জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আপনারা টারজান বা মুগলির গল্প শুনেছেন, যারা দীর্ঘদিন বুনো পরিবেশে থাকার কারণে মানব-অভ্যাস থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছিল। প্রাণীদের মতোই আচার-ব্যবহার, তাদের মতোই গলার আওয়াজ। তবে সে তো গল্পে। না, এরকম বাস্তবেও হয়। হয়েছেও। ইউক্রেনে। ওক্জানা মালায়ার জীবনে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কী হয়েছে তাঁর?


আরও পড়ুন: Mini City for Monkeys: 'প্ল্যানেট অব দ্য এপস' নয়, বানরের জন্য একটি আস্ত শহর...


তিনি কুকুরের মতো ডাকেন, কুকুরের মতো চারপায়ে হাঁটেন, কুকুরের মতোই নিজের গা চেটে-চেটে পরিষ্কার করেন, কাঁচা মাংস খান, আবর্জনার থেকেই খাবার খুঁটে খান!


ওক্জানা মালায়ার দাবি, ছোটবেলা থেকেই তিনি কুকুরদের সঙ্গে থেকেছেন। খুবই আশ্চর্য তাঁর জীবন। মাত্র ৩ বছর বয়সে তিনি বাবা-মায়ের দ্বারা পরিত্যক্ত। তাঁর নেশাখোর বাবা-মা এক প্রচণ্ড ঠান্ডার রাতে তাঁকে ঘরের বাইরে বের করে দেন। ওই ঠান্ডায় থাকলে সে মরে যাবে। একটু উষ্ণতার  খোঁজে সে কোনও রকমে হামাগুড়ি দিয়ে তাদের পোষা কুকুরের ঘরে (কেনেলে) গিয়ে ঢুকে পড়ে। এই ভাবে সে পাঁচটি বছর কাটায় সেখানে, তাদের সঙ্গে-- ৩ থেকে ৯ বছর!


আর এরই সূত্রে তাঁর মধ্যে 'অ্যানিম্যাল ট্রেইট'গুলো ঢুকে পড়ে। যেমন বার্কিং--কুকুরের মতো ডাক, কুকুরের মতো চারপায়ে হাঁটা, কুকুরের মতোই ভাবভঙ্গি করা। আর এই কারণেই কুকুরগুলিও তাকে তাদেরই একজন মনে করে। তার সঙ্গে কমিউনিকেশনও করে। ওরা বার্কিং করে, আর মালায়াও বার্কিংয়েই উত্তর দেয়। কুকুরের মতোই নিজের গা চেটে-চেটে পরিষ্কার করে মালায়। কাঁচা মাংস খায়। আবর্জনার স্তুপে খাবারের খোঁজ করে আর সেখান থেকেই খাবার খুঁটে খায়ও। বছরচল্লিশের মালায়া এখন একটি স্পেশাল কেয়ার ইনস্টিটিউশনে আন্যা চালায় নামের এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে থাকেন। তিনিই মালায়ার এখনকার বিহেভিয়ারাল প্যাটার্ন নিয়ে আলোচনাসূত্রে এগুলি বলেন সংবাদমাধ্যমে। 


আরও পড়ুন: Brightest Object in the Universe: ব্রহ্মাণ্ডের সব চেয়ে উজ্জ্বল বস্তু, ব্রেকফাস্টে একটি করে সূর্য তার চাই-ই...


মালায়র যখন ৯ বছর বয়স তখন তাঁর বিষয়টা ইউক্রেন সরকারের নজরে পড়ে। তাঁকে তখন কুকুরদের আড্ডা থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিস তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে কুকুরেরা দল বেঁধে বাধা দেয় পুলিসকে। যাই হোক, পরে সেখান থেকে তাঁকে কোনও ক্রমে উদ্ধার করে এনে ফস্টার হোমে রাখা হয়। তার ক্যানাইন-লাইক বিহেভিয়ারাল প্যাটার্ন বদলানোর চেষ্টা করা হয়। অনেকটা শুধরে গেলেও এখনও কুকুরের অনেক কিছুই তাঁর মধ্যে রয়ে গিয়েছে। সব চেয়ে বড় কথা, মালায়া কথা বলতে পারেন না, তাঁর মধ্যে বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশও ঘটেনি। পাঁচ বছরের মধ্যে ভাষা ব্যবহার করতে না শিখলে মানুষ আর পরে ভাষা শিখতে পারে না-- এমনই বলে থাকেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁর জীবনে ৩ বছর পর্যন্ত ব্যাপারটা স্বাভাবিক থাকলেও পরে তা বদলে যায়। ফলে এর কুপ্রভাব পড়ে তাঁর পরবর্তী জীবেন। এখনও তার জের চলছে। 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)