নিজস্ব প্রতিবেদন: চৈতন্য মহাপ্রভু তো পূর্বাশ্রমে বিবাহিত ছিলেন। তখন তিনি নিমাই পণ্ডিত। গৃহত্যাগ করে, সংসারত্যাগ করে সন্ন্যাস নিলেও তিনি তো তাঁর স্ত্রীর পরিবারের দিক থেকে 'জামাই'-ই। সেই 'জামাই শ্রীচতন্য'কে ভোলেনি বিষ্ণুপ্রিয়ার পরিবার। শুধু ভোলেনিই নয়, জামাই ষষ্ঠীর দিন তাঁরা শ্রীচৈতন্যকে রীতিমতো জামাই রূপেই পুজো করেন!   


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফলে, আজ, বুধবার জামাই ষষ্ঠীর (Jamai Sasthi) দিন নবদ্বীপে শ্রীচৈতন্য গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু জামাইরূপেই পূজিত হচ্ছেন। সকালে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে পরানো হয়েছে নতুন ধুতি-পাঞ্জাবি-উত্তরীয়। এরপর প্রথা মেনে গোস্বামী বংশের মাতৃস্থানীয়েরা ধান-দূর্বা ইত্যাদি দিয়ে ষাটের বাতাস দেন।


আরও পড়ুন: অজয় নদের উপর ভেঙে পড়ল বাঁশের মাচা, বরাতজোরে রক্ষা ২ বাইক আরোহীর


আজ গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে (Sri Chaitanya) বিশেষ ভোগও দেওয়া হয়। রূপোর বড় থালা, রূপোর গ্লাস আর রূপোর বাটিতে পরিবেশন করা হয় অন্ন-ব্যঞ্জন-জল। থালায় চারিদিকে বাটিতে সাজানো নানা পদ--কচুর শাক, শুক্তো, মুগ ডাল, মোচা, আলু-ফুলকপির রসা, ছানার পনির পোস্ত, পুষ্পান্ন, আমের চাটনি,পরমান্ন, দই এবং রকমারি মিষ্টি। সব শেষে সুগন্ধি মশলা ও পান দেওয়া হয়। 


জামাইষষ্ঠীর মধ্যাহ্নে এই ভাবে নিষ্ঠা সহকারে রীতি মেনে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে নিবেদন করেন বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর পরিবারের বংশধরেরা। শ্রীচৈতন্যের স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার বাবা ছিলেন সনাতন মিশ্র। বিষ্ণুপ্রিয়ার ভাই ছিলেন যাদব আচার্য। তাঁর ছেলে মাধব আচার্য। মাধব আচার্যের ছেলে ষষ্ঠী দাস। এই ষষ্ঠী দাসের আমল থেকেই নবদ্বীপে (Nabadwip) শ্রীচৈতন্যকে এ ভাবে 'জামাই-আদর' করা হচ্ছে। পালিত হচ্ছে এই অপূর্ব প্রথা।


ভোরবেলায় গঙ্গাস্নান সেরে বাড়ির জামাইয়ের জন্য রান্নায় হাত লাগান বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর পরিবারের এই প্রজন্মের সদস্যরা। শুরু হয়ে যায় জামাইষষ্ঠীর রান্নার প্রস্তুতি। কাঠের উনুন জ্বালিয়ে গঙ্গার জল দিয়ে কাঁসা-পিতলের বাসনে রান্না শুরু হয়। 
ভোজের পরে পাঁপড়, দই-- মিষ্টি, আম, কাঁঠাল ইত্যাদি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। 
বিকাল বেলায় দেওয়া হয় বিভিন্ন রকম ফল, ক্ষীর, ছানা, এবং মিষ্টিও। আবার রাতেও থাকে আয়োজন। তখন দেওয়া হয় লুচি, মালপোয়া, ক্ষীর। মিষ্টি ও ফল-ফলাদি তখনও নিবেদন করা হয়। 


গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত রূপ গোস্বামী বলেন, বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর ভাইয়ের অধস্তন পুরুষরাই এই প্রথা আরম্ভ করেন। এই অপূর্ব প্রথাটি মোটামুটি ২৫০ বছর ধরে চলে আসছে। 


(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 


আরও পড়ুন: দুকূল ছাপিয়ে বইছে গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর! ভাসল গন্ধেশ্বরীর অস্থায়ী রাস্তাও