Jeetu Kamal On Silajit Majumder: 'কেউ করিয়ে নিতে পারবে না, যেটা মনে করবেন সেটাই করবেন'! জীতুর কাছে শিলাজিৎ উদাহরণ

Jeetu Kamal On Silajit Majumder: বাংলা সিনেমায় আরও এক গোয়েন্দা! কেস সলভ করতে ময়দানে জীতু কমল। 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ' দেখবে জীতু-শিলাজিতের নতুন কেমিস্ট্রি।  

Updated By: Jun 19, 2024, 10:04 PM IST
Jeetu Kamal On Silajit Majumder: 'কেউ করিয়ে নিতে পারবে না, যেটা মনে করবেন সেটাই করবেন'! জীতুর কাছে শিলাজিৎ উদাহরণ
শিলাজিতে মোহিত জীতু

শুভপম সাহা: ঋতুপর্ণ ঘোষের 'অসুখ' ও শেখর দাসের 'ক্রান্তিকাল' চিনিয়েছিল অভিনেতা শিলাজিৎ মজুমদারকে। দেখতে দেখতে ছাব্বিশ-সাতাশটি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করা হয়ে গিয়েছে শিলাজিতের। সম্প্রতি কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সিনেমা 'অযোগ্য়'তে রক্তিমের চরিত্রে শিলাজিতের অভিনয় ভূয়সী প্রশংসিত। তবুও অভিনেতা শিলাজিত আজও আলোচনার 'অন্তরালে'। তাঁর সঙ্গে 'আন্ডাররেটেড' তকমা জুড়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। শিলাজিৎকে এবার দেখা যাবে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'-এ! 

জনপ্রিয় ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে'র নির্দেশিত প্রথম ছবিতে শিলাজিতের শালা হয়েছেন জীতু কমল। মঙ্গলবার দুপুরে সার্দান অ্যাভিনিউয়ের এএম মেডিক্যাল সেন্টারে এসেছিলেন 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ' টিমের স্টাররা। দুলালের সঙ্গে এসেছিলেন জীতু, সুহোত্র মুখোপাধ্য়ায় ও রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। বাঙালিদের চরিত্রে কম-বেশি একটি গোয়েন্দা লুকিয়েই থাকে। তাই বাঙালি গোগ্রাসে গোয়েন্দা গল্প পড়ে, পর্দায় হইহই করে গোয়েন্দাগিরিও দেখতে যায়।

দুলালও তাই গোয়েন্দা-টোপেই বঁড়শিতে দর্শকদের গাঁথতে মরিয়া। ব্যোমকেশ, ফেলুদা, কিরীটি, সোনাদা, একেনবাবুদের দুর্দান্ত লিগে দুলালের বাজি গোয়েন্দা 'অরণ্য চট্টোপাধ্যায়'। আর এই চরিত্রে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ের করার কথা থাকলেও, ব্য়স্ততার কারণে তিনি সরে যান। কোচ দুলাল ক্য়াপ্টেন হিসেবে বেছে নেন জীতুকে। 

আরও পড়ুন:'হঠাৎ দু-তিন জন আমার...'! দিল্লি মেট্রোয় ভংয়কর অভিজ্ঞতা, ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী...

'সত্য়জিৎ রায়' থেকে এবার 'অরণ্য চট্টোপাধ্যায়'! জীতুকে এখানে 'অ্যাকসিডেন্টাল ডিটেকটটিভ' বললে খুব একটা ভুল হবে না। কারণ চিত্রনাট্য়ের চাহিদায় তিনি আচমকাই গোয়েন্দা হয়ে ওঠেন। আদতে অরণ্য়র ডাক্তারি পড়া আর ক্রিকেটই ধ্যানজ্ঞান। জামাইবাবু সুদর্শন ওরফে শিলাজিতের পাল্লায় পড়েই গোয়েন্দা হয়ে ওঠা। 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'-এ জিৎ (পড়ুন শিলাজিৎ) ও জীতুর মধ্য়ে জামাইবাবু-শালার কেমিস্ট্রি কত'টা জমে, সেটা সময় বলবে, তবে বাস্তবে কিন্তু শিলাজিৎ এবং জীতুর দুরন্ত কেমিস্ট্রি। শিলাজিতের নাম শুনেই জীতুর চোখে আলাদাই খুশির ঝলক দেখা গেল। 

জীতুর কাছে প্রশ্ন ছিল, গায়ক ও অভিনেতা শিলাজিৎকে তিনি কত নম্বর দেবেন? যা শুনে জীতু বলেন, 'দেখুন মানুষটির নাম শিলাজিৎ মজুমদার। তাঁকে নম্বর দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমাকে বললে তো, আমি ১০-এ ১০০ দিয়ে দেব। কেন জানেন, আমি শিলাজিতের অ্য়ান্টেনায় রাত দেড়টা-দু'টোর সময়ে যেতে পারি। থাকতে পারি আমার সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক। হৃদয়ের মানুষ, পছন্দের মানুষ শিলাজিৎ। আমি নচিকেতা-অঞ্জনেরও কিন্তু বিরাট ভক্ত।'

 

জীতুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, অভিনেতা শিলাজিৎ কি কোথাও আন্ডাররেটেড? জীতু বলেন, 'অভিনেতা শিলাজিতের কথা আর কী বলব, অভিনয়টাই তো করতে চান না। খালি বলবেন, আমি গান আর নৌকা নিয়ে ভালো আছি। অভিনেতা শিলাজিৎ অবশ্য়ই আন্ডাররেটেড। তবে শিলাজিৎ যেটা মনে করবেন, সেটাই করবেন। কেউ তাঁকে দিয়ে কিছু করিয়ে নিতে পারবে না। এই সিনেমার পর শিলাজিৎ আরও অনেক প্রস্তাব পাবেন। যদিও তিনি প্রচুর অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েই থাকেন। এই স্বাধীনচেতা শিলাজিৎ আমাকে টানে, আমার কাছে সে উদাহরণ।' ইতিমধ্য়েই জীতুর দু'বার 'অযোগ্য়' দেখা হয়ে গিয়েছে। পর্দার রক্তিমেই শুধু মোহিত নন জীতু। তাঁর সংযোজন, 'শিলাজিৎ তো কখনও চর্চিত হতে চাননি। তাঁর সব টাকা পয়সা সে অনায়াসে নৌকাতে দিয়ে দেন। ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর সারাবছর দেখভাল করেন। তাঁর অনেক কিছু নিয়েই চর্চা হয়। তবে এগুলো নিয়ে সেরকম চর্চা হয় না। এগুলো নিয়ে কথা হোক।'

পরিচালক দুলালকে কেমন দেখলেন জীতু? অভিনেতা বলছেন, 'সত্য়ি বলতে প্রথম সংশয় হয়েছিল। তবে ওই যে ক্রিকেটে আই-সেট হতে সময় লাগে। সেটা এখানেও হয়েছে। তবে ভীষণ ডেডিকেটেড দুলালদা, দীর্ঘদিন খবরের কাগজে লেখালেখি করছেন বলে, লেখার হাতটা বেশ ভালো। স্ক্রিপটা ভালো লিখেছেন। সময় ধরে কাজ করেন। এটা একেবারে আমার মতো। আমিও তো পরিচালক হতেই এসেছিলাম। বলতে পারেন পরিচালক হতেও চাই আমি। দুলালদা'র এই সিনেমায় আপনি কোনও তামঝাম দেখবেন না। দারুণ একটা সতেজতা আছে। সহজ-সরল ভাবে গল্প বলে গিয়েছে।

জীতুকে অনেকেই ফেলুদা হিসেবে দেখতে চান! সোশ্য়াল মিডিয়ায় চোখ রাখলে তা বোঝা যায়। জীতুর মতে হালের 'একাধিক ফেলুদা ও ব্য়োমকেশ'-এ দর্শক বিব্রত নয় বরং বিভ্রান্ত। জীতু বলছেন, 'দেখুন আমি কখনই নিজেকে একদিকে ফেলুদা ও অন্য়দিকে ব্য়োমকেশের চরিত্রে দেখতেই চাইব না। একই মাল্টিপ্লেক্সে ভিন্ন শোয়ে আমিই ফেলুদা আবার আমিই ব্য়োমকেশ, এটা মানতে পারব না। তবে ফেলুদা হওয়ার ইচ্ছা আমারও রয়েছে। কিন্তু আমি একটি চরিত্র ফোকাস করেই এগোতে ভালোবাসি। আমাকে ভাবতে হবে যে, পরিচালকরা কী আমাকে ফেলুদা হিসেবে দেখছেন? সেটাই সব। জানেন কেউ কোনওদিন আমাকে ভেবে চরিত্র বানাননি। আমার কাছে চিত্রনাট্য় ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।'

জীতু-সুহোত্র-মিথিলার কাছে প্রশ্ন ছিল, যে কোন টানে দর্শক হলমুখী হবেন 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ' দেখতে? জীতু বলছেন, 'আমরা তো গোয়েন্দা গল্প হলে দেখতেই যাই, এটা জেনে যে, সে প্রথম থেকেই একজন গোয়েন্দা। এখানে গোয়েন্দা হয়ে ওঠার গল্প। একজন হবু ক্রিকেটার ও ডাক্তারের। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের পার্থক্য়টাও এই ছবিতে দারুণ ভাবে দেখানো হয়েছে।' গোয়েন্দা গল্প হোক বা থ্রিলার, হতে পারে সাদামাটা প্রেমের গল্প। সবেতেই সাবলীল অভিনয় করেন সুহোত্র। তিনি বলছেন, 'দেখুন আমি ডাক্তার অমিতের চরিত্র রয়েছি। চরিত্রটি বেশ ভালো লেগেছে আমার। প্রথমে যদিও অন্য় অভিনয় করার কথা ছিল। তবে দুলালদা'র কম দিনের নোটিশেই আমি রাজি হয়ে যাই। দুলালদা প্রচুর খেটেছেন। রিস্ক নিয়েছেন। বাঙালি তো বরাবর গোয়েন্দাদের ভালোবেসেছে। আমি বলব নতুন এই গোয়েন্দাও মানুষের মন জয় করে নেবে।' সৃজিতঘরণী মিথিলা এই বাংলায় হাতে গোনাই কয়েক'টি ছবি করেছেন। দর্শকরা তাঁকে স্ক্রিনে দেখতে পছন্দ করেন। আবার মিথিলাকে দেখার সুযোগ। তিনি বলছেন, 'দুলালদা অনেক আগেই আমাকে ছবির কথা বলেছিলেন। আমার বেশ লেগেছে কাজ করে। আমরা তো ফেলুদা, ব্য়োমকেশ দেখেছি। নতুন গোয়েন্দাকেও আমাদের বেশ মনে ধরবে। অরণ্য বাকিদের থেকে কতটা আলাদা, সেটা সিনেমাতেই বুঝতে পারবেন। আমি পুরো সিনেমা জুড়েই আছি। আমার চরিত্রের অনেকগুলি স্তর রয়েছে।' 

 

'ক্য়াপ্টেন অফ দ্য় শিপ' দুলাল তৈরি অরণ্যর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে। বাইলাইনের জীবনে এখন টাইটল কার্ডের হাওয়া লেগেছে। দুলাল বলছেন, 'আমি ঠিকই করেছিলাম যে, প্রথম সিনেমা কিছুতেই স্পোর্টস নিয়ে বানাবো না। নাহলে সবাই বলবে, ও তো স্পোর্টসের লোক, তাই স্পোর্টস নিয়েই গল্প বলছে। পরিকল্পিত ভাবেই অন্য জঁর গল্প বলতেই চেয়েছিলাম। বাঙালি বরাবর গোয়েন্দাদের ভালোবেসেছে। অরণ্য়কেও নিশ্চিত ভাবে ভালোবাসবে। বানাতে হয়তো তিনটি বছর লেগে গেল। তবে মানুষের এখনই ট্রেলার ভালোলেগেছে। তবে ট্রেলারে যা নেই, তা সিনেমায় আছে। বলতে পারি যে, বিরাটে চমকের অপেক্ষায় রয়েছেন দর্শকরা। শুধু গোয়েন্দা গল্পেই নয়, দর্শক দুলালকে আগামী দিনে জীবনের সবরকম গল্পই বলতে দেখবে।' ৫ জুলাই দুলালের অরণ্য় আসছে। বাকিটা নাহয় সময়ই বলুক।

আরও পড়ুন: বিরল স্নায়ু রোগের খপ্পরে গায়িকা অলকা ইয়াগনিক! কিছুই শুনতে পারছেন না

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.