Aryan Khan drug case: জামিনের আবেদন নাকচ, জেল হেফাজতে Shah Rukh পুত্র আরিয়ান খান
আরিয়ান ও আরবাজের পরিচিত অচিত কুমারের গ্রেফতারির পরই তদন্তে এসেছে নয়া মোড়, দাবি NCB-র।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বৃহস্পতিবার ফের আদালতে পেশ করা হয় আরিয়ান খানকে (Aryan Khan)। এদিন আদালতে এনসিবি দাবি করে আরিয়ানের কাছে থেকে বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য পেয়েছে তাঁরা, যা এই মাদক মামলায় নতুন মোড় এনেছে। ইতিমধ্যেই এনসিবি এই মামলায় গ্রেফতার করেছে ১৭ জনকে। আরিয়ানের থেকে পাওয়া তথ্য থেকেই সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে অচিত কুমারকে। এছাড়াও এনসিবির তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়, আগামী দিনে আরও কয়েকটি জায়গায় তল্লাসি অভিযান করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। সেখান থেকে যাঁদের গ্রেফতার করা হবে তাঁদের সঙ্গে আরিয়ানকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা জরুরি। এই কারণেই আরও চারদিন অর্থাৎ আগামী ১১ অক্টোবর অবধি আরিয়ানের হেফাজতের আবেদন করে এনসিবি (NCB)। কিন্তু এদিন আর এনসিবি হেফাজত নয়, আরিয়ানকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। তবে কোভিড রিপোর্ট না থাকার কারণে আগামিকাল অবধি NCB হেফাজতেই থাকবে আরিয়ান খান। আদালতের রায়ের পরে এদিনই অন্তবর্তী জামিনের আবেদন করেন আরিয়ানের আইনজীবী। আগামিকাল তাঁর অন্তবর্তী জামিনের শুনানি হবে বলে জানায় আদালত।
এদিন আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে (Satish Manshindhe) আদালতে বলেন, প্রথমদিনের পর থেকে আরিয়ানের থেকে আর কোনও তথ্য পায়নি এনসিবি। যদি অচিত কুমারের (Achit Kumar) সঙ্গে আরিয়ানের সম্পর্ক থাকে তাহলে কেন এ বিষয়ে তাঁকে কোনও প্রশ্ন করা হয়নি এখনও। ইতিমধ্যেই আাটক করা হয়েছে ঐ মাদক পার্টির আয়োজকদের। তাঁদের সঙ্গে আরিয়ানের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিল প্রতীক নামে আরিয়ানের এক বন্ধু। তাঁরা জানিয়েছে যে ঐ পার্টিতে উপস্থিত ছিল প্রায় ১৩০০ জন। তাঁদের মধ্যে থেকে আটক করা হয়েছে মাত্র ১৭ জনকে। সেখানে আরিয়ান শুধুমাত্র একজন অতিথি ছিলেন। পার্টির শোভা বাড়াতেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রতীকই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আরাবাজকে। শনিবার যখন এনসিবি(NCB) কর্তারা তল্লাশি চালায় তখন আরিয়ানের কাছে থেকে কোনও মাদকই পায়নি অফিসাররা। এমনকি আরিয়ান আগেই জানিয়েছেন আরবাজের সঙ্গে তিনি পার্টিতে যাননি, তবে আরিয়ান কখনও অস্বীকার করেননি যে আরবাজ তাঁর বন্ধু। অচিতের বিষয়ে যদি আরিয়ানকে জেরা করতে চায় এনসিবি, তাহলে জামিনের পরও যেকোনও সময় এনসিবি জেরা করতে পারে তাঁকে, এরজন্য কেন তাঁকে বারবার হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছেন সতীশ মানশিণ্ডে।
আরবাজের সঙ্গেই এই মামলায় নাম জড়িয়েছে অচিত কুমারের। আগে থেকেই এনসিবির নিশানায় ছিল সে। এদিন অচিতকেও আগামী চারদিনের হেফাজতে রাখার আবেদন জানায় এনসিবি। আদালতে এনসিবির কর্তারা জানান, অচিত গাঁজা নেটওয়ার্কের অন্যতম সদস্য। তাঁকে জেরা করে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। উল্টোদিকে অচিতের আইনজীবীর অভিযোগ, এনসিবির অফিসার মিথ্যে কথা বলছেন। অচিতের কাছ থেকে মাত্র ২.৬ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে। তাঁকে কবে আটক করা হয়েছে সে কথা আদালতকে জানাবার অনুরোধ করেন অচিতের আইনজীবী। এমনকি এনসিবি অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন অচিতের আইনজীবী। এদিন আদালতে তিনি বলেন, মাদক ক্রেতারা এই চক্রের শিকার, তাঁরা শিকড় নয়।
বুধবার রাতে মুম্বইয়ে আরিয়ান খান (Aryaan Khan) ও আরবাজ মার্চেন্টের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চার মাদক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে NCB। তাঁদের মধ্যেই একজন বিদেশি। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর পরিমাণে মেফেড্রন। সেই বিদেশি মাদাক পাচারকারীর গ্রেফতারির পরই জিজ্ঞাসাবাদের কারণে আরও বেশিদিন আরিয়ানকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় এনসিবি (NCB)। বুধবারই শোনা গিয়েছিল যে বৃহস্পতিবার মাদক কাণ্ডে জামিন পেতে পারেন আরিয়ান। কিন্তু বুধবার রাতে এই মামলায় নতুন মোড় আসার পরেই শোনা যায় নিজেদের সিদ্ধান্ত বদলেছে NCB। ইতিমধ্যেই ঐ বিদেশি মাদকপাচারকারীকে জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করেছে তাঁরা।
আরও পড়ুন: Priyanka Chopra: একটু উষ্ণতার জন্য! স্পেনের মাঝসমুদ্রে সুইম স্যুটে লাস্যময়ী প্রিয়াঙ্কা
গত সোমবার আদালতের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের কারণেই তিন অভিযুক্তকে ফের আগামী ১১ অক্টোবর অবধি হেফাজতে রাখার আবেদন জানিয়েছিল NCB। এদিন NCB-র তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে তদন্তের জন্যই আরিয়ান সহ তিনজনকে হেফাজতে রাখা জরুরি। আরিয়ান খানের ফোন থেকে তাঁর বিরুদ্ধে জোড়ালো প্রামাণ্য নথিও পাওয়া গেছে বলে আদালতে জানায় NCB। আরিয়ানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করে NCB।পাশাপাশি এদিন আরিয়ানের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে। তবে সেই আবেদন নস্যাৎ করে আগামী ৭ অক্টোবর অবধি আরিয়ানকে NCB হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিণ্ডে জানান যে এই পার্টিতে যাওয়ার টিকিটও ছিল না আরিয়ানের কাছে, তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এমনকি আরিয়ানের কাছে কোনও মাদকদ্রব্য ছিল না। তাই তাঁকে গ্রেফতার করাই ভুল, বলে দাবি করেন আইনজীবী।
জুতো থেকে শুরু করে চোখের লেন্সের বাক্স, এমনকি মেয়েদের অন্তর্বাসেও লুকানো ছিল মাদক। আরিয়ানের বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ১৩ গ্রাম কোকেন, ৫ গ্রাম এমডি, ২১ গ্রাম চরস, ও MDMA-র ২২ টি পিল এবং নগদ এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার টাকা। একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে।নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস (NDPS) ১৯৮৫ আইনের ৮সি, ২৭, ২২ নম্বর ধারা, এছাড়া MDMA ও এক্সট্যাসি আইনের অন্তর্গত ১৪(১), ১৪ (বি), ২০(বি) ধারায় মামলা করা হয়েছে আরিয়ানের বিরুদ্ধে।