জমি মেপে দিক রাজ্য সরকার, Amartya-কে পাল্টা চিঠিতে উপাচার্য

অমর্ত্যর এই ফোনালাপ ও জমি বিতর্ক- দু'টির জবাব দিয়েছেন উপাচার্য (Bidyut Chakrabarty)। 

Updated By: Jan 19, 2021, 09:59 PM IST
জমি মেপে দিক রাজ্য সরকার, Amartya-কে পাল্টা চিঠিতে উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রতীচী নিয়ে অমর্ত্য সেনের আইনি চিঠির জবাব দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty)। ওই চিঠিতে অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বক্তব্য খণ্ডন করেছেন তিনি। জমি বিতর্কে উপাচার্য লিখেছেন,'বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের পথ খুঁজতে গিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সময় ব্যয় করেছি। রাজ্য সরকারকে জমি মেপে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) জমি পুনরুদ্ধারই একমাত্র লক্ষ্য। নিশ্চয়ই অমর্ত্য সেনের সমর্থনও পাব আমরা।'   

চিঠিতে অতিরিক্ত জমি প্রসঙ্গে উপাচার্যকে অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) লিখেছেন,'১৯৪০ সালে বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) কাছ থেকে জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজে নিয়েছিলেন আমার বাবা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অশোক মাহাত হুমকি দিয়েছেন, অতিরিক্ত জমি দখল কর থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৮০ বছরের পুরনো নথির অপব্যবহারের উদ্দেশ্য স্পষ্টত হয়রানি করা। আমি একাধিকবার বলেছিল, অতিরিক্ত জায়গাটি কিনেছিলেন বাবা। তার রেকর্ড রয়েছে সুরুল মৌজায়। ওই জমির জন্য প্রতিবছর খাজনা এবং পঞ্চায়েত করও দিই।' এর পাশাপাশি তাঁর ক্ষোভ, উপাচার্যের ছলছাতুরিতে আমি ক্লান্ত। এই যেমন ২০১৯ সালের জুনে শান্তিনিকেতন (Santiniketan) থেকে আমি নাকি তাঁকে ফোন করেছিলাম। তাঁর অভিযোগে জুনে ২ বা ১৪ তারিখের উল্লেখ করা হয়েছিল। আমি নাকি নিজেকে ভারতরত্ন বলে পরিচয় দিয়েছি। গোটা জুনেই আমি দেশের বাইরে ছিলাম।' 

অমর্ত্যর এই ফোনালাপ ও জমি বিতর্ক- দু'টির জবাব দিয়েছেন উপাচার্য (Bidyut Chakrabarty)। চিঠিতে বলা হয়েছে,'জুন বা জুলাই মাসে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে (Bidyut Chakrabarty) অরবিন্দ নামের জনৈক ব্যক্তি ফোন করেন। ফোনে বলা হয়, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। অধ্যাপক সেন (Amartya Sen) প্রতীচীর দুধারে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা অবৈধ দোকানগুলি ভেঙে দেওয়ার সমালোচনা করেন। আজকাল এই উন্নত প্রযুক্তির যুগে কে কাকে ফোন করেছিলেন, কখন করেছিলেন, অধ্যাপক সেন উপাচার্যকে আদৌ ফোন করেছিলেন কি না, তা যথাযথ টেলিকম কর্তৃপক্ষের কাছে গেলেই জানা যায়। এভাবেই তর্কের মীমাংসা হতে পারে। অধ্যাপক সেনের উষ্মার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে থাকা কিছু দোকানদারের অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে উপাচার্যকে তিনি ফোন করেছিলেন, তা মানতে না চাওয়াটা তাঁর কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত ও অভাবনীয়।' 

জমি প্রসঙ্গে উপাচার্য জানিয়েছেন,' বিশ্বভারতীর (Visva Bharati) ১১৩৮ একর জমির মধ্যে ৭৭ একর ইতিমধ্যেই বেআইনিভাবে দখল হয়ে গিয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর সহকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) সঙ্গে ফোনালাপ ও জমির দখলদারি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তা সিসিএস রুল ১৯৬৪ অনুযায়ী, ভিতরের কথা বাইরে বলা নিষেধ। বিশ্বভারতীর সব কর্মী মেনে চলতে বাধ্য। মিডিয়া সার্কাস আমরা শুরু না করলেও বিষয়গুলির সুষ্ঠু সমাধানের পথ খুঁজতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সময় ব্যয় করেছি। রাজ্য সরকারকে জমি মেপে দেওয়ার অনুরোধও আমরা জানিয়েছি। অধ্যাপক সেন নিশ্চিত থাকতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে কোনওভাবেই অপদস্থ করতে চায় না বা তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার খর্ব করতে চায় না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল বিশ্বভারতীর ন্যায্য জমি পুনরুদ্ধার করা যাতে নিশ্চয়ই অধ্যাপক সেনের সমর্থন আমরা পাব।'

জমি বিতর্কে ইতিমধ্যেই অমর্ত্য সেনকে চিঠি লিখে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এর পাশাপাশি রাজ্যবাসীর হয়ে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি। চিঠি দিয়ে মমতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অমর্ত্য। দিন কয়েক আগে বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার অশোক মাহাত সাংবাদিকদের বলেছেন, 'উনি (অমর্ত্য সেন) একা নন। দীর্ঘ তালিকা আছে, যাঁরা বিশ্বভারতীর জায়গা দখল করে রেখেছে।' ফলে গোটা বিতর্ক যে এখনই থামছে না তা চিঠিচাপাটির পর আরও স্পষ্ট হয়ে গেল।              

আরও পড়ুন- কার ভরসায় জিতবেন? নন্দীগ্রামে ২ লক্ষ ১৩ হাজার 'জয় শ্রী রাম' ভোট পদ্মে: Suvendu
         

.