সিরিয়ায় শান্তি ফেরাতে `ব্যর্থ` আন্নানের ইস্তফা

সিরিয়ায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ বন্ধ না হওয়ায় রাষ্ট্রসংঘ ও আরব লিগের যৌথ দূতের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কোফি আন্নান। গতকাল জেনিভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, রাষ্ট্রসংঘ এবং আরব লিগের উপর আস্থা রেখেছিলেন সিরিয়ার মানুষ। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ সেই কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ।

Updated By: Aug 3, 2012, 10:57 AM IST

সিরিয়ায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ বন্ধ না হওয়ায় রাষ্ট্রসংঘ ও আরব লিগের যৌথ দূতের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কোফি আন্নান। গতকাল জেনিভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, রাষ্ট্রসংঘ এবং আরব লিগের উপর আস্থা রেখেছিলেন সিরিয়ার মানুষ। ভেবেছিলেন, আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপে শান্তি ফিরবে সিরিয়ায়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ সেই কাজে পুরোপুরি ব্যর্থ। তার দায় মাথায় নিয়েই অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বর্ণনা করেন রাষ্ট্রসংঘের বর্তমান মহাসচিব বান কি মুন। 
সিরিয়ায় শান্তি ফেরাতে দীর্ঘ দিন ধরে উদ্যোগী আন্তর্জাতিক মহল। সংঘর্ষরত দু`পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসাতে চেষ্টা চালাতে শুরু করে রাষ্ট্রসংঘ। তার জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব দেওয়া হয় রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কোফি আন্নানকে। তাঁকে যৌথ ভাবে রাষ্ট্রসংঘ ও আরব লিগের দূতের পদে বসানো হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সিরিয়ায় রাজনৈতিক হিংসা থামাতে, একগুচ্ছ প্রস্তাব দেন তিনি। যার মধ্যে ছিল সংঘর্ষ চলাকালীন ভারি অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার বন্ধ রাখা। ত্রাণের কাজে বাধা না দেওয়া। সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। সভা-সমাবেশের অনুমতি। এছাড়া সিরিয়াবাসীর স্বার্থে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার উপরও গুরুত্ব দিয়েছিলেন আন্নান ।
কোফি আন্নানের দাবি ছিল, তাঁর প্রস্তাবগুলি এ-বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর করতে হবে। কিন্তু সিরিয়ার শাসকদল কিম্বা বিরোধীদের কেউই তাঁর শান্তি প্রস্তাব মানেননি বলেই অভিযোগ আন্নানের। বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে একাধিকবার আলোচনা করেছেন তিনি। কিন্তু কাজের কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দূতের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার জেনিভায় সাংবাদিক বৈঠকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব। তাঁর বক্তব্য, সিরিয়ার বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদ একমত হয়নি। ফলে সেদেশে রক্তপাতও থামানো সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর মতে,রাষ্ট্রসংঘের সদিচ্ছা থাকলে, সিরিয়ায় রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ করা যেত।

কোফি আন্নানের পদত্যাগকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। সিরিয়ার বিদেশমন্ত্রকও আন্নানের ইস্তফাকে দুঃখজনক ঘটনা বলে বর্ণনা করেছে। আন্নানের পদত্যাগের জন্য চিন এবং রাশিয়াকেই দায়ি করেছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কারনি জানিয়েছেন, বেজিং এবং মস্কো যদি আন্নানে প্রস্তাবে রাজি থাকত, তাহলে সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত রাষ্ট্রসংঘ।
এদিকে বৃহস্পতিবারও উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের একটি বিমান ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ ঘটায় বিদ্রোহীরা। মানবাধিকার রক্ষা কমিটির দাবি, দামাসকাসের কাছে অভিযানে ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাহায়্য করার আশ্বাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মনে করা হচ্ছে, তার পরই প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনীর উপর হামলা জোরদার করেছে বিদ্রোহীরা।

.