দাঁতের চিকিত্সায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা

দাঁতের চিকিত্সার ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে একগুচ্ছ পরামর্শ ও নির্দেশবিধি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর।

Edited By: সুদীপ দে | Updated By: Jun 1, 2020, 10:17 PM IST
দাঁতের চিকিত্সায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা

নিজস্ব প্রতিবেদন: কিছুদিন আগেই করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’-এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। ইতিমধ্যেই ভারতে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বিগত পাঁচ দিনে বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় মোট আক্রান্তের নিরিখে ১১ থেকে ৭ নম্বরে উঠে এসেছে ভারতের নাম। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে আক্রান্ত ৮,৩৮০। এই পরিস্থিতিতে দাঁতের চিকিত্সার ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে একগুচ্ছ পরামর্শ ও নির্দেশবিধি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর।

দাঁতের চিকিৎসা করতে গিয়েও নিজেদের অজান্তেই হয়তো কোনও রোগীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমিত হতে পারে চিকিৎসকের শরীরে। এক রোগীর থেকেও ওপিডি-তে অপেক্ষারত অন্য রোগীর শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস। তাই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে একগুচ্ছ নির্দেশবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের তরফে। মারাত্মক দাঁতের যন্ত্রণা, মাড়ি থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণের মতো গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত দাঁতের চিকিৎসা করানো জরুরি হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে নির্দেশিকায় উল্লেখিত বিষয়গুলি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আসুন এক নজরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের নির্দেশিকায় উল্লেখিত পরামর্শগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...

১) ওপিডির প্রবেশদ্বারেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে, কোনও রোগীর মধ্যে যদি ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ থাকে তাহলে ওই রোগীকে অন্য কোনও দিন আসতে বলে দিতে হবে।

২) দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের দেখার আগে তাঁরে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। রিসেপশনে রোগীদের সঙ্গে দূরত্ব পালনের জন্য কাচ বা স্বচ্ছ ফাইবারের গার্ড বসাতে হবে।

৩) ওপিডি-তে উপস্থিত সকলকেই মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে জোর দিতে হবে। দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের চুল বেঁধে রাখার নির্দেশ দিতে হবে। কানের দুল, আংটি ব্যবহার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিতে হবে।

৪) সামাজিক দূরত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে ‘টোকেন’ ব্যবস্থাকে কাজে লাগাতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের ই-প্রেসক্রিপশন দেওয়াটাই নিরাপদ। রোগীদের অপেক্ষা করার জায়গা, বাথরুম, টয়লেট— সব কিছুই জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৫) হাত, মুখ ধোয়ার জন্য বেসিন ব্যবহার করতে হবে। দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা সমস্ত রোগীদের ঠিকানা, মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করে রাখতে হবে। ওই রোগী কোন এলাকা থেকে কী ভাবে চিকিৎসা করাতে এসেছেন, তা বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া জরুরি।

৬) যদি দাঁতের সমস্যা নিয়ে আসা কোনও রোগীর মধ্যে করোনার কোনও উপসর্গ চোখে পড়ে সে ক্ষেত্রে তাঁকে নির্দিষ্ট চিকিৎসার পর চিকিৎসকের ছাড়পত্র মেলার পর তবেই আবার আসতে বলতে হবে।

৭) যদি রোগীর অ্যারোসোল ভিত্তিক চিকিত্সার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁর চিকিত্সার বিস্তারিত ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

৮) দাঁতের চিকিৎসা শুরুর আগে রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। তোয়ালের বদলে ডিসপোজেবল গ্লাস, মাথার ক্যাপ এবং ডিসপোসলে টিস্যু ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে এই নির্দেশিকায়।

.