‘ঝোলেও আছে, অম্বলেও আছে’, বনধ ইস্যুতে মমতাকে কটাক্ষ অধীরের
শনিবার পার্থর এই মন্তব্যে অধীর কটাক্ষ করে বলেন, “ঝোলেও থাকবে, অম্বলে থাকবে তৃণমূল।” সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘটে বামেরা সামিল থাকবে বলে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন সিপিএম-র রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র
নিজস্ব প্রতিবেদন: সোমবার দেশ জুড়ে বনধে তৃণমূলের সমর্থন না থাকলেও, পথে নামবে তারা। দলের তরফে আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে ডাকা বনধে তৃণমূলের এই অবস্থানকে কড়া সমালোচনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তৃণমূল ‘স্ববিরোধিতা’ করছে বলে কটাক্ষ করেন তিনি। উল্লেখ্য, সোমবার ভারত বনধ ডেকেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বাম-সহ একাধিক অবিজেপি দল।
আরও পড়ুন- নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের নেই! ফের বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম
পশ্চিমবঙ্গে এ দিন বামেদের সঙ্গে একত্রে পথে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মমতা সরকারের বিরোধিতা করে অধীর জানান, পেট্রো পণ্যের উপর চাপানো ভ্যাট শীঘ্রই তোলা উচিত রাজ্য সরকারের। পুদুচেরি এবং কেরলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “রাজ্যে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমাতে ভ্যাট তুলে দেওয়া উচিত তৃণমূল সরকারের।”
সোমবারের বনধের বিরোধিতা করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কর্মনাশা বনধের প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে তৃণমূল। স্কুল, কলেজ, অফিস সর্বত্র খোলা থাকবে।” পাশাপাশি রাজ্য সরকার এক নির্দেশিকায় জানায় বনধের দিন ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি কর্মচারিরা গরহাজির থাকলে বেতন কাটা যাবে বলে জানানো হয়েছে। তবে, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতায় রাস্তায় নামবে তৃণমূলও। মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শনিবার পার্থর এই মন্তব্যে অধীর কটাক্ষ করে বলেন, “ঝোলেও থাকবে, অম্বলে থাকবে তৃণমূল।” সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘটে বামেরা সামিল থাকবে বলে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন সিপিএম-র রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কেন্দ্রের বিরোধিতা করে দেশের প্রথমসারির অবিজেপি দলগুলি যখন রাস্তায় নামছে, তখন তৃণমূলের উল্টো পথে হাঁটাকে কটাক্ষ করে সূর্যের মন্তব্য, ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে আসলে দ্বিচারিতা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ৩৫এ ধারা নিয়ে বিতর্ক, লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচন বয়কটের হুমকি ফারুক আবদুল্লার
সোমবারের ধর্মঘটে বামেরা সামিল থাকলেও অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক (এআইএফবি) এই কর্মসূচি থেকে দূরে থাকবে বলে জানা যাচ্ছে। এআইএফবি-র সেক্রেটারি দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “আমাদেরকে না জানিয়ে সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের নেতার বনধ ডেকেছেন। এটা অপমানজনক। বনধকে সমর্থন করলেও, কোনও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছি না।” ফরওয়ার্ড ব্লকের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অধীর জানিয়েছেন, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হয়ত কাজ করছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতারা।
আরও পড়ুন- কেরলে এই প্রথম, বিশপকে গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামলেন নান-রা
উল্লেখ্য, সোমবারের ধর্মঘটের সমর্থনে কংগ্রেস-বাম ছাড়াও সমর্থন জানিয়েছে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), সমাজবাদী পার্টি (সপা), ডিএমকে-ও। দেশ জুড়ে বনধের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, কর্নাটক, পঞ্জাব, অন্ধ্র প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী দলগুলি শাসিত রাজ্যে প্রভাব পড়বে।