নিজস্ব প্রতিবেদন: ২৫ মার্চ, ১৯৯২। পাকিস্তান পেয়েছিল এক বিশ্বজয়ী অধিনায়ককে। ২৫ বছর পর ২০১৮-র ২৬ জুলাই তাঁকেই দেশের ‘অধিনায়ক’ হিসাবে বেছেনিলেন পাক নাগরিকরা। প্রেক্ষাপট এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাইশ গজে মাত্র ১১ জনের দলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে যে মানুষটির ‘শেরোচিত’ আচরণ দেখা গিয়েছে, আজ ২০ কোটি দেশের ভার পেয়ে সেই আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যাবে কি ইমরানকে? সে দিকেই তাকিয়ে সে দেশের আমজনতা। তাকিয়ে রয়েছে নয়া দিল্লিও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- নওয়াজ় ‘ব্যর্থ’ ক্রিকেটার, আজও ফিরলেন শূন্য হাতে!


ভোটে জয় কার্যত নিশ্চিত জেনে বুধবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের সুপ্রিমো। তাঁর সরকার যে সংস্কারমূলক উন্নয়নে জোর দেবে, এ দিন তা স্পষ্ট করে দেন ভাবী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি জানান, অগ্রাধিকার দেওয়া হবে দেশের দারিদ্র, বেকারত্ব দূর করার বিষয়ে। তাঁর সরকার গরিবের পাশে থেকে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন ইমরান।  দেশের আর্থিক সংস্কার করতে চিনা মডেলের পথেই এগোতে চেয়েছেন তিনি। ৬৫ বছর বয়সী রাজনীতিক এদিন বলেন, “২২ বছর আগে যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই আদর্শকেই কার্যকর করতে সুযোগ দিয়েছেন ঈশ্বর।”


আরও পড়ুন- ভারত এক পা এগোলে, পাকিস্তান এগোবে দু’পা: ইমরান


ক্ষমতায় ইমরান খান থাকলে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সে দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কোন পর্যায়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে কূটনৈতিক মহলে। দিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদের বোঝাপড়ার বিষয়টির একটি ‘ট্রেলর’ বুধবারই প্রকাশ করেন তিনি। ইমরান স্পষ্ট করে দেন, ভারত এক কদম এগোলে তারা দুকদম এগোবে। আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমধানের কথাও বলেছেন ইমরান।


নওয়াজ় শরিফ সরকারের সমালোচনা করে  এ দিন তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদীকে ভালবাসেন নওয়াজ়। ভারতের হয়েই কাজ করতেন তিনি। কিন্তু আমি প্রকৃত দেশপ্রেমী। দেশের ভাল-মন্দ বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেব।” কূটনীতিকদের মতে, ইমরানের সরকার বকলমে চালাবে সে দেশের সেনা। তিনিও জানিয়েছেন, সেনাকে পাশে নিয়ে সরকার চালানোর কথা। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে যতই আলোচনার কথা বলুক ইমরান, এ বিষয়ে সে দেশের সেনা এবং গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর তদরাকি তাঁর হাতে থাকবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নতুন সরকারও বেশি আস্থা রাখতে চায় চিনের উপর, এ দিন বৈঠকে তাও স্পষ্ট করে দেন তিনি। ভারতীয় ভূখণ্ডের উপর দিয়ে তৈরি হওয়া ওবর (ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড) প্রকল্প প্রথম থেকেই দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে সাউথ ব্লকের। এর উপর এ দিন ইমরানের ‘অতিমাত্রায় চিন প্রীতি’র বার্তা পাওয়ায় সমস্যা আরও জটিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।  


আরও পড়ুন- জনগণের করের টাকা বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর 'বিশাল' আবাসে থাকবেন না ইমরান খান


পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের আঁতুরঘর’ বলে আগেই তকমা দিয়েছে আমেরিকা। জঙ্গি দমনে ইসলামাবাদের ব্যর্থতা নিয়ে বারংবার সরব হয়েছে হোয়াইট হাউজ। কয়েকটি ক্ষেত্রে চাপানো হয়েছে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশনীতি নিয়ে বরাবর সমালোচনা করে এসেছেন ইমরান। এ দিন তিনি জানিয়েছেন, পারস্পারিক সুবিধা পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে পাকিস্তান। দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অবাধ করতে এবং সুস্থিতি ফেরাতে  বিশেষভাবে জোর দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ইমরান।