রণজয় সিংহ: তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ কমিটির বৈঠকে প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। নিজেদের মধ্যেই বচসা এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। তেড়ে গেলেন উপস্থিত নেতৃত্বের দিকে। ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে ক্রমশ অস্বস্তি তৃণমূল কংগ্রেসের। এই ঘটনায় খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বুধবার রাতে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় শিব মন্দির বুথে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ কমিটির বৈঠক ছিল। উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি মোশারফ হোসেন, ব্লক সহ- সভাপতি সাগর দাস, হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।


দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে প্রত্যেকটি বুথেই বৈঠক করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই বুথে প্রার্থী হিসেবে উঠে আসে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী নন্দ রজক, উত্তম ভাস্কর এবং নব মন্ডলের নাম। এই তিন জনের মধ্যে মূলত নন্দ রজক এবং উত্তম ভাস্করকে প্রার্থী করার জন্য জোরালো দাবি উঠতে থাকে।


দুইজনের অনুগামীদের মধ্যে শুরু হয় বচসা। বচসা গড়ায় হাতাহাতির ঘটনায়। উত্তেজিত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তেড়ে যায় উপস্থিত নেতৃত্বের দিকে। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। অন্যদিকে সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি।


বিজেপির দাবি যে দলে অনুশাসন নেই সেই দলে এই অবস্থাই হবে। আর বেশি দিন তৃণমূল কংগ্রেস দলটা থাকবে না। যদিও এই ঘটনার মধ্যে শুভ সংকেত দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি দল বড় হয়েছে তাই এক বুথে একাধিক দাবিদার। এটা মমতা ব্যানার্জির প্রতি মানুষের ভালোবাসার উত্তেজনা। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


আরও পড়ুন: Civic Volunteer: সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা...


নন্দ রজকের অনুগামী মিলন কর্মকার বলেন, ‘আমরা বিক্ষোভ করেছি। আমাদের দাবি ছিল নন্দ রজককে প্রার্থী করতে হবে। কারন এর আগে যখন তিনি সভাপতি ছিলেন তখন উন্নয়ন হয়েছে। তাই তিনি প্রার্থী হলে উন্নয়ন করবেন’।


উত্তম ভাস্করের অনুগামী বাসন্তী দাস বলেন, ‘বিক্ষোভ করেছি আমরা প্রার্থী হিসেবে উত্তম ভাস্করকে দেখতে চাই। ও আমাদের গ্রামের ছেলে আর গ্রামের ছেলেকেই আমরা ভোট দিবো। আর এতদিন কোনও উন্নয়ন হয়নি। উত্তম ভাস্কর প্রার্থী অনেক উন্নয়ন করবেন’।


হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও ব্যাপার নেই। এটা বিজেপির বুথ। কিন্তু এখানকার মানুষ মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন দেখে এবার তৃণমূলকে জেতাবে। অনেকেই প্রার্থী হওয়ার দাবিদার। নেতৃত্বে একজনকে ঠিক করবে।


আরও পড়ুন: Bengal Weather Update: বৃহস্পতিবার থেকে শুরু আবহাওয়ার অবনতি, দুর্যোগের পূর্বাভাস রাজ্যজুড়ে


উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘তৃণমূলের প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী। প্রত্যেকটি বুথে প্রার্থী হওয়ার জন্য একাধিক গোষ্ঠী। এই দলে কোনও নিয়ম বা অনুশাসন নেই। এরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে লড়াই করে শেষ হয়ে যাচ্ছে’।


প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় তৃণমূলের ঝুলিতে এর আগে তেমন ভোট মেলেনি। ফলে শাসকদল এবার সদর এলাকায় নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে মরিয়া। স্থানীয় নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রস্তুতি।


কিন্তু সেই প্রস্তুতি শুরু হতেই যে ভাবে অভ্যন্তরীণ সংঘাত সামনে আসছে শাসকদলের কাছে তা শুভ মনে হলেও আদতে শুভ নয় এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।