নিজস্ব প্রতিবেদন: একুশের আগে যেন এটাই চাইছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর তাঁকে ঘুরে দাঁড়ানোর যাবতীয় রসদ দিয়ে দিল তিন কেন্দ্রের ফল। কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুরের মতো কেন্দ্রে প্রথমবার জয়ের স্বাদ পেল তৃণমূল। উপনির্বাচনে তিনে তিন করে ফেলল 'দিদি'র দল। লোকসভা ভোটের পর আকাশে ওড়া বিজেপিকে টেনে মাটিতে নামাল ফলাফল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফার্স্ট বয়ের রেজাল্ট যদি খারাপ হয়, তাহলে সমালোচনার সুরটা যে একটু জোরেই বাজবে তা আর আশ্চর্য কী! লোকসভা ভোটের সে সব সমালোচনাই উপনির্বাচনে হাওয়ায় উড়িয়ে দিল তৃণমূল।  খড়গপুর সদরে পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরে তৃণমূলের দুই প্রার্থী, তপন দেব সিংহ ও বিমলেন্দু সিংহ রায়ের  মুখে জয়ের হাসি। লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুর ও কালিয়াগঞ্জে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে যায় তৃণমূল। দুই কেন্দ্রই এবার তাদের দখলে। আর করিমপুরে বাড়ল জয়ের ব্যবধান।  


খড়গপুর সদর বিধানসভা আসনে বিজেপিকে ২০৮৫৩ ভোটে হারিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ৬৬ হাজার ভোট পুনরূদ্ধার করেছে তারা।   


কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনে বিজেপিকে ২৪১৪ ভোটে হারিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ৬০ হাজার ভোট পুনরূদ্ধার করেছে তারা।    


করিমপুর বিধানসভা আসনে বিজেপিকে ২৪০৭৩ ভোটে হারিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার বাড়তি ভোট এসেছে তৃণমূলের ঝুলিতে। 


রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের পর সংগঠন মেরামত করতে ঘাম ঝরিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বসে যাওয়া বা বিজেপি-র দিকে পা বাড়ান দলীয় কর্মীদের অনেকেই আবার, ফিরে এসেছেন, ঘাসফুলের ছাতার তলায়। বিধানসভা উপ-নির্বাচনে ভোটাররাও তৃণমূল নেত্রীর ছবিতেই আস্থা রেখেছেন। সেই আত্মবিশ্বাস ধরা পড়েছে নেত্রীর গলাতে। জি ২৪ ঘণ্টাকে ফোনে তিনি বলেছেন, ''মা-মাটি মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কৃতিত্ব ভোটারদের।  তিনটি আসনেই তাঁরা জিতিয়েছেন তৃণমূলকে। দেশভাগ, জাতিভাগ, সংস্কৃতির উপরে অত্যাচার চলছে। সেই সময় এটা জনতার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। কেউ উপলব্ধি না করতে পারলে বুঝতে পারবে না। বড় বড় কথা বলেছিল, ঊনিশে হাফ, একুশে সাফ। ৫ মাস আগে নির্বাচন হয়েছিল। মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাফ কারা হয়ে গেল। এটা সবে ১৯।  ২১ অনেক দেরি। বিজেপি বাংলার পাপ। সারা দেশের পাপ। ''     



প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ঘরের মাঠ কালিয়াগঞ্জে, বরাবরই শক্ত জমি ছিল কংগ্রেসের। তৃণমূল এই কেন্দ্রে আগে কখনও জেতেনি। খড়গপুরও বহুবছর ছিল কংগ্রেসের দখলে। এতদিন বামেদের মতো তৃণমূলও এখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি। বিধানসভা ভোটে, কালিয়াগঞ্জে জেতে কংগ্রেস। খড়গপুরে জেতে বিজেপি। লোকসভায় বিজেপি ২ কেন্দ্রেই এগিয়েছিল।লোকসভার ক্ষত মেরামতই শুধু নয়, উপনির্বাচনে এই দুই আসনেই ঘাসফুলের খাতা খুলে গেল।বিধানসভা, লোকসভা এবং উপনির্বাচন, তিনটি ভোটেই করিমপুরে নিজেদের শক্তি ধরে রাখল তৃণমূল। ভোটের নিরিখে বরং শক্তি আরও বাড়ল। 


লোকসভা নির্বাচনে ভোটারদের অনেকেই মোদীর ওপর ভরসা রাখলেও বিধানসভা উপ-নির্বাচনে তিন কেন্দ্রের মানুষ দিদির ওপরই আস্থা রাখলেন। যা ২০২১-এর আগে ঘাস-ফুল শিবিরে এনে দিল বাড়তি অক্সিজেন। তৃণমূল নেতারা তো বলছেনই, আজ যে ট্রেলার দেখা গেল, একুশে সেই ফিল্মই নাকি রিলিজ করবে। 


আরও পড়ুন- সাফ কারা হল! খোঁচা মমতার, একুশের ফাইনালে সাফ হবেন, পাল্টা দিলীপের