কিরণ মান্না: অন্যের কোটি টাকার সম্পত্তি প্লট আকারে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে তৃণমূল কাউন্সিলার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে এমন অভিযোগে ডিএমকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার অতনু গিরি ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে এই নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে। যা নিয়ে যথেষ্ট আলোড়ন পড়েছে এলাকায়। কাউন্সিলর সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় এফআইআর হয়েছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Cooch Behar | Anant Maharaj: 'রক্ত তো বাংলাদেশেও বয়েছিল...', কোচবিহার নিয়ে ফের বিস্ফোরক অনন্ত মহারাজ!


জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি এনিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য জেলা ভূমি বিভাগের অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরীকে নির্দেশ দিয়েছেন। পুর এলাকার শেরপুর মৌজায় প্রায় ৭৭ ডেসিমিল জমি দু’কোটি টাকার বেশি দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ওই সম্পত্তির আসল মালিক এজন্য একটি টাকাও পাননি। গোটা ঘটনায় জমির মালিক থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। যার ফলে নবান্ন থেকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।


২০১০ সালে কাঁথি পুরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডে শেরপুর মৌজায় প্রায় ৭০লক্ষ টাকা দিয়ে ৭৭ ডেসিমেল জমি কিনেছিলেন জনৈক্য ব্যবসায়ী আশিস মাইতি। আশিসবাবুর বাড়ি দেশপ্রাণ ব্লকের আঁউরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের নামালডিহা গ্রামে। তিনি চিংড়ি ও মাছের খাবার এবং বরফ কলের ব্যবসা করেন। অনেক কর্মচারী তার এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ওই জমি নেওয়ার পর কনভার্সান করার সময় আশিসবাবু জানতে পারেন, বহুমূল্য ওই জমিতে যাতায়াতের প্রবেশ পথ নেই। এজন্য কনভার্সান আটকে যায়। ২০১১ সালে তাঁর পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে অনেক টাকা খরচ হয়। এমন পরিস্থিতিতে ওই জায়গা বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন আশিস বাবু। তখন স্থানীয় কাউন্সিলার সহযোগিতা করার নাম করে তাঁর কাছে হাজির হন। ওই বহুমূল্য জমিতে যাতায়াতের পথ বের করে ওই জায়গা বিক্রি করে দেওয়ার টোপ ওদেন। এরপর আশিসবাবুকে তাঁরই এক সহযোগীর কাছ থেকে ২৫লক্ষ টাকা ঋণ নিতে বাধ্য করেন।


২০২০ তে কোটি টাকার ওই জমি বিক্রি করার জন্য আশিসবাবু কাউন্সিলার অতনু গিরির ঘনিষ্ঠ কাবুল বেরাকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি করে দেন। তাতে শর্ত থাকে, জমি বিক্রি করার পর আশিসবাবুকে টাকা ফেরত দেবে। পরে কাবুল তাঁর স্ত্রী এবং কাঁথি পুরসভার কর্মী দিলীপ খাণ্ডারকে ওই জমির পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি করে দেন। দিলীপবাবু তার ওই জমি দেখিয়ে কাঁথি সুপার মার্কেট  সমিতি থেকে ২৫লক্ষ টাকা লোন নেন। এই নিয়ে গোটাটাই আশিস বাবু একটি র‍্যাকেটের মধ্যে পড়ে যান। পরবর্তীতে ওই র‌্যাকেট জমি প্লট আকারে বিক্রি করে দেয়। আশিসবাবু জমির কোন মূল্য পাননি। টাকার কথা বলতে গিয়ে হুমকি মুখে পড়তে হয়।


এবার তিনি ৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অতনু গিরি এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ প্রশাসনের সবস্তরে অভিযোগ করেন। আশিস বাবু বলেন, নানাভাবে কাউন্সিলর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে। জমি বিক্রি করার সময় আমার ডকুমেন্ট জাল করা হয়েছে, সই জাল করা হয়েছে। ইনকাম ট্যাক্স থেকে জমি বিক্রির কোটি টাকার ট্যাক্স প্রদান করতে নোটিস করা হয়েছে। আমি এখন সর্বশান্ত হতে বসেছি। অভিযুক্ত কাউন্সিলার অতনু গিরি জানিয়েছেন, ঘটনাটি আমার ওয়ার্ডে হওয়ার সুবাদে আমি সালিশিতে ছিলাম। কিন্তু বিক্রির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসককে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট এলে বাকিটা জানা যাবে। 



আরও পড়ুন, Gourbanga University: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই গলায় ছুরি! 'বিপদ কাটেনি, ৩৬ ঘণ্টা না পেরলে...'


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)