সাগর ঘোষ হত্যাকাণ্ডে পুলিসের দাবির সঙ্গে মিলছে না নথি
নিজস্ব প্রতিবেদন: সাগর ঘোষ হত্যা মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। আদালতে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেল পুলিস। শুক্রবার মামলার শুনানিতে তদন্তকারীদের পক্ষে দাবি করা হয় সাগর ঘোষের মৃতদেহে গুলির চিহ্নই মেলেনি। যদিও পুলিসের পুরনো নথি বলছে অন্য কথা। ঘটনার পর তৈরি সিজার লিস্ট থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট সবেতেই স্পষ্ট, গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে সাগর ঘোষের। ২৪ ঘণ্টার হাতে রয়েছে সেই নথি।
২০১৩ সালের ২১ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের রাতে পাড়ুইয়ে খুন হন সাগর ঘোষ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে পাড়ুইয়ের বাঁধনা গ্রামে এই খুনে গোটা রাজ্যে তোলপাড় পড়ে। প্রায় সাড়ে চার বছর পর শেষ হল সেই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। আর সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনে আদালতে পুলিসের ৩ তদন্তকারী অফিসারের দাবি, সাগর ঘোষের দেহে গুলিই মেলেনি। এমনকি গুলির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি তাঁর বাড়িতেও।
যদিও আদালতে পুলিশের পেশ করা নথি বলছে অন্য কথা। ঘটনার পর পুলিসকে দেওয়া জবানবন্দিতে সাগর ঘোষের স্ত্রী সরস্বতী ঘোষ বলেছিলেন, তাঁর স্বামীকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। গুলি লেগেছিল পেটে ও বাঁ হাতের বু়ড়ো আঙুলে। আদালতে দেওয়া গোপন জবানবন্দিতেও গুলির কথা বলেছিলেন সাগর ঘোষের পুত্রবধূ শিবানীদেবী। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রথম গুলিটি লাগে তাঁর শ্বশুর মশায়ের পেটে। বাঁ হাতের আঙুলে লাগে দ্বিতীয় গুলি।
ঘটনার পরই সাগর ঘোষকে নিয়ে যাওয়া হয় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিত্সকরা। সেই নথিতে চিকিত্সকরা স্পষ্ট উল্লেখ করেন, গুলিবিদ্ধ হয়েই আহত হয়েছেন সাগর ঘোষ। গুলি লেগেছে তাঁর পেটে। রইল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সেই নথির ছবি - ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস সাগর ঘোষের বাড়ি থেকে গুলির খোল উদ্ধার করেছিল বলে উল্লেখ করা হয় সিজার লিস্টে। রইল তার ছবিও
ঘটনা পরস্পরায় পুলিসের এমন দাবি ঘিরে উঠছে নানা প্রশ্ন। প্রথম থেকেই প্রত্যেক মুহূর্তে রাজনৈতিক নাটকের সাক্ষী থেকেছে এই মামলা। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ। ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হবে সওয়াল-জবাব।