Haridevpur Teen Electrocuted: হরিদেবপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু, দায় কার? চাঞ্চল্যকর দাবি বিএসএনএল-সিইএসসির
"আমি চোখের সামনে দেখি, এক কিশোর জলের মধ্যে পড়ে রয়েছে। আমি নিজে ১০০ ডায়াল করে লালবাজারে জানাই। হরিদেবপুর থানাকে ফোন করে জানাই। সিইএসসি-কে ফোন করে বলি। পুলিস আসে দেড় ঘণ্টা দেরিতে।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : হরিদেবপুরে (Haridevpur ) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যুর (Teen Electrocuted) ঘটনায় চাঞ্চল্যকর দাবি বিএসএনএলের (BSNL)। সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিষ সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য, "পোল আমাদের ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ দিতে আমরা বলিনি। আমাদের দায়িত্ব নয়। আমরা পাওয়ার দিই না। তদন্ত হলে তথ্য চাইব। কলকাতায় এমন ১৫ লক্ষ কানেকশন ছিল। এখন অনেক কমে গেছে। কিছু পোল রাখতেই হয়। কিন্তু পাওয়ার লাগাতে দেওয়া হয় না। আমরা এমন অনুমতি দিই না। আর কেউ অনুমতি নেয়ওনি।" অন্যদিকে, বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-র (CESC) দাবি, হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডে সিইএসসি-র সব কেবল ভূগর্ভস্থ। ওই বাতিস্তম্ভটি সিইএসসি-র নয়। ফলত, তার রক্ষণাবেক্ষণও সিইএসসি করে না।
রবিবার সন্ধেয় হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডে জমা জলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় বছর বারোর নীতীশ যাদবের। মর্মান্তিক ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হাতে একটি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিয়ে জল পেরিয়ে যাচ্ছে এক কিশোর। পুজোর প্রসাদ নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিল নীতীশ। তখনই বিপত্তি ঘটে। যে জায়গায় ওই ঘটনা ঘটে সেটি একটি সরু গলি। দু'পাশে বহু বাড়ি। সেই বাড়ি থেকেই এক মহিলা দেখতে পান, রাস্তার জমা জলে পড়ে ছটফট করছে এক কিশোর।
মৌ দাস নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, "আমি চোখের সামনে দেখি, এক কিশোর জলের মধ্যে পড়ে রয়েছে। আমি নিজে ১০০ ডায়াল করে লালবাজারে জানাই। হরিদেবপুর থানাকে ফোন করে জানাই। সিইএসসি-কে ফোন করে বলি। পুলিস আসে দেড় ঘণ্টা দেরিতে। আমরা এখন আতঙ্কে রয়েছি। আমার দুই ছেলে এখান দিয়েই যাতায়াত করে।" অপর প্রতিবেশী জানান, "আমরা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে আছি। অল্প বৃষ্টিতেই এখানে জল জমে যায়। আমরা এখন আতঙ্কে আছি।"
প্রসঙ্গত, এর আগেও কলকাতায় জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্য়ুর ঘটনা ঘটেছে। রেকর্ড বলছে,
২২ সেপ্টেম্বর ২০২১: দমদমে জমা জল পেরিয়ে পড়তে যাওয়ার সময় বিদ্যুতের খুঁটিতে হাত দিতেই মৃত্যু হয় দুই বন্ধু ১২ বছরের অনুষ্কা নন্দী ও স্নেহা বণিকের।
২৯ জুলাই ২০২১: আলিপুর পুলিস আদালত চত্বরে ভেজা বিদ্যুতের খুঁটিতে হাত দিতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দুই আইনজীবী সুপ্রতিম বারিক ও অরোদীপ মুখার্জি। তাঁদের সরাতে গিয়ে আরও এক কর্মী আহত হন।
১৮ জুন ২০২১: পাটুলির বৈষ্ণবঘাটার কাছে জমা জলে মাছ ধরতে গিয়ে মৃত্যু হয় তরুণ মন্ডল নামে এক যুবকের।
১১ মে ২০২১: রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে জমা জলের মধ্যে দিয়ে হাঁটার সময় লাইট পোস্টের খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ২৫ বছরের ঋষভ মন্ডলের।
এছাড়াও, ২৮ জুলাই ২০২১: জোড়াবাগানের দর্পনারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিটে গুদামের শাটার বন্ধ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ৫৬ বছরের প্রৌঢ় কাশীনাথ যোতির। যদিও বেআইনিভাবে লাইন হুকিং করা ছিল বলে অভিযোগ।
১৭ জুন ২০২১: হরিদেবপুরে জোকার নবপল্লির কাছে বিদ্যুতের তার গায়ে পড়ে মৃত্যু হয় ৩৬ বছরের মানিক বারুইয়ের।