্তর দিনাজপুর পুলিস সুপার। পুলিসের গুলিতে ছাত্রদের মৃত্যু হয়নি বলে ইটালিতে দাঁড়িয়ে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। যদিও সেই দাবি কোনওভাবেই মানেনি নিহত ২ ছাত্রের পরিবার। দাড়িভিট হাইস্কুলকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী তরজায় শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। শেষ পর্যন্ত দাড়িভিট কাণ্ডে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ২ নিহত ছাত্রের পরিবার। সন্তানদের মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তারা। পাশাপাশি, হাইকোর্টে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানায় ২ পরিবার ।
আরও পড়ুন, পরিচয় 'ভাঁড়িয়ে' নার্সিংহোমে তাণ্ডব 'তৃণমূল নেতার'! সিসিটিভিতে ধরা পড়ল কুকীর্তি
নিহত ছাত্রদের বাবা, মায়ের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেই এদিন রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, সেদিনের ছাত্র-পুলিস সংঘর্ষের পর থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল দাড়িভিট হাইস্কুল। তারপর কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার স্কুল খোলার পদক্ষেপ নিলেও, সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। অবশেষে প্রবল টানাপোড়েনের পর প্রায় ২ মাসের মাথায় ১০ নভেম্বর, শনিবার খোলে দাড়িভিট হাইস্কুল।
তবে, সেদিনও স্কুল খোলা নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় নিহত ছাত্রদের পরিবার ও গ্রামবাসী। প্রধান শিক্ষক ও সহ প্রধান শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে স্কুল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। একইসঙ্গে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে ধৃত ৮ গ্রামবাসীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। পাশাপাশি, দুই ছাত্রের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতেও অনড় থাকেন তাঁরা। নতুন করে ফের উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে। শেষপর্যন্ত ইসলামপুর মহকুমা শাসকের আশ্বাসে স্কুল খোলায় রাজি হন আন্দোলনকারী গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন, কফি হাউসে ধূমপান নিয়ে বচসায় গ্রাহককে মারধরের অভিযোগ কর্মীর বিরুদ্ধে
এরপর রবিবার পুরো স্কুল পরিষ্কার করে সাজিয়ে তোলা হয়। অবশেষে আজ থেকে ফের শুরু হল পঠনপাঠন। এদিন স্কুল খোলার পর নিহত ২ প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের আত্মার শান্তি কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তারপর শুরু হয় পঠনপাঠন।