গোপনে অন্ত্যেষ্টি গদ্দাফির

মঙ্গলবার ভোরে গোপনে মিসরাতার এক অজ্ঞাত স্থানে সমাধিস্থ করা হয়েছে মুয়াম্মার গদ্দাফির দেহ। সেইসঙ্গে গদ্দাফি পুত্র মুতাসসিম ও গদ্দাফি জমানার প্রাক্তন সেনাপ্রধানের দেহও সমাহিত করা হয়েছে।

Updated By: Oct 25, 2011, 02:38 PM IST

মঙ্গলবার ভোরে গোপনে মিসরাতার এক অজ্ঞাত স্থানে সমাধিস্থ করা হয়েছে মুয়াম্মার গদ্দাফির দেহ। সেইসঙ্গে গদ্দাফি পুত্র মুতাসসিম ও গদ্দাফি জমানার প্রাক্তন সেনাপ্রধানের দেহও সমাহিত করা হয়েছে। এনটিসি বা লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের এক সেনা মুখপাত্র এখবর জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সির্তেতে ধরা পড়ার পর যেভাবে গদ্দাফিকে মারা হয়েছে, তাতে তাঁদের কিছু করার ছিল না বলেই মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমন্ত্রী।   
গদ্দাফির দেহ কবে সমাহিত করা হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে চাপানউতোর ছিলই। বৃহস্পতিবার সির্তেতে নিহত হওয়ার পর, গদ্দাফির দেহ রাখা ছিল মিসরাতার একটি মর্গে। সেখানেই রাখা ছিল গদ্দাফি পুত্র মুতাসসিম ও গদ্দাফির এক সহযোগীর দেহ। দেহগুলিতে পচন ধরতে শুরু করায়, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটায় তড়িঘড়ি সমাহিত করা হয় তিনটি দেহ। লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের এক সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, মিসরাতার কাছে একটি অজ্ঞাত স্থানে সমাহিত করা হয়েছে গদ্দাফিকে। মুতাসসিম এবং গদ্দাফি জমানার প্রাক্তন সেনাপ্রধানের দেহটিও সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়েছে। মর্গের নিরাপত্তারক্ষী সেলিম আল মোহনদেস জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে মর্গ থেকে তিনটি দেহ বের করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। তবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেবিষয়ে তাঁকে কিছু বলা হয়নি। এদিকে গদ্দাফির মৃত্যু ঘিরে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অন্য মাত্রা যোগ করল আলজাজিরা চ্যানেলে সম্প্রচার করা একটি ভিডিও। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের অনুগত বাহিনীর এক সদস্যকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সহযোদ্ধারা। কারণ তিনিই গদ্দাফিকে গুলি করেন। ক্যামেরার সামনে এমনটাই দাবি করছেন বাকিরা।
গদ্দাফিকে যেভাবে মারা হয়েছে, তাতে তাদের কিছু করার ছিল না বলে কার্যত সাফাই দিয়েছেন লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমন্ত্রী মাহমুদ শাম্মাম। তিনি বলেন, যদি একদল আন্দোলনকারী এমন একজনকে ধরে ফেলে যে গত বেয়াল্লিশ বছর ধরে দেশবাসীর উপর অত্যাচার চালিয়েছে, তাঁরা কি তখন ধৃত ব্যক্তির মাথায় চুম্বন করবে? শাম্মাম জানিয়েছেন, গদ্দাফি হত্যার বিষয়য়টিকে অন্তর্বর্তী সরকার খুব সাধারণ ভাবে নিতে চায়। সরকার কখনোই চায় না যে এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি হোক। মন্ত্রীর দাবি, গদ্দাফির নির্মম হত্যালীলায় লিবিয়ায় প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা গদ্দাফিকে হাতেনাতে ধরে খতম করে, তাতে তাঁদের কিছু করার ছিল না অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমন্ত্রীর ব্যখায় অবশ্য সন্তুষ্ট নয় মার্কিন মানবিধার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এখনও তারা মুয়াম্মার গদ্দাফির মৃত্যুর কারণ নিয়ে সরব। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে গদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুস্তাফা আবদেল জালিল। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, সির্তের একটি হোটেল থেকে উদ্ধার হয়েছে তিপান্নটি পচা গলা দেহ। তাদের দাবি, দেহগুলি গদ্দাফি সমর্থকদের। তাঁদের খুন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের সেনা। দেহগুলির অবস্থা দেখে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুমান, এমাসের পনের থেকে উনিশ তারিখের মধ্য সকলকে খুন করা হয়েছিল।

.