করোনার জন্য পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল একটি ভাষা!
পোর্ট ব্লেয়ারে বসবাস করতেন লিচা। যক্ষ্মা ও হৃদরোগে ভুগে মারা যান তিনি। তবে তার শরীরে করোনার প্রতিটি উপসর্গ থিল বলে দাবি করেছেন সেখানকার অনেকেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন— করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সুদূর আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে। ২১ এপ্রিল সেখানে ১৫ জনের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। তবে এরই মধ্যে সেখানে ১১জন সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসে আন্দামানের একটি বড় ক্ষতি করে দিয়ে গেল। সেখানে আস্ত একটি ভাষাকে অবলুপ্ত করে দিয়ে গেল এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। গ্রেট আন্দামানিজ ভাষা পরিবারের সারে ভাষা মুছে গেল পৃথিবী থেকে। আন্দামানি নেগ্রিট এবং ওগান। এই দুটি ভাষা নিয়ে গঠিত আন্দামানিজ ভাষা। তারই একটি অঙ্গ ছিল সারে ভাষা। আর সারে ভাষার শেষ কথক মারা গিয়েছেন। ফলে এই দুনিয়াতে সারে ভাষা বলার মতো আর কেউ রইল না।
পোর্ট ব্লেয়ারে বসবাস করতেন লিচা। যক্ষ্মা ও হৃদরোগে ভুগে মারা যান তিনি। তবে তার শরীরে করোনার প্রতিটি উপসর্গ থিল বলে দাবি করেছেন সেখানকার অনেকেই। যদিও লিচের মৃত্যুর সঙ্গে করোনার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে কি না সেই বিষয়টি রহস্য হিসাবেই রয়ে গেল। রাজা জিরাকের প্রথম সন্তান ছিলেন লিচো। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ভাষার উত্তরাধিকার বহন করছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই মুছে গেল সারে ভাষা। গ্রেট আন্দামানিজ ভাষার ব্যাকরণ ও অভিধান তৈরিতে লিচোর অবদান গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জেরু, পুজুক্কর, আন্দামানিজ হিন্দি ভাষাও জানতেন লিচো।
আরও পড়ুন— ভারতের সুর কড়া হতেই নতুন মানচিত্র নিয়ে পিছু হঠল নেপাল
গ্রেট আন্দামানিজ ভাষা পরিবারের আর মাত্র তিনজন সদস্য জীবিত রয়ছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স পঞ্চাশের উপরে। আর প্রত্যেকেই কোনও না কোনও রোগে ভুগছেন। অ্যামাজনের একাধিক আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। একইরকম আশঙ্কা করা হচ্ছে আন্দামানের আদিবাসীদের ক্ষেত্রেও। সেখানেও যদি এই মারণ ভাইরাস থাবা বসায় তা হলে বড় বিপদ হতে পারে। আদিবাসী অঞ্চলে বাইরের লোকজনের প্রবেশ ও ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।