Singer KK Dies: কেকে-র মৃত্যুর দায় কার? জবাবে কী বললেন বাবুল সুপ্রিয়?
'চিরকালই বাংলা এবং বাংলার বাইরে ভিড়, বিশৃঙ্খলা সব কিছু থাকে। শো চিরকালই ওয়ারক্রাউডেড থাকে। ছোটবেলায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কিশোর কুমারের শো দেখতে যেতাম। সেখানেও রীতিমতো বিশৃঙ্খলা তৈরি হত।'
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার রাতে সঙ্গীত শিল্পী কেকে-র(KK) প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা সঙ্গীত জগত। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিন্তু এরই মাঝে প্রশ্ন উঠছে এই অকালপ্রয়াণের দায় কার? নজরুল মঞ্চের ভিড়, এসি না চলা উঠে আসছে নানা তথ্য। এই প্রসঙ্গে জি ২৪ ঘণ্টার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়র(Babul Supriyo) সঙ্গে।নজরুল মঞ্চ কি কেকের পরিণতির জন্য দায়ী?কি বললেন শিল্পী?
জি ২৪ ঘণ্টার এডিটর গৌতম ভট্টাচার্যকে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, 'ফেসবুকে নানা ধরনের কথা লেখা হচ্ছে, ছবিও আসছে। আমরা একসঙ্গেই শুরু করেছিলাম, ওর বয়স ৫৩,আমার ৫১। শানুদা, উদিতজি, অভিজিৎদার পরের জেনারেশন হিসাবে আমরা শুরু করি। তখন যখন লাইভ শো শুরু করেছিলাম তখন এসি হল কোথায় ছিল? চিরকালই বাংলা এবং বাংলার বাইরে ভিড়, বিশৃঙ্খলা সব কিছু থাকে। শো চিরকালই ওয়ারক্রাউডেড থাকে। ছোটবেলায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কিশোর কুমারের শো দেখতে যেতাম। সেখানেও রীতিমতো বিশৃঙ্খলা তৈরি হত। মানুষ নিজেরাও জানে ২০০০-এর বেশি লোক ঢুকতে পারবে না। তাও ৬০০০ লোক ঢোকার চেষ্টা করে। তখন শিল্পীকে কিছুটা কনসাস হতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, স্টেজের উপরে যে লাইটগুলো লাগানো থাকে তা থেকে খুবই গরম হয়। তাই অনেক সময় এসি চললেও তা গায়ে লাগে না। ডাঃ কুণাল সরকার যে গোল্ডেন আওয়ারের কথা বলেছেন সেটাই ফ্যাক্টর। অর্থাৎ এক ঘণ্টার মধ্যে নিয়ে যাওয়া হলে অনেকটাই চিকিৎসা করা যায়। ওকে স্টেজে খুবই অস্থির দেখাচ্ছিল। কিন্তু ও খুবই প্রফেশনাল ও ডিসিপ্লিনড তাই পারফর্ম করে গেছে। বুঝতে পারেনি যে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে।'
বাবুলের কথা অনুযায়ী, শিল্পীর উচিত দেখে নেওয়া। কিন্তু তিনি তো মুম্বইয়ে থাকেন। একজন এতো বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, তিনি কী করে শোয়ের ছঘন্টা আগে এসে লাইট খোলার কথা বলতে পারেন বা নির্দেশ দিতে পারেন? এটা কী বাস্তবচিত?উত্তরে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, 'এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু আমরা প্রতিবার এই আলোতেই পারফর্ম করি। একজন আর্টিস্ট তাঁর অ্যাড্রিনালিন রাশ থেকে পারফর্ম করে যায় তখন তাঁর বুকে ব্যথা করছে কিনা, শরীর খারাপ লাগছে কিনা সে পাত্তা দেয় না। শিল্পীরাই এগুলো এড়িয়ে যাই। এক ঘণ্টা দেড় ঘণ্টা পারফর্ম করতে করতে, গ্রামে গঞ্জে কত জায়গায় এসি থাকে না, হাঁটু অবধি জিনস ভিজে যায়। এরকম যে থাকা উচিত তা আমি বলছি না। কিন্তু থাকে। আমার মনে হয় এর পরে যদি ওকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হত তাহলে হয়তো বাঁচানো যেত। তবে নজরুল মঞ্চে যে ভিড়টা হয়েছিল তা নিশ্চয়ই সামলানো উচিত ছিল। লাইটটা দেখা উচিত ছিল উদ্যোক্তাদের।'
বাবুল আরও বলেন, 'এটা শিক্ষণীয় হয়ে রইল। আমরা শুরু করেছিলাম ২৫ বছর বয়সে আর এখন আমাদের ৫০-এর বেশি বয়স। এখনও আমরা সেই একইরকম দেড় ঘণ্টা গাই। এই নতুন লাইট, বিশৃঙ্খলা, ভিড়, এসি না থাকা শিল্পীদের সতর্ক হতে হবে। এটা শিল্পীদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়। এটা দুঃখের যে কেকে-র মতো একজন বিশালমাপের শিল্পীর মৃত্যুর মাধ্যমে আমরা এই শিক্ষা পেলাম।'