`অধ্যক্ষের অঙ্গুলি হেলনে চলছে কাজ`, সুন্দরবনের কলেজে গাছ কাটার অভিযোগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে
সুন্দরবনকে বাঁচাতে রাজ্য সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে গাছ লাগাচ্ছে। সেখানে কলেজের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে একের পর এক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
প্রসেনজিৎ সর্দার: বহু পুরনো গাছ কেটে ফেলা বা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে কলেজে। অথচ উদাসীন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এমনই ঘটনার সাক্ষী সুন্দরবন ক্যানিংয়ের ট্যাংরাখালি গ্রামের বঙ্কিম সরদার কলেজ। বিগত প্রায় ৮-৯ বছর যাবৎ কলেজ তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষজন, বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের। কলেজের পরিবেশ দিন দিন দূষিত হয়ে যাচ্ছে। আর এই সবই ঘটে চলেছে অধ্যক্ষের অঙ্গুলি হেলনে। কলেজ গ্রাউন্ডের মধ্যে ইচ্ছামতো গাছ কেটে ফেলা এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন, Kharagpur: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ কাউন্সিলরদের; প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল
বিগত দিনে ২০২০ সালে আমফান তান্ডবে এমনিতেই কলেজের বেশকিছু মূল্যবান গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছিল। সেই সমস্ত গাছ কেটে সকলের অগোচরে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে ক্যানিং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৎকালীন কলেজের পরিচালনা সমিতি।
বর্তমানে সুন্দরবনকে বাঁচাতে রাজ্য সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে গাছ লাগাচ্ছে। সেখানে কলেজের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে একের পর এক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। আগুনে গাছ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় আতঙ্কিত অনেকেই। কারণ গত ৯ ডিসেম্বর থেকে গাছ পুড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। ১৫ ডিসেম্বরেও গাছ পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। সেই আগুন যে কোনও মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষতি হতে পারে কলেজের।
ঘটনার বিষয়ে বঙ্কিম সরদার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, ‘গাছ কাটা কিংবা পোড়ানোর মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। বা আমার নজরে নেই।’ ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস জানিয়েছেন, ’কলেজের মধ্যে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। যে বা যারা এই কাজে যুক্ত তারা যাতে শাস্তি পায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন, Bengal Weather Update: শীতের কামব্যাক রাজ্যে, লক্ষণীয় পতন তাপমাত্রায়
অন্যদিকে, কলেজ ছাত্র সালমন সেখ,সন্তু মন্ডল,আব্দুল মান্নান লস্কর,পূর্ণেন্দু নস্করদের দাবি, ‘চোখের সামনে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে দেখতে পাচ্ছি। প্রতিবাদ করলে অ্যাডমিট,রেজিষ্ট্রেশান আটকে দেবে বলেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে কলেজের সমস্ত অনৈতিক কাজে অধ্যক্ষের হাত রয়েছে। এর অবসান হওয়া জরুরী। না হলে সুন্দরবন তথা ক্যানিংয়ের গৌবর বঙ্কিম সরদার কলেজ আগামী দিনে তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলবে। প্রসঙ্গত, স্থানীয় ট্যাংরাখালি গ্রামের সরদার পরিবারের দান করা ৩৩ একর জমির উপর ১৯৫৫ সালে গড়ে ওঠে এই কলেজ। ক্যানিং তথা সুন্দরবনের বুকে এই কলেজ সুনামের সঙ্গে তার ঐতিহ্য এবং ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে।