শ্বাসকষ্ট কমাতে করোনা রোগীকে উপুর করে শোয়ানোর পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের!
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল’-এ বলা হয়েছে, করোনা রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়লেই তাঁকে আগে ‘প্রন পজিশন’-এ রেখে অক্সিজেন দিতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা আক্রান্তদের সরাসরি সিসিইউ-তে না পাঠিয়ে তাঁদের শ্বাসকষ্ট লাঘবের জন্য 'অ্যাওয়েক প্রন পজিশন'-এর পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ‘ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল’-এ বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা কমাতে তাঁকে সরাসরি সিসিইউ-তে না পাঠিয়ে ‘অ্যাওয়েক প্রন পজিশন’-এ রেখে বা উপুর করে শুইয়ে রেখে অক্সিজেন দিতে হবে। এতে রোগীর ফুসফুসের চাপ কমিয়ে শরীরে তুলনামূলক বেশি পরিমাণ অক্সিজেন পাঠানো সম্ভব হবে। যদি ‘প্রন পজিশন’-এও রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁকে ‘প্রন পজিশন’-এ রেখে অক্সিজেন দিতে হবে।
ফুসফুসে সংক্রমণের ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। শরীর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণের কাজটাও সঠিক ভাবে হয় না। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি ক্রমশ দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যই রোগীকে উপুর করে শোয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। শ্বাসকষ্টের উপশমের জন্য ৭ বছর আগেই এই উপায় বাতলেছিলেন একদল ফরাসি গবেষক। কী ভাবে এই ভঙ্গিতে শোবার ফলে শ্বাসকষ্ট লাঘব হবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক এর বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা...
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (চেস্ট স্পেশালিস্ট) ডঃ অনির্বাণ সরকার বলেন, “ফুসফুসের পেশীগুলির উপর চাপ কমিয়ে ফুসফুসকে অধিক ক্রিয়াশীল করতে প্রন পজিশন অত্যন্ত কার্যকরী!” ডঃ সরকার জানান, ফুসফুসের বেশির ভাগ অংশই থাকে আমাদের পঠের দিকে। প্রন পজিশনে বা উপির হয়ে শুলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফুসফুস সর্বাধিক প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে ভেন্টিলেটরের সাহায্য ছাড়াই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা হুড়মুড়িয়ে বাড়তে থাকে। শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমে যায়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসায় প্রয়োগ শুরু হল এ পর্যন্ত ‘সবচেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকর’ করোনা-রোধী ওষুধের!
ডঃ সরকার জানান, শুধু করোনা রোগীর শ্বাসকষ্টেই নয়, যাঁদের হাঁপানির সমস্যা বা শ্বাস-প্রশ্বাসের (Chronic Obstructive Pulmonary Disease) সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই প্রন পজিশন অত্যন্ত কার্যকরী! তবে রোগী যদি উঠে বসতে পারেন, সে ক্ষেত্রে চিৎ হয়ে শোবার চেয়ে বসে থাকলেও উপকার মেলে।