নেটচর্চা থেকে জনতার গর্জন- বাম ব্রিগেডের মধ্যমণি 'ভাইজান'ই

একুশের ভোটের আগে বাম ব্রিগেডের 'মধ্যমণি' তিনিই।

Updated By: Feb 28, 2021, 09:38 PM IST
নেটচর্চা থেকে জনতার গর্জন- বাম ব্রিগেডের মধ্যমণি 'ভাইজান'ই

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভিনি, ভিডি, ভিসি- এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। বাম ব্রিগেডের মঞ্চে এটাই করলেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা তথা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নেতা আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)। বুঝিয়ে দিলেন, আগামী নির্বাচনে 'খেলা' ওলটপালট করে দিতে সক্ষম আইএসএফ।      

নয়ের দশকে মমতার (Mamata Banerjee) ডাকে ব্রিগেড দেখেছিল শহর। সেদিন তৎকালীন যুব নেত্রীর ব্রিগেডে উপচে পড়েছিল ভিড়। গড়ে দিয়েছিল জননেত্রী হওয়ার সোপান। সেই ব্রিগেডই সাক্ষী থাকল আর এক তরুণের রাজনীতির মঞ্চে আবির্ভাবের। ফেজ টুপি পরিহিত 'ভাইজান' মঞ্চে ওঠামাত্রই শুরু হল জনতার 'গর্জন'। ভাষণ কার্যত থামিয়ে দিতে বাধ্য হলেন অধীর। তরুণ নেতার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করলেন সিপিএম নেতারা। তার ফাঁকেই ধরা পড়ল জোটের ফাটল। 'ওই-ই বলুক' বলে পোডিয়াম ছাড়তে চাইলেন অধীর। তাঁকে বিরত করলেন বিমান বসু ও মহম্মদ সেলিম।

অধীরের পর বক্তা হিসেবে আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddiqui) নাম ঘোষণা করলেন ঘোষক বাদশা মৈত্র। ফের শুরু হল জনতার গর্জন। এবার রীতিমতো শব্দব্রহ্ম। সূর্যকান্ত মিশ্র বা অধীর চৌধুরীর বেলায় তা হয়নি। আইএসএফ নেতা ডাক দিলেন,'বিজেপি সরকার ও বিজেপির বি টিম মমতাকে বাংলাকে উৎখাত করে ফেলব। চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, একুশে মমতাকে জিরো করে দেখিয়ে দেব।'

বাম শরিকদের সঙ্গে রফা করে ফেলেছেন সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)। ৩০টি আসন তাঁকে ছাড়ছে বামেরা। তবে গোঁ ধরে রয়েছে কংগ্রেস। দক্ষ রাজনীতিকের মতোই মঞ্চ থেকে বার্তা দিয়েছেন আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)। বলেছেন, 'মানুষের মনোভাব বুঝতে পেরে মানুষের স্বার্থে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন বাম শরিকরা।  আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন তাঁরা। আগামী নির্বাচনে যেখানে যেখানে শরিক দল প্রার্থী দেবে, জেতাতে হবে।' কংগ্রেসের কেন নাম নেননি, সেটাও স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন,'বাম শরিকদের ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। অথচ কংগ্রেস নয় কেন? জানিয়ে দিই, ভাগীদারি করতে এসেছি, তোষণ করতে আসিনি। ভাগীদারি চাই।' আবার এটাও কৌশলে এটাও বুঝিয়ে দিলেন, এক সপ্তাহ আগে জানলে দ্বিগুণ লোক আনতেন।   

আরও পড়ুন- আগামিকাল প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ TMC-র, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়ানোর কৌশল?

রাজনীতির কারবারিরা বলছেন,অধীর চৌধুরী, বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্রদের মতো প্রাজ্ঞ বক্তাদের মাঝে আব্বাস সিদ্দিকি যেন যৌবনের ঝোড়ো হাওয়া। স্বাভাবিকভাবে তৃণমূল ও বিজেপির শিবির থেকে আক্রমণও ধেয়ে এসেছে। ফিরহাদ হাকিমের কটাক্ষ,'বাম-কংগ্রেস একে অপরের ভরসায় ছিল। এবার ক্রাচ জোগাড় করল।' বাংলায় সাম্প্রদায়িক শক্তির বীজ বপন করছে বামেরা, অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। সিপিএমের অন্দরেও অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, ফুরফুরা শরিফের পীরজাদার সঙ্গে জোট কতটা বাম-নীতির সঙ্গে সাযুজ্য রাখতে পারল? নেটিজেনরাও কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। আব্বাস সিদ্দিকির ভাইরাল বক্তব্য থেকে চে-র আদলে মিম, ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে এটা অনস্বীকার্য, 'ভাইজান' বেশ জাঁকিয়েই বসলেন রাজ্য রাজনীতিতে। একুশের ভোটের আগে বাম ব্রিগেডের 'মধ্যমণি' তিনিই।

আরও পড়ুন- 'ভাইজান'কে মঞ্চে দেখেই থামলেন Adhir, বুঝিয়ে রাজি করালেন Biman-Salim

.