নিজস্ব প্রতিবেদন: কৃষক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গ্রেটা থুনবার্গ, রিহানা টুইট প্রতিবাদ করেছেন। তা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে বাদ-প্রতিবাদ চলছে। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতও। ভারতে নানা বিখ্যাত মানুষ দেশের ব্যাপারে বিদেশের কারও নাক গলানোর প্রয়োজন নেই-- এই মর্মে বিবৃতি দিয়েছেন। এবং আগুনে ঘি পড়েছে। আর এক দল বিশিষ্ট মানুষ প্রতিবাদের স্বাধীনতাকে মান্য়তা দিতে এর পাল্টা প্রতিবাদও করছেন। কিন্তু পুরো বিষয়টিতে জড়িয়ে পড়ছে কানাডার 'পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন'।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

#IndiaAgainstPropaganda-কাণ্ডে তাদের নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে অবশেষ তার সুচিন্তিত জবাব দিল 'পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশন'। নিজেদের টুলকিট-বিতর্কে মুখ খুলল তারা। PJF জানাল, যে কোনও ধরনের প্রতিবাদের ক্ষেত্রে তারা একেবারেই স্বভাবিত, স্বশাসিত, স্বনিয়ন্ত্রিত এক সংস্থা। কাউকে কোথাও কোনও কিছুতে প্ররোচিত তারা করে না। এবং নিজেদের প্রতিবাদের মাধ্যমে কারও ক্ষতিসাধনও তাদের লক্ষ্য নয়।


দীর্ঘ এক বিবৃতিতে তাদের বহুচর্চিত ও সমালোচিত Toolkit-বিতর্কে PJF-এর তরফে Anita Lal ও Mo Dhaliwal পরিষ্কার জানিয়ে দেন, PJF বরাবর নিপীড়িত, অত্যাচারিতের পক্ষে। কানাডাতেও অবিচারের ঘটনা আছে। তারা তার বিরুদ্ধেও কথা বলে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেখানে যা অবিচার হয়, তার বিরুদ্ধে গলা তোলে তারা। এই মনোভাবের সূত্রেই তারা  #FarmersProtest বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছিল। যেখানেই মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে তারা মনে করে, সেখানেই তারা তা অক্ষুণ্ণ রাখার কথা বলে। 


কিন্তু কখনওই কারও বিরুদ্ধে ঘৃণা তারা ছড়ায় না, এই মর্মে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল PJF। শুধু তাই নয়, তারা কোনও ক্ষেত্রেই কারও অধিকার খর্ব করারও পক্ষপাতী নয়। একদল মানুষের জন্য কণ্ঠ তোলা মানে অন্য দলের ক্ষতিসাধন-- এই তত্ত্বে তারা বিশ্বাস করে না।


পিজেএফ মানুষের প্রতি ভালবাসায় বিশ্বাসী। তারা ব্যক্তিমানুষের স্বাধীনতা ও মর্যাদায় আস্থাবান। তারা গণতন্ত্রের বিকাশেও বিশ্বাসী। সুষ্ঠু এক ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে তারা কথা বলে। অত্য়াচারিত হওয়ার ভয় তারা পায় না। কেননা, অসাম্য অন্যায়ের প্রতিবাদের পরিসরটা তাদের দেশে আছে। 


আরও পড়ুন: 'আমি এখনও কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করি', দিল্লি পুলিসের FIR-র পর পাল্টা টুইট গ্রেটা থানবার্গের


এর পরই Anita Lal ও Mo Dhaliwal ভারতে চলা কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গে চলে আসেন। তাঁরা ওই বিবৃতিতে জানান, ভারতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর আক্রমণ লক্ষ্য করে বিচলিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। তারা দেখেছেন এই বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে সাংবাদিকদের কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সরকার ভূমিহীন চাষিদের চেয়ে কর্পোরেট সংস্থার স্বার্থের দিকেই নজর দিয়েছে বেশি। আসলে গণতন্ত্রকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে যা খুব স্বাভাবিক, এ ক্ষেত্রে শুধু সেটুকুই করেছেন তাঁরা।


এবং সেটা করতে গিয়ে PJF আলোচনা করে ঠিক করেছে যে, তদের তরফ থেকে ভারতের এই অন্দোলনকে কিছু প্রশ্ন করা হবে। সেইমতো 'ask India why' প্রকল্পে তারা কতগুলি প্রশ্ন শুধু ছুড়ে দিয়েছে ভারতের দিকে-- কেন ভারত তার কৃষকদের হত্যা করছে? কেন ভারত তার সংখ্যালঘুদের হত্যা করছে? কেন ভারত তার গণতন্ত্রকে বিনষ্ট করছে? এই AskIndiaWhy.com.-য়ে তাদের তরফে যা তথ্য সংগৃহীত ছিল তা সকলেরই ব্যবহারযোগ্য। এখনও ওই সাইটে একই ভাবে আছে সেইসব। বিতর্কের পরেও তারা সেগুলি সরিয়ে নেয়নি কারণ, তারা সেগুলিতে বিশ্বাস করে। এবং তাদের সেই বক্তব্যের সঙ্গেই সহমত হয়েছেন গ্রেটা থুনবার্গ-সহ আরও কেউ কেউ। আর তার পরই ভারতের তরফে কড়া ভাবে পিজেএফের সমালোচনা করা হচ্ছে। অথচ, তারা যা সত্যি সেটাই তুলে ধরেছে। যেমন, কৃষক আন্দোলনের জেরে ভারতে দু' শোরও বেশি কৃষকের মৃত্যু ঘটেছে। বিক্ষোভস্থল থেকে অন্তত দু'শো জন নিখোঁজ হয়েছেন। জল, ইন্টারনেট এবং বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।


কিন্তু তাই বলে PJF রিহানা, গ্রেটা থুনবার্গ বা অন্য কোনও সেলেব্রিটিকে এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ানোর দায়িত্ব নেয়নি। ভারতের কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে কোনও অন্যমাত্রার আন্দোলন গড়ে তোলা কখনওই তাদের লক্ষ্য নয়।  এবং এর জন্য কাউকে অর্থ দিয়ে প্রলোভিত ও প্ররোচিত করার যে অভিযোগ উঠেছে তা-ও তারা সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে। 


PJF দীর্ঘ এই বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছে, অন্যায়-অবিচার দেখে সচেতন মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যে কোনও আন্দোলনে যোগ দেবেন সেটাই তাদের কাম্য। শুধু তাই নয়, তারা এ-ও মনে করে, ভারত নিশ্চয়ই কৃষকদের উপর যে অত্যাচার সংঘটিত হচ্ছে সেটা বন্ধ করার জন্য সচেষ্ট হবে। সর্বত্র যথাযথ গণতন্ত্র যাতে রক্ষিত হয়, দেখবে সেটাও। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র নিশ্চয়ই এত ভঙ্গুর নয় যে, এই আন্দোলনে তা ভেঙে খানখান হয়ে যাবে। এবং ভারত সরকার নিশ্চয়ই এ-ও প্রমাণ করবে যে, মাত্র ন'মাসের অলাভজনক ছোট্ট একটি প্রতিষ্ঠানের সমালোচনায় ধ্বস্ত হয়ে পড়ার মতো দুর্বল তারা নয়। 


আরও পড়ুন: Farmers' protest: Rihanna, Greta-র পর এবার সমর্থন অস্কার জয়ী Susan-র