Bolpur Child Murder: গো ব্যাক; রাজনীতি করবেন না, বোলপুরে লকেটকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের
ওই ঘটনায় রুবি বিবি নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, পারিবারিক বিবাদের কারণে খুন হতে হয়েছে ওই শিশুকে
প্রসেনজিত্ মালাকার: বোলপুরের মোলডাঙা গ্রামে নিহত শিশুর বাড়িতে গিয়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। গো ব্যাক স্লোগান বিজেপি নেত্রীকে ঘিরে। গ্রামবাসীদের দাবি, মর্মান্তিক এই মৃত্যু নিয়ে পুলিস যা করার তা করছে। একজন গ্রেফতারও হয়েছে। এনিয়ে কোনও রাজনীতি চাই না। লকেট চিত্কার করে বলতে থাকেন, রাজনীতি করতে আসিনি, বাচ্চার পরিবারের কাছে এসেছি। আজ মোলডাঙা গ্রামে ঢোকার মুখে লকেট চট্টোপাধ্য়ায়কে ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, শুভম ঠাকুর নামে ৪ বছরের ওই বাচ্চার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তোলপাড় চলছিল কয়েকদিন। কোনও রাজনৈতিক নেতা আসেনি। গতকাল শিশুটির দেহ উদ্ধারের পর কী করতে এসেছেন লকেট চট্টোপাধ্য়ায়? এনিয়ে কেন রাজনীতি হবে? লকেট আসছেন শুনেই গ্রামের মহিলারও গ্রামের ঢোকার মুখে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁরা চিত্কার করে বলতে থাকেন, দোষীদের শাস্তি চাই। পুলিস প্রশাসন যথেষ্ট সাহায্য করছে। এখন কোনও রাজনীতি নয়।
আরও পড়ুন-অপ্রতিরোধ্য ভারতের 'মিস্টার ৩৬০'! সূর্য তেজে ভস্মীভূত বাবরের আসন
জি ২৪ ঘণ্টাকে এক গ্রামবাসী বলেন, এতদিন ছেলেটিকে খোঁজা হচ্ছিল, কোনও রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসেনি। এখন তার মৃতদেহ পাওয়ার পর রং তামাসা দেখানোর জন্য এরা এসেছে। এসব বন্ধ হোক। পার্টির কোনও সাহায্য নেব না। প্রশাসন যা করার তা করবে। বিক্ষোভের চাপে শেষপর্যন্ত ফিরে যান বিজেপি নেত্রী। ধরনায় বসেন থানার সামনে।
শিশু মৃত্যু নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুলিস কোনওভাবে সহযোগিতা করেননি। ওঁরা বলছেন খবর পেয়ে মাঠ, জঙ্গলে লোক পাঠিয়েছি। আমি বললাম ছেলেটি নিখোঁজ হওয়ার ৩ দিন বাদে কেন তার পাশের বাড়ি থেকেই তার দেহ উদ্ধার হল! মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই যেহেতু এখানে তাঁর ভোট ব্যাংকের একটা রাজনীতি রয়েছে তাই পুলিস যদি বেশকিছু করতে চায় তাহলে তাঁর ভোটব্যাংক চলে যাবে। আমরা চাই এর বিচার হোক। এই ঘটনা কেন ঘটেছে তার তদন্ত করতে হবে। এই ঘটনায় যিনি গ্রেফতার হয়েছেন তার দাদা আনুব্রতর মণ্ডলের গাড়ি চালায় না কী করে। সে এর সঙ্গে যুক্ত। গোটা ঘটনা মধ্যে তৃণমূল রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫২ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর গতকাল প্রতিবেশীর বাড়ির চাল থেকে উদ্ধার হয় ৪ বছরের শুভম ঠাকুরের মৃতদেহ। বাড়িটির অ্য়াজবেস্টরের চালে মৃতদেহটি বস্তা চাপা দেওয়া ছিল। জানা গিয়েছে, বিস্কুট কেনার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর চারেকের ওই শিশু। তারপরই নিখোঁজ হয়ে যায় সে। নিখোঁজ ওই শিশুর খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। পুলিস কুকুর এনেও তল্লাশি করা হয়। কিন্তু কোথাও ওই শিশুর কোনও খোঁজ মেলেনি। এরপরই মঙ্গলবার ওই শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রতিবেশীদের দিকেই উঠেছে অভিযোগের আঙুল। পরিবারের অভিযোগ, ওই প্রতিবেশীরাই অপহরণ করে ছোট্ট শুভমকে। রাস্তা থেকে অপহরণ করা হয় ৪ বছরের ওই শিশুকে। অপহরণের পরই খুন করা হয়। মুক্তিপণ বা টাকা চেয়ে কোনও ফোন আসেনি। শত্রুতার জেরেই খুন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল।
জানা গিয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পড়ুয়া ছিল ৪ বছরের শুভম ঠাকুর। ৫২ ঘণ্টা আগে সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয় সে। বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে গ্রামেরই মুদিখানা দোকানে যায়। কিন্তু দোকান থেকে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। সময়মতো বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোক খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু খোঁজ না পেতেই উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। খবর দেওয়া হয় শান্তিনিকেতন থানায়। শান্তিনিকেতন থানার ওসি পার্থ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে পুলিস আসে। গ্রাম জুড়ে ও আশপাশে তল্লাশি শুরু হয়।
ওই ঘটনায় রুবি বিবি নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, পারিবারিক বিবাদের কারণে খুন হতে হয়েছে ওই শিশুকে। যে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে তার বাবার সেলুনে একটি ছেলে কাজ করত। তার সঙ্গে ওই রুবি বিবির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। তার জেরেই অশান্তি হয়। সেই রাগেই রুবি ওই শিশুটিকে খুন করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সূত্রের খবর সেই দোষ রুবি পুলিসের কাছে কবুল করেছে।