ড্রিমগার্ল : বেচারা আয়ূষ্মান, আলুনি ছবির একমাত্র মশলা
অভিনয়ে- আয়ূষ্মান খুরানা, অন্নু কাপুর, মনজ্যোত সিং, রাজেশ শর্মা, বিজয় রাজ, অভিষেক ব্যানার্জি, নুসরত ভারুচা, নিধি বিস্ত, রাজ বনশালি। পরিচালনা-রাজ শান্ডিল্য।
অভিনয়ে- আয়ূষ্মান খুরানা, অন্নু কাপুর, মনজ্যোত সিং, রাজেশ শর্মা, বিজয় রাজ, অভিষেক ব্যানার্জি, নুসরত ভারুচা, নিধি বিস্ত, রাজ বনশালি।
পরিচালনা-রাজ শান্ডিল্য
শর্মিষ্টা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায় - বেশ কতকগুলো নতুন বিষয়, যার দিকে আমাদের চোখই প্রায় পড়ে না, তাই নিয়ে একটা ভাল উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল ছবি। কিন্তু ভাল ভাল আইডিয়াকে মেলে ধরার জন্য একটা চমত্কার চিত্রনাট্য লাগে। একাকীত্ব দূর করতে কলসেন্টারে কাজ করা সেইসব মহিলাদের কুর্নিশ, যাঁরা পরিচয় গোপন রেখেই ক্লায়েন্টের মন কিছুক্ষণের জন্য আনন্দে ভরিয়ে তুলতে পারেন। ছবিতে এমন একটা স্টোরিলাইনে প্রধান চরিত্র করম/পূজার ভূমিকায় আসেন আয়ূষ্মান খুরানা। অপূর্ব অভিনয় করেন। কিন্তু দুর্বল চিত্রনাট্যের কারণে যে ছবি কোথাও পৌঁছোয় না।
চাকরি নেই করমের। পাড়ার রামলীলায় সীতা আর কৃষ্ণলীলায় রাধার ভূমিকায় অভিনয় করেন করম (আয়ূষ্মান)। মেয়ের কণ্ঠস্বর চমত্কার নকল করতে পারেন, তাই পাড়ার লেটোয় বাড়তি টাকা রোজগারও হয়। কিন্তু তাতে তো মন ভরে না। এই দ্বৈত জীবন থেকে বেরোতে চেয়ে চাকরি খুঁজতে খুঁজতে কলসেন্টারে পৌঁছান করম। সেখানের মালিক করমের প্রতিভা চিনতে ভুল করেন না। কলসেন্টারের নাম আর ব্যবসা বাড়তে থাকে ‘সেক্সি ভয়েসে’ র পূজার জন্যই। আর পূজারূপী করমের পকেটও গরম হতেই থাকে। গল্পের স্টোরিলাইনে এরমধ্যেই এসে পড়েন বাকি চরিত্ররা। এক মাতাল পুলিস, এক নাবালক অবসেসড লাভারবয়, তিন তিনবার প্রেমে প্রত্যাখ্যাত এক মহিলা, করমের গার্লফ্রেন্ড মাহির দাদা মহিন্দর আর তার বাড়ির এক কাজের লোক যে চেহারায় বামন। এরা সকলেই পূজাকে ভালবাসে। ক্লাইম্যাক্সে এসে হাজির হল করমের বাবাও (অন্নু কাপুর)। আর এখানেই ছবির গল্প দমবন্ধ ফাঁসে জড়িয়ে পড়ে। কারণ, পরিচালককে ছবিটা ফ্যামিলি এন্টারটেনার বানাতেই হবে।তাই ‘ফোন সেক্স’ কেবল গোটা ছবিতে একটা শব্দ হয়েই থাকে। হাস্কি টোনের পূজা প্রত্যেক ক্লায়েন্টের বাড়ির সমস্যা সমাধানের কাজ
করতে থাকেন প্রায় একজন রেডিও জকির মতই। আর সিনেমাও ততক্ষণে আলুনি আর বিস্বাদ হয়ে গেছে।
বলিউডের এখন আরও একটা বড় সমস্যা অনসম্বল কাস্টে ক্লিশে চরিত্রদের নিয়ে আসা। ড্রিমগার্লেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। করমের বন্ধু স্মাইলি, তার বেস্ট ফ্রেন্ড ফরএভার, তার ছায়াসঙ্গী। পুলিস মানেই ক্যারিকেচারিশ মাতাল আর শায়রের যুগলবন্দি। রঙীন বাবা, যাঁর স্ত্রী মারা গেছেন (অন্নু কাপুর অপূর্ব অভিনয় করেছেন)। এক ফেমিনিস্ট মহিলা, যিনি তিনবার প্রেমে ধোঁকা খেয়ে পুরুষ-বিদ্বেষী। কেবল মহিন্দরের চরিত্রে অভিষেক ব্যানার্জি রফির গানে মন টেনেছেন। তবে সবকটি চরিত্রই সিনেমায় বহু ব্যবহারে জর্জিত। তাই আলাদা করে ছবিটি কোন মাত্রাতেই পৌঁছতে পারল না।
আয়ূষ্মান খুরানা এই ছবির প্রাণ। বলিউডের সব প্রথম সারির নায়কদের টেনশন বাড়ালেন তিনি। অফবিট চরিত্রকে কীভাবে তিনি ট্রেন্ড ভেঙে দর্শকদের সামনে এনেছেন, ড্রিমগার্ল তার একটা মাস্টারক্লাস হতে পারে। আয়ূষ্মান প্রমাণ করলেন, আসলে পুরুষ বা নারী নয়, এ পৃথিবী অর্ধনারীশ্বরদের।