নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রথমবার এতটা কঠিন কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ইসরোর বিজ্ঞানীরা। তাই বিক্রমের অবতরণের শেষ কয়েক মুহূর্ত সবচেয়ে রুদ্ধশ্বাস ১৫ মিনিট হবে। শুক্রবার চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডারের অবতরণের আগে এমনটাই জানালেন ইসরোর প্রধান ডঃ কে শিবন।
চাঁদের একদম কাছাকাছি কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে ৭ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টা থেকে আড়াইটের মধ্যে চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে বিক্রম। আর এই পর্যায়টিই ইসরোর মহাকাশবিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের কাছে হবে সব থেকে কঠিন। এ প্রসঙ্গে ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ কে শিবন বললেন, "এটি একটি ভীষণই জটিল প্রক্রিয়া। প্রথমবার এমন কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা। কোনও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মহাকাশসংস্থার কাছেও এটি সমান কঠিন।" ইসরোর কন্ট্রোল রুমের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, "শেষ ১৫ মিনিট হবে সবথেকে রুদ্ধশ্বাস কিছু মুহূর্ত।"
তবে এতদিনে পরিশ্রমের শেষ পর্যায়ে এসে উত্তেজনায় ফুটছেন ডঃ শিবন। তিনি বলেন, "বিক্রমের সমস্ত যন্ত্রপাতিই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে। এই মুহূর্তে অপেক্ষা ও নজরদারি করাই আমাদের একমাত্র করণীয়।" প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসার বিষয়েও খুশি তিনি। "আমাদের ব্যাঙ্গালুরুর কন্ট্রোলরুমে প্রধানমন্ত্রী আসছেন। আমরা সকলে তাঁর আগমনের অপেক্ষায় আছি।"
আরও পড়ুন : কীভাবে 'ব্রেক কষে' চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে বিক্রম? দেখে নিন ইসরোর ভিডিয়ো
বিক্রমের ল্যান্ডিংয়ের বিষয়টিও মজার ছলে ব্যাখা করলেন ইসরো প্রধান। ডঃ শিবন বললেন, "ধরুন কেউ হঠাত্ এসে আপনার হাতে একটি নবজাতককে ধরিয়ে দিল। সেই শিশু নিজের মতো এদিক ওদিক নড়াচড়া করবে। কিন্তু আমাদের তাকে কোলের মধ্যে ধরে থাকতে হবে। বিক্রমের ল্যান্ডিংয়ের বিষয়টিও তাই। বিক্রম নড়াচড়া করলেও আমাদের তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।"
আজকের অবতরণ সফল হলে চাঁদে যান অবতরণকারী দেশগুলির মধ্যে চতূর্থ স্থানে থাকবে ভারতের নাম। রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের পরেই থাকবে ভারতের নাম। শুধু তাই নয় প্রথমবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছবে কোনও দেশের যান। তাছাড়া এত কম বাজেটে এত জটিল অভিযান সম্পন্ন করাও বেশিরভাগ দেশের মহাকাশ সংস্থার কাছে স্বপ্নাতীত। তাই মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে আজকে দিন এক অন্য মাইলস্টোন সৃষ্টি করবে। বিক্রমের সফল অবতরণের দিকেই এখন তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। আর সেই লক্ষ্যেই এখন শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা তুঙ্গে ইসরোর কন্ট্রোলরুমে।
"শেষ ১৫ মিনিটই হবে সবচেয়ে রুদ্ধশ্বাস": ডঃ কে শিবন