ছুরি-কাঁচি ছাড়াই পুরুষের নির্বীজকরণ সম্ভব, এক ইনজেকশনেই মিলবে সমাধান!
বড়সড় সাফল্য ভারতীয় বিজ্ঞানীদের! পুরুষের জন্য বিশ্বের প্রথম নির্বীজকরণ ইনজেকশন আবিস্কারের কৃতিত্বের দাবিদার হবেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অসাবধানে বা অপরিকল্পিত ভাবে যৌন সঙ্গম হয়ে যেতেই পারে। এই পরিস্থিতিতে গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়াতে অধিকাংশ মহিলাই বার্থ কন্ট্রোল পিল বা জন্মনিয়ন্ত্রক অষুধের দ্বারস্থ হন। কিন্তু বাজারে উপলব্ধ গর্ভনিরোধক ওষুধ খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার একটা ভয় বা ঝুঁকি কিন্তু থেকেই যায়। তার জন্য বিকল্প হিসাবে পুরুষের নির্বীজকরণের চল রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। সমাজের মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিও পুরুষের নির্বীজকরণ বা ভ্যাসেকটমি সম্পর্কে অবগত। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকেই কাটা-ছেঁড়া, ছুরি-কাঁচির ভয়ে নির্বীজকরণ বা ভ্যাসেকটমি করাতে চান না।
এ বার সেই ভয় কাটিয়ে নতুন সমাধান সূত্রের সন্ধান দিলেন ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’-এর (আইসিএমআর) গবেষকরা। তাঁদের দাবি, এক ইনজেকশনেই পুরুষের নির্বীজকরণ সম্ভব। দীর্ঘ গবেষণার পর এমনই এক ইনজেকশন তৈরি করেছেন তাঁরা যার প্রয়োগে অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি ছাড়াই পুরুষের নির্বীজকরণ সম্ভব।
আইসিএমআর-এর এক গবেষক জানান, মোট তিন ধাপে ৩০৩ জন পুরুষের উপর এই ইনজেকশন প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে ৯৭.৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই সাফল্য মিলেছে। জানা গিয়েছে, ১৯৭০ সালে আইআইটি-র অধ্যাপক এস কে গুহ একটি পলিমারের সন্ধান দেন। ১৯৮৪ সাল থেকে সেই পলিমার নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছেন আইসিএমআর-এর গবেষকরা।
আইসিএমআর-এর গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই ইনজেকশনের প্রয়োগ অস্ত্রোপচারের তুলনায় অনেক সহজ ও কম কষ্টকর। শুক্রাণু নির্গমনকে বাধা দেবে এই ইনজেকশন। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া করেই এই পলিমারটি অন্ডোকোষের (টেস্টিক্যালস) কাছে শুক্রাণু বহনকারী টিউবে প্রয়োগ করা হবে। এক বার ইনজেকশন দিলে প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত শুক্রাণু নির্গমনকে বাধা দেবে এই ইনজেকশন।
আরও পড়ুন: এই রোগে মদ না খেলেও রক্তে মিলবে অ্যালকোহল, মুখ থেকেও বেরোবে কড়া গন্ধ!
শুরু থেকেই এই ইনজেকশনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। কারণ, ভারতের আগে ২০১৬ সালে আমেরিকা এই গবেষণায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে মার্কিন বিজ্ঞানীরা ওই ইনজেকশন তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এ ক্ষেত্রে মার্কিন বিজ্ঞানীদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে রয়েছেন। এখন শুধুমাত্র ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র শিলমোহরের অপেক্ষায় রয়েছে এই ইনজেকশন। অর্থাত যুগান্তকারী আবিস্কারের থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে রয়েছেন আইসিএমআর-এর গবেষকরা। ডিসিজিআই-এর সবুজ সংকেত পেলেই পুরুষের জন্য বিশ্বের প্রথম নির্বীজকরণ ইনজেকশন আবিস্কারের কৃতিত্বের দাবিদার হবেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা।