তুরস্কে অভ্যুত্থানে উস্কানি দিল কে?
ওয়েব ডেস্ক: তুরস্কে অভ্যুত্থানে উস্কানি দিল কে? উঠে আসছে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের নাম। তিনি ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেন। থাকেন আমেরিকায়। তুরস্ক জুড়ে চলে তাঁর ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সরকারি দফতর, সেনা, বিচার বিভাগে তাঁর বহু অনুগামী।
খিলাফতের অবসান ঘটিয়ে তুরস্কে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেন মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক। বিশ্ব যাঁকে চেনে কামাল পাশা নামে। সাতানব্বই শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র গ্রহণ করে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ। তবে সেনা অভ্যুত্থান তুরস্কে নতুন নয়।
অতীতে সেনা অভ্যুত্থানের সাল তামামি-
১৯৬০: গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে একদল সেনা অফিসারের নেতৃত্বে বিদ্রোহ হয়।
১৯৭১: সেনা নামিয়ে নয় হলফনামা দাখিল করে অভ্যুত্থান ঘোষণা করে সেনাবাহিনী।
১৯৮০: ডানপন্থী ও বামপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শেষ করতে সেনা অভ্যুত্থান।
১৯৯৭: সেনা অভ্যুত্থানে পদত্যাগ ইসলামপন্থী মৌলবাদী প্রধানমন্ত্রীর।
ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র রক্ষা করা সহজ নয়। তুরস্কে বারবার মাথা তোলার চেষ্টা করেছে মোল্লাতন্ত্র। গণতন্ত্রের প্রতিরোধ করায় হয়েছে সংঘর্ষ। সাবেক অটোমান সাম্রাজ্যে বর্তমান সঙ্কট দুই ব্যক্তিত্বের সংঘাত ঘিরে।
তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ; কমপক্ষে মৃত ২০০, আহত ১১৫৪, গ্রেফতার ১৫০০-র অধিক (ভিডিও)
প্রেসিডেন্ট বনাম ধর্মগুরু:
তুরস্কের রাজনীতিতে এখন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরডোগানের সঙ্গে সংঘাত ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেনের ধর্মগুরু ফেতুল্লাহ গুলেন ধর্মীয় শিক্ষায় একজন মৌলবী। উনিশশো আটানব্বই সাল থেকে আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় এক বিলাসবহুল অট্টালিকায় রয়েছেন তিনি। তুরস্কের শহরে শহরে হিজমেত নামে এক সংগঠন চালান ফেতুল্লাহ। ফেতুল্লাহর দাবি, পরিচিত মৌলবাদী চিন্তার বাইরে গিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেয় তাঁর সংগঠন। তুরস্কের আট কোটি জনতার অন্তত ১০% মানুষ ফেতুল্লাহর সমর্থক সরকারি কর্মী, সেনাবাহিনী, বিচারবিভাগেও ফেতুল্লাহর সমর্থকরা রয়েছে
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্ডোগানের অভিযোগ, অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টার পিছনে রয়েছে ফেতুল্লাহই।
২০১৩ সালে প্রেসিডেন্টের ছেলে বিলাল ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন অভিযান চালায় বিচার বিভাগ। ফেতুল্লাহর উস্কানিতেই সেই অভিযান চালানো হয় বলে অভিযোগ প্রেসিডেন্ট এর্ডোগানের। হিজমেত সংগঠনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ করে দেয় তুরস্ক সরকার।
অশান্ত তুরস্কে সুরক্ষিত ভারতীয়রা, আপাতত ঘরে থাকতেই পরামর্শ বিদেশমন্ত্রকের
অভিযোগের জবাব দিতে সামনে আসেননি ফেতুল্লাহ। যদিও তাঁর সংগঠনের তরফে অভ্যুত্থান বা রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এযাত্রা উতরে গেলেও ফের বিদ্রোহের মুখে প়ডতে পারেন প্রেসিডেন্ট। কারণ শুধু ফেতুল্লাহ পন্থীরা নন। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমছে দেশবাসীর বড় অংশের মধ্যে।