চক্ষুদান হল শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রতিমার

অয়ন ঘোষাল

Updated By: Oct 11, 2020, 06:18 PM IST
চক্ষুদান হল শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রতিমার

অয়ন ঘোষাল

উত্তরের বনেদি বাড়ির পুজো মানেই অন্যরকম আবহ। তার মধ্যে তা যদি হয় খোদ রাজবাড়ির পুজো, তার প্রতি টান তো অন্যরকম হবেই। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো নিয়েও বাঙালির তেমনই এক মনকেমনিয়া ভালবাসার টান চিরকালই।

এ হেন শোভাবাজার রাজবাড়ির (বড় তরফ) প্রতিমার আজ, রবিবার বিকেল ৪-টে নাগাদ চক্ষুদান অনুষ্ঠান হল। রাজা নবকৃষ্ণ দেব এই পুজোর সূচনা করেন। দেখতে-দেখতে ২৬৪ তম বছরে পা দিল পুজোটি। ১৭৫৭ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে।

এ বাড়িতে সাধারণত মহালয়ার দিনই মাতৃমূর্তির চক্ষুদান অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু এ বছর তা করা গেল না।

কেন করা গেল না?

এ বার মহালয়ার পর থেকেই মলমাস পড়ে গিয়েছে। তাই এ বার চিরায়ত নিয়মে এল। আসলে চক্ষুদান করলেই প্রতিমা রঙ করার কাজও শুরু করে দেওয়াটা এ বাড়ির পুজোর বরাবরের রেওয়াজ। কিন্তু ৪১ দিন আগে থেকে রঙ করে রাখলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কুলপুরোহিত জয়ন্ত কুশারীর বিশেষ অনুমতি নিয়ে এ বার এই নিয়মে বদল আনা হয়েছে।

করোনা-আবহে পুজো নিয়ে অন্যরকম ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে শোভাবাজার রাজবাড়ি। তার মধ্যেই এই চক্ষুদান। জানা গেল, যিনি চক্ষুদান করবেন তাঁর মুখে মাস্ক থাকবে না। তবে প্রতিদিন তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। তিনি সব দিক থেকেই সম্পূর্ণ সুস্থ এটা নিশ্চিত করেই তবে এ ভাবে অনুষ্ঠানটি হচ্ছে। 

কেউই প্রতিমার সামনে যাবেন না-- এমনটাই ঠিক ছিল। রাজপরিবারেরে সদস্যরাও দূরে দাঁড়িয়েছিলেন। সদস্য বলতে অবশ্য দু'জন মাত্র। 

সংবাদমাধ্যমের লোকজনও দূরে দাঁড়িয়েই বিষয়টি দেখবেন বা সে সংক্রান্ত খবর করবেন এমনই ঠিক করে রাখা ছিল। সকলকেই 'স্যানিটাইজিং গেট' দিয়ে ঢুকতে হয়েছিল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ঝাড়বাতি জ্বলে উঠল। শুরু হল চক্ষুদান। বিধান মেনে প্রথমে মায়ের বাঁ চোখ আঁকা হল। চক্ষুকোটরে প্রথমে সাদা রঙের প্রলেপ। পরে তার ওপর  লাল পোঁচ। এর পরে ডান চোখের কাজ শুরু হল। ঠিক পঁচিশ মিনিটে চোখ দুটি আঁকা হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে মাকে পরানো হল শাড়ি। এতদিন, মা দেখতে পাচ্ছিলেন না। তাই তাঁর শরীররূপ মূর্তি ছিল অনাবৃত। যেই তাঁর চক্ষুদান হল, তিনি দেখতে পেলেন। নিজের শরীর দেখে তাঁর লজ্জা পেতে পারে এই ভাবনা থেকেই মাতৃমূর্তির গায়ে পরানো হল নতুন মেরুন রঙের শাড়ি। রঙের কাজ বন্ধ হলে প্রত্যেকদিনই বিধি মেনে মাকে এ ভাবে নতুন নতুন শাড়ি পরানো হবে বলে জানা গেল।

এ বার কবে পুজো আসবে তার অপেক্ষা। যদিও এ বারে করোনা-সুরক্ষা মাথায় রেখেই করা হবে এই পুজো। তবুও এই পুজো নিয়ে আবেগময় বাঙালির আবেগে কোনও খামতি নেই।

আরও পড়ুন: 'সাম্প্রদায়িকতার রং লাগাচ্ছে একটি রাজনৈতিক দল', শিখের পাগড়ি খোলা বিতর্কে জবাব স্বরাষ্ট্র দফতরের

.