উত্তরের রথ সংস্কৃতিতে বাংলার ছোঁয়া আনতে রবির 'অভ্রভেদী' উদয়

লোকসভা ভোটের আগে রথযাত্রার মাধ্যমে জনসংযোগের উদ্যোগ বিজেপির।

Updated By: Nov 28, 2018, 09:50 PM IST
উত্তরের রথ সংস্কৃতিতে বাংলার ছোঁয়া আনতে রবির 'অভ্রভেদী' উদয়

অঞ্জন রায়

উত্তর ভারতের রথ সংস্কৃতি আদৌ বাঙালির মনে দাগ কাটতে পারবে? ভারতীয় জনতা পার্টির রথযাত্রার আগে এই প্রশ্ন রাজ্যের কোণায় কোণায়। সে কারণেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে শরণাপন্ন হল বিজেপি। রথের চাকা গড়ানো পর বাজবে কবির রচিত উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে....      

নয়ের দশকের শুরুতেই আডবাণীর রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছিল দিল্লির রাজনৈতিক অলিন্দ। সেই রথযাত্রাই এবার প্রথমবার পদার্পণ করতে চলেছে বঙ্গে। কিন্তু মিছিল, জাঠা, সভা-সমাবেশে অভ্যস্ত বাঙালি কি রথের রশিতে টান দেবে? উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রথকে রাবণযাত্রা বলে কটাক্ষ করেছেন। সাম্প্রদায়িক রথযাত্রার অভিযোগ তুলে পাল্টা সভা-সমাবেশের ঘোষণা করেছে এসএফআই। আর তাই রথযাত্রা বাঙালিয়ানায় মোড়াতে রবির শরণে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। রথের থিম সং হিসেবে বাছা হল কবিগুরু রচিত,

'উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে
ওই যে তিনি, ও ই যে বাহির পথে।
আয় রে ছুটে, টানতে হবে রশি,
ঘরের কোণে রইলি কোথায় বসি।
ভিড়ের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে গিয়ে
ঠাঁই করে তুই নে রে কোনোমতে'।

বিশ্বকবির লেখা পূজা পর্যায়ের গান এটি। ১৩১৭ বঙ্গাব্দের ২৬ আষাঢ় গানটি লিখেছিলেন কবিগুরু। তাল কাহারবা ও রাগ ভৈরবী-ভৈরব। 

সম্প্রতি সঙ্ঘ ও বিজেপি ঘেঁষা বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা। ওই বৈঠকে গেরুয়া দলের বঙ্গীকরণের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বুদ্ধিজীবীরা। টোটকা দিয়েছিলেন,  বিজেপি নেতাদের আরও বেশি করে বাঙালিয়ানায় সম্পৃক্ত হতে হবে। পরতে হবে ধুতি। বাইরে থেকে অবাঙালি নেতা নয়, বরং রাজ্য থেকে বাঙালি নেতাদের নেতৃত্বদানের জন্য বেছে নিতে হবে বিজেপিকে।

এর আগে কলকাতায় বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায় স্মরণ অনুষ্ঠানেও বাঙালিয়ানায় নিজেদের উপস্থাপন করেছিলেন বিজেপি নেতারা। মঞ্চে উত্তর ভারতের 'ভারত মাতা'র ছবির বদলে ছিল অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা 'ভারত মায়ে'র ছবি। এমনকি 'রামভক্ত' অমিত শাহ পুজো দেন তারাপীঠে। ফলে নানাভাবে বঙ্গীকরণের চেষ্টা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। 

বলে রাখি, বিজেপির রথযাত্রায় প্রায় ৭০জন নেতা-মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই তালিকায় রয়েছে অক্ষয় কুমারের মতো সেলেবও। বিজেপি শাসিত সবকটি রাজ্যের মু্খ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রের শীর্ষ মন্ত্রীদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। 

বিজেপির তরফে প্রকাশিত প্রথম নির্ঘণ্ট অনুসারে বীরভূমে রথযাত্রার উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ৫ ডিসেম্বর। উদ্বোধন করার কথা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। কিন্তু তেলেঙ্গানার ভোটের প্রচারে শাহ ব্যস্ত থাকায় ওই কর্মসূচি ১৪ ডিসেম্বর পিছিয়ে দেয় বিজেপি। সূত্রের খবর, তারাপীঠে সেই রথযাত্রারই উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

আরও পড়ুন- মায়া-মমতায় সমস্যা নেই, কংগ্রেসকে তাড়ান, ডাক মোদীর

.