COP27: রাজনীতি আর স্বার্থ কী ভাবে এ পৃথিবীকে প্রতিদিন বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে জানেন?
COP27: বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) উন্নয়নশীল দেশগুলি পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য তহবিল গঠনে সম্মত হয়েছে! এটা ঐতিহাসিক!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'সিওপি' বা কনফারেন্স অফ পার্টিজ। পার্টিজ মানে দেশ। জলবায়ুকে কেন্দ্র করে চলছে বিভিন্ন দেশের সম্মেলন। মহাসম্মেলন বলাই ভালো। এই ধরনের সম্মেলনে আসলে জলবায়ুগত কতটা ক্ষতি এখনও পর্যন্ত হয়েছে, সেই ক্ষতি কী ভাবে মেরামত করা যায়, আগামী দিনে এই ধরনের ক্ষতির মাত্রা কতটা কমানো সম্ভব ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়, চুক্তি হয়। পাশাপাশি আর একটা জিনিস হয়। কোন দেশ এ বিষয়ে বেশি দোষী তাকে খুঁজে বের করা হয়। এবং তার উপর নানা শর্ত আরোপ করা হয়। কিন্তু এখানেই গোলমাল। সাধারণত উন্নত দেশগুলিই এই ধরনের পাপ বেশি করে আর তারা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে এই পাপটা চালিয়েই যেতে চায়। বড় দাদাকে কেউ সে অর্থে ঘাঁটাতে চায় না। ফলে, শেষ পর্যন্ত এই ধরনের সম্মেলনগুলি ব্যর্থই হয়।
আরও পড়ুন: Nostradamus Predictions 2023: ২০২৩ সাল নিয়ে এই সব ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন নস্ত্রাদামুস...
এবারের কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনেও নানা চুক্তি হয়েছে। তবে চুক্তির বেশ কয়েকটি মূল উপাদান ত্রুটিযুক্ত এবং এর প্রতিশ্রুতিগুলিতে বাস্তবায়নের অভাব লক্ষণীয় বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। গত বছর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ–২৬ সম্মেলনে তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার কোনো অগ্রগতি এই সম্মেলনে দেখা যায়নি। এদিকে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য বিভিন্ন দেশ যে সব পরিকল্পনা পেশ করেছে, তা কখনোই সম্ভব হবে না, যদি দেশগুলি এখনই এ বিষয়ে সচেতন না হয়! অর্থাৎ, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, কিন্তু তা নিয়ে কোনও কথাই হচ্ছে না।
তবে এই বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) একটি কাজের কাজ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলি জলবায়ুগত ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য এক ঐতিহাসিক তহবিল গঠনে সম্মত হয়েছে। এই ক্ষতিপূরণের তহবিলের মাধ্যমে জলবায়ু বিপর্যয়ের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তুলনামূলক ভাবে দরিদ্র দেশগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এটি এই সম্মেলনের টার্নিং পয়েন্ট হলেও জলবায়ু সংকটের বিপুল বৈষম্য থেকেই গেল।
শার্ম আল-শেখ অর্থাৎ ‘জ্ঞানীদের উপসাগরে’ দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে শুক্রবার রাতে বিধিবদ্ধ সময়কাল পেরিয়েও ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলল আলোচনা। ১৫ দিন ধরে চলা দর–কষাকষিতে ধনী ও দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে যথেষ্ট বিভাজন ছিল। অনেক সময় চুক্তিতে পৌঁছনো অসম্ভব বলেও মনে হয়েছিল। শেষ প্রহরগুলিতে দেশগুলি চূড়ান্ত ঝগড়ায় মত্ত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিশ্বের তাপমাত্রা এই শতকের মধ্যে যাতে আরও দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস না বাড়ে এই নিয়ে সর্বসম্মতি সম্ভব হয়েছে। হয়েছে অভিযোজন তহবিল, ক্ষয়পূরণ তহবিল, বিশ্বব্যাংক সংস্কার, আফ্রিকায় গ্যাস উত্তোলন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে, নিজেদের পরিবেশ-রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে বিশ্ব-পরিবেশের কি সত্যিই কোনও উন্নতি হবে?