Shantipur: টেন্ডারে বেনিয়ম, অভিযুক্ত তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান
প্রসঙ্গত বর্তমান প্রধান অলিভিয়া সন্ন্যাসী গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করার পর তৃণমূলে যোগদান করেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির চেহারা মাঝেমধ্যেই এসে পড়ে জনসমক্ষে।
বিশ্বজিৎ মিত্র: শান্তিপুর ব্লকের আড়বান্দি পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে বেনিয়মে টেন্ডার খোলা এবং নিজের লোককে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করলেন দলেরই উপপ্রধান। শান্তিপুর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত আরবান্দি দু'নম্বর পঞ্চায়েতের দলেরেই প্রধান অলিভিয়া সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে বেনিয়মে টেন্ডার খোলা, এবং স্বজন পোষণের অভিযোগ আনলেন দলেরই উপপ্রধান নৃপেন প্রামানিক। সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য বাসুদেব দেবনাথ এবং শ্যামল রাজোয়ার এই অভিযোগে উপপ্রধানকে সম্মতি জানিয়ে তারাও অভিযোগপত্র সই করেন।
প্রসঙ্গত বর্তমান প্রধান অলিভিয়া সন্ন্যাসী গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করার পর তৃণমূলে যোগদান করেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির চেহারা মাঝেমধ্যেই এসে পড়ে জনসমক্ষে।
আড়াই বছরের মধ্যে অনস্থা এবং সম্প্রতি কয়েক মাস আগে অপর এক অনাস্থা আনেন দলের পঞ্চায়েত সদস্যরাই। যদিও তা কার্যকরী হয়ে ওঠেনি। তবে এবারের অভিযোগ রীতি মতন চাঞ্চল্যকর।
নৃপেন প্রামানিক, বাসুদেব দেবনাথ, শ্যামল রাজোয়ারদের বক্তব্য প্রধান তার পছন্দের দুই একজন পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে, অন্যদের ব্রাত্য রেখেই নানান উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে শামিল হচ্ছেন। যেখানে পঞ্চায়েতের সুনাম নয়, সরকারের সুনাম নয়, সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নয় নিজের আত্মকেন্দ্রিক প্রচার করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: 'ON পথশ্রী WORK,' সরকারি প্রকল্পের স্টিকার সাঁটা ডাম্পারেই বালি পাচার!
ই টেন্ডার হলেও, আইনের মাধ্যমে সে তার নিজেদের পরিচিত কন্টাকটারদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন প্রথম থেকেই। তবে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি আধিকারিক এবং বিডিও তা খতিয়ে দেখে যে ব্যবস্থা নেবে সেটাই তাঁরা মেনে নেবেন।
যদিও পঞ্চায়েত প্রধান অলিভিয়া সন্ন্যাসীর স্বামী অরবিন্দ সন্ন্যাসী জানান, ‘সামান্য ৩০০০০ টাকার লাইট লাগাতেও আমরা ই টেন্ডার করে থাকি। আর এখানে হয়তো তাদের ক্ষোভ, অনাস্থা আনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম মিথ্যে দুর্নীতির অভিযোগ, নানাভাবে আমাদের অপমান অপদস্থ করতে চায় তারা’।
আরও পড়ুন: MalBazar: জরুরি বৈঠক তৃণমূলের জেলা কমিটির, রিনা বড়ার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে?
তিনি আরও বলেন, ‘তবে এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী জেনারেল মিটিং এবং অর্থ মিটিংয়ে কোরাম হওয়ার কারণে গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী মুলতুবি মিটিংয়ে কোরামের প্রয়োজন হয় না, সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই এই টেন্ডার খোলা হয়েছে। তবে উপপ্রধানের সঙ্গে এক বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য সই করার নজির দেখে অবাক হচ্ছি, এরা আদতেও কোনও দল করে। তবে সাধারণ মানুষের কাজ আটকে রেখে, মূলত দলকেই পিছিয়ে দিচ্ছে তারা’।
তবে এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি, বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন, ‘শুধু এই পঞ্চায়েত বলে নয়, সারা রাজ্যে পুরসভা পঞ্চায়েত সর্বত্র একই ছবি, আর এর পেছনে কারণ কাটমানি এবং দুর্নীতির টাকার ভাগ নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল। যেখানে মন্ত্রী বিধায়ক জেলে যাচ্ছে সেখানে পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ অস্বাভাবিক কিছু নয়। সামনে পঞ্চায়েত ভোট, শেষবারের মতো লুটেপুটে খাওয়া। তারই চূড়ান্ত মহড়া চলছে। তবে সাধারণ মানুষ সবই জানে, শাসকের ভয়ে মুখ না খুলতে পারলেও যোগ্য জবাব দেয় ব্যালটে। তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রগতিশীল অংশ হোক বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল আমরা তাদের সঙ্গেই আছি। অতীতেও জাতীয় ক্ষেত্রে বারে বারে সে নজির রয়েছে’।