পুরভোটের সালতামামী, এক বছরে ভোট বাড়িয়েছে বামেরা
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এবারের পুরভোটে ৬টি পুরসভা এলাকায় আসন বেড়েছে বামেদের। তথ্য বলছে, ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে ৬টি পুরসভার মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বামেরা। এবার ওই ৬টি পুরসভা এলাকাতে ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৮টিতে জিতেছে বামেরা।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এবারের পুরভোটে ৬টি পুরসভা এলাকায় আসন বেড়েছে বামেদের। তথ্য বলছে, ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে ৬টি পুরসভার মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল বামেরা। এবার ওই ৬টি পুরসভা এলাকাতে ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৮টিতে জিতেছে বামেরা। অর্থাত্ পুরসভা এলাকায় বামেদের আসন বেড়েছে ২টি। বিধানসভা ভোটে ৬টি পুরসভার এলাকায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোট জিতেছিল ৯৪টি ওয়ার্ডে। এবার জোট হয়নি কংগ্রেস ও তৃণমূলের। তৃণমূল ৬টি পুরসভার মোট ৭২টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। কংগ্রেস জিতেছে ১৫টি ওয়ার্ডে। অর্থাত্ কংগ্রেস ও তৃণমূলের মোট আসন কমেছে ৭টি।
অবশ্য, ২০০৭-এর পুরসভা ভোটে বামেরা ৭৮টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। তৃণমূল ২০ ও কংগ্রেস ২৮টি ওয়ার্ডে জিতেছিল। ২০০৭-এর নিরিখে আলোচনা করলে কংগ্রেসের আসন কমলেও তৃণমূল কংগ্রেস আসন সংখ্যা বেড়েছে ৬টি পুরসভা এলাকায়। অবশ্য নলহাটি, কুপার্স ক্যাম্প-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় কংগ্রেসের টিকিটে জেতা কয়েকজন কাউন্সিলর পরে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখান।
২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় হলদিয়া পুরসভায় শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে বামেদের। বিধানসভা ভোটে হলদিয়ায় বামেদের লিড ছিল ১১টি ওয়ার্ডে। এবার ১৫টি ওয়ার্ডে জিতেছে বামেরা। বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা এগিয়ে ছিলেন ১৫টি ওয়ার্ডে। এবার তৃণমূল ১১টি ওয়ার্ডে জিতেছে।
পাঁশকুড়ায় বিধানসভার তুলনায় শক্তি বেড়েছে তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটে পশ্চিম পাঁশকুড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী ওমর আলির ১১টি ওয়ার্ডে লিড ছিল। এবার ১২টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। বামেরা ৬টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল। এবার ৫টি ওয়ার্ডে জিতেছে বামেরা।
দুর্গাপুরেও বিধানসভা ভোটের তুলনায় বামেদের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। বিধানসভা ভোটে বামেরা এগিয়ে ছিল ১০টি আসনে। এবার ১১টি আসনে জয়ী হয়েছে তারা। অন্যদিকে, বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায় এগিয়ে ছিলেন ৩৩টি ওয়ার্ডে। এবার ২৯টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। ১টি ওয়ার্ডে জিতেছে কংগ্রেস।
তবে বাম নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে ধূপগুড়ি পৌরসভার ফল। বিধানসভা ভোটে ধূপগুড়িতে ৮টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীর তুলনায় এগিয়ে ছিলেন বিজয়ী সিপিআইএম প্রার্থী মন্মথ রায়। এবার বামেরা জিতেছে ৪টি ওয়ার্ডে। অন্যদিকে, শাসক তৃণমূল কংগ্রেস আশাতীত সাফল্য পেয়েছে এই পৌরসভায়। ১১টি ওয়ার্ডে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। যেখানে বিধানসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল যৌথভাবে লড়ে এগিয়েছিল ৮টি ওয়ার্ডে।
বিধানসভা ভোটের তুলনায় নলহাটিতে খারাপ ফল করেছে কংগ্রেস। এখানে সংখ্যার বিচারে প্রথম তৃণমূল। যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাম এবং কংগ্রেস। ২০১১-র তুলনায় কংগ্রেসের ফলাফল নিরাশাজনক। বিধানসভা ভোটে কং-তৃণমূল জোটের প্রার্থী, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় এগিয়ে ছিলেন ১৫টি ওয়ার্ডে। বামেরা এগিয়ে ছিল ১টি ওয়ার্ডে। এবার বামেরা ৩টি ওয়ার্ডে জিতেছে। কংগ্রেসও ৩টি ওয়ার্ডে জিতেছে। ৮টি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্পে বিধানসভা ভোটের তুলনায় বামেদের শক্তিবৃদ্ধি হয়নি। এখানে আবার অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। ২০১১ সালে রাণাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কুপার্স ক্যাম্পের ১২টি আসনেই এগিয়ে ছিল কংগ্রেস সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী আবির বিশ্বাস। এবার একা লড়াই করে কংগ্রেস জিতেছে ১১টি ওয়ার্ডে। একটি ওয়ার্ডে জিতেছে তৃণমূল। একমাত্র এই পুরসভাতেই বামেরা একটি আসনেও জেতেনি।