মাকে খুনের পর তালিকায় ছিল বাবাও! বেহালায় বৃদ্ধা খুনে ধৃত মেয়ে-জামাইয়ের আরও কীর্তি ফাঁস
শুধু মা নয়। বাবাকেও খুনের পরিকল্পনা ছিল পর্ণশ্রী বকুলতলা বৃদ্ধা খুনে ধৃত মেয়ে-জামাইয়ের। মা ও বাবাকে দীর্ঘদিন ধরে স্লো-পয়জনিং করছিল মেয়ে। বাবাকেও নিয়মিত খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে ক্রমাগত ডোজ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল কড়া ঘুমের ওষুধের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শুধু মা নয়। বাবাকেও খুনের পরিকল্পনা ছিল পর্ণশ্রী বকুলতলা বৃদ্ধা খুনে ধৃত মেয়ে-জামাইয়ের। মা ও বাবাকে দীর্ঘদিন ধরে স্লো-পয়জনিং করছিল মেয়ে। বাবাকেও নিয়মিত খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে ক্রমাগত ডোজ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল কড়া ঘুমের ওষুধের। বাবা নিয়মিত মদ্যপান করতেন, তাই তাঁর ওপর সেই ওষুধ কাজ করেনি। মা ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মেয়ে-জামাই ভেবেছিল, এইভাবেই কার্যসিদ্ধি হবে। মায়ের মৃত্যুর অপেক্ষা করছিল মেয়ে। কিন্তু তা হচ্ছিল না। তাই খুনের পরিকল্পনা। পর্ণশ্রীতে বৃদ্ধা খুনে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জেরায় যত তথ্য উঠে আসছে, ততই চমকে উঠছেন পুলিস কর্তারাও। এই খুনে ধৃত মেয়ে রিয়া মণ্ডলের অতীতে কোনও ক্রাইম রেকর্ড নেই। কিন্তু তার আচরণ পুরো পেশাদার খুনির মতো! যেভাবে স্বামী জয়ের সঙ্গে রীতিমতো প্ল্যান করে বাবা-মাকে খুনে ছক কষেছিল সে, তা অবাক করছে দুঁদে পুলিস কর্তাদেরও।
জানা গিয়েছে, মাকে খুনের পর দেহ পর্ণশ্রী ফ্লাইং ক্লাব বা মাঝেরহাট রেল লাইনের পাশে ফেলে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিবেশীরা দেখে ফেলায় জয় তা ফেলেই পালিয়ে যায়।
রিয়ার কীর্তি শুনে হতবাক প্রতিবেশীরাও। কারণ দিনে সকলের সামনে ‘মা’ বলতে অজ্ঞান ছিল রিয়া। নিয়মিত তাঁর সেবা যত্ন করা, স্নান করিয়ে দেওয়া, খাইয়ে দেওয়া, বিছানা পেতে শুইয়ে দেওয়া-সবই করত এক্কেবারে পরিপাটি করে। কিন্তু রাতেই স্বামীর সঙ্গে বসে চলত মা-বাবাকে খুনের ছক। কীভাবে আর কোন সহজ উপায়ে বাবা-মাকে সরিয়ে দেওয়া যায় দুনিয়া থেকে-মধ্যরাত পর্যন্ত চলত রিয়া-জয়ের আলোচনা। এই ঘটনায় আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে বেহালার বকুলতলায় চাদর জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার হয় শম্পা চক্রবর্তী নামে এই প্রৌঢ়ার দেহ। প্রতিবেশীদের অভিযোগের ভিত্তিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ ওঠে, মেয়ে রিমা ও জামাই জয় মণ্ডলই খুন করেছে শম্পাকে।
রিয়ার এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, রবিবার ভোর ৩টে নাগাদ তিনি ও তাঁর স্বামী জোরে কিছু পড়ার আওয়াজ পান। আওয়াজ শুনেই ফ্ল্যাটের বারান্দায় বেরিয়ে আসেন তাঁরা। বাইরে বেরিয়ে আসতেই তাঁদের চোখে পড়ে ওই মহিলার মেয়ে-জামাইকে। তাঁরা দেখেন, ফ্ল্যাটের গ্যারেজ খোলার চেষ্টা করছে দুজনে। আর রাস্তায় পড়ে চাদরে জড়ানো একটা 'বোঁচকা'। কিন্তু, তাঁদের সঙ্গে চোখাচোখি হতেই দাঁড়িয়ে পড়ে দুজনে। চাদরে জড়ানো 'বোঁচকা'টা তখন সাইকেলে তোলার চেষ্টা করে জামাই। বেশ খানিকক্ষণ চেষ্টার পর সাইকেলের উপর 'বোঁচকা'টাকে তুলতে পারে দুজনে। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই উল্টে যায় সাইকেলটি। এরপরই সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় জামাই। তবে, মহিলার মেয়ে তখনও রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। ফোন করতে দেখা যায় ওই যুবতীকে।
‘বান্ধবী’র বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার, বেহালা সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের প্রধান পুরোহিতের রহস্যমৃত্যু
পুলিস শম্পা চক্রবর্তীর ফ্ল্যাট থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। ওই ছুরি দিয়েই খুন করা হয় শম্পাকে। এরপর চলে দেহ লোপাটের চেষ্টা। ঘটনার নৃশংসতায় বিস্মিত সকলেই।