পাকিস্তানে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে কারাবন্দি ১৪ বছরের রিমশা
ফের প্রশ্নের মুখে পাকিস্তানের ধর্মদ্রোহিতা রোধ আইন। রিমশা মাসিহ কাণ্ডে পাকিস্তানজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কতটা উদার মানসিকতা পোষণ করে পাক প্রশাসন, রিমশা মাসিহ কাণ্ডে ফের একবার প্রশ্ন উঠল তা নিয়ে। ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে কারাবন্দী রিমশা মাসিহর জামিনের আবেদন জানানো হয় আজ। শুনানি সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন বিচারক।
ফের প্রশ্নের মুখে পাকিস্তানের ধর্মদ্রোহিতা রোধ আইন। রিমশা মাসিহ কাণ্ডে পাকিস্তানজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। কতটা উদার মানসিকতা পোষণ করে পাক প্রশাসন, রিমশা মাসিহ কাণ্ডে ফের একবার প্রশ্ন উঠল তা নিয়ে। ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে কারাবন্দী রিমশা মাসিহর জামিনের আবেদন জানানো হয় আজ। শুনানি সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন বিচারক।
ঘটনার সূত্রপাত খুশির ইদের দিন। অভিযোগ, ছোটদের জন্য রচিত একটি ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করে খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী রিমশা মাসিহ। সেই অপরাধেই জেলে যেতে হয় রিমশাকে।
গরিব পরিবারের মেয়ে রিমশা। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন তার বয়স ১৪-র আশপাশে। যদিও তার মানসিক বিকাশ বয়সের অনুপাতে হয়নি। তার চিন্তাধারায় এখনও শিশুসুলভ বৈশিষ্ট্য আছে। অথচ মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া সত্ত্বেও এই মেয়েটিকেই ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে দিন কাটাতে হচ্ছে কারাগারে। দীর্ঘদিন ধরেই নানা মত রয়েছে পাকিস্তানের ধর্মদ্রোহিতা রোধ আইন নিয়ে। আর এই জায়গাতেই সরব মানবাধিকার সংগঠনগুলি। মানসিকভাবে অসুস্থ এক নাবালিকাকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্ন উঠছে বিশ্বজুড়ে। শনিবার রিমশার জামিনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন তার মা।
রিমশার বিষয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখতে শুনানি সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন বিচারক। রিমশার জন্য ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করে আছে তা জানা যাবে সোমবার। কিন্তু মুক্তি পেলেও পুরোনো ভিটেয় ফেরা রিমশা বা তার পরিবারের পক্ষে যে অত সহজ হবে না তা একরকম পরিষ্কার। কারণ অতীতে বারেবারেই দেখা গেছে, ধর্মদ্রোহিতা রোধ আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তি আইনের হাত থেকে রেহাই পেলেও, কট্টরপন্থীদের হাত থেকে বাঁচতে পারেন না।
পাকিস্তানে ধর্মদ্রোহিতা আইনে নির্মম পরিণতির ইদানীং কালের অন্যতম উদাহরণ আসিয়া বিবি। আদালতে ধর্মদ্রোহিতার জন্য প্রাণদণ্ডের সাজা দেওয়া হয় আসিয়া বিবিকে। আদালতের এই রায় নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান পাঞ্জাবের গভর্নর সলমন তাশির। ধর্মদ্রোহিতা আইনের সংশোধন উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। আর তারপরেই নিজের দেহরক্ষীর হাতে প্রাণ দিতে হয় পঞ্জাবের গভর্নর সলমন তাশিরকে। এর কিছুদিন পরেই একই কারণে প্রাণ যায় পাকিস্তানের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টির।
রিমশাকে নিয়ে তাই চিন্তা থাকছেই। পাক প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফের উপদেষ্টা এবং শাহবাজ ভাট্টির ভাই পল ভাট্টি যদিও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার পরামর্শ দিয়েছেন। রিমশার ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিও।
ধর্মদ্রোহিতা পাকিস্তানে আইনত দণ্ডনীয়। ইসলাম ধর্মের অবমাননায় এদেশে প্রাণদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।