বন্‌ধে হাজিরা বাধ্যতামূলক, নির্দেশ মুখ্যসচিবের

মুখ্যসচিব সমর ঘোষের নিশানায় এবার ২৮ ফেব্রুয়ারি। সাধারণ ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নির্দেশিকা জারি করলেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। ওই দিন সরকারি কর্মচারীদের কেউ কোনও ছুটি নিতে পারবেন না বলে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

Updated By: Feb 21, 2012, 06:32 PM IST

মুখ্যসচিব সমর ঘোষের নিশানায় এবার ২৮ ফেব্রুয়ারি। সাধারণ ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নির্দেশিকা জারি করলেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। ওই দিন সরকারি কর্মচারীদের কেউ কোনও ছুটি নিতে পারবেন না বলে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
এই নির্দেশিকার প্রতিবাদে পাল্টা চিঠি দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলি। তাদের বক্তব্য, এতদিন পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী ধর্মঘটের দিন কর্মচারীরা তাদের প্রাপ্য সিএল বা ইএল-এর জন্য আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু এদিন নতুন সার্কুলারের মাধ্যমে মুখ্যসচিব জানান, যে ২৮ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘটের দিন কর্মচারিরা কোনও রকম ছুটিই নিতে পারবে না। এরপরই চিঠি দিয়ে অবিলম্বে এই সার্কুলার পরিবর্তের জন্য আবেদন জানান কর্মচারী সংগঠনগুলি। নির্দেশিকা প্রসঙ্গে পরে মুখ্যসচিব জানান, ছুটি নেওয়াকে অধিকার হিসেবে গণ্য করা যায় না। তবে কেউ অসুস্থ হলে বা অন্য কোনও কারণে অনুপস্থিত হলে সেগুলি ঘটনা অনুযায়ী বিবেচনা করা হবে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সবকটি শ্রমিক সংগঠন। বামপন্থী সংগঠনগুলির সঙ্গেই ওই ধর্মঘটে যোগ দেবে কংগ্রেস ও বিজেপির শ্রমিক সংগঠনগুলিও।
আগেও ধর্মঘটের আগে সরকারি কর্মীদের নির্দেশিকা জারি করতেন মুখ্যসচিব। কিন্তু সেখানে ছুটি নেওয়ার উপর এমন নির্দেশিকা কখনও জারি করা হয়নি। এই ধরনের নির্দেশিকা আদৌ জারি করা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। এই নির্দেশিকার তীব্র সমালোচনা করে সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, ৩৪ বছর ধরে ধরে যে নিয়ম ছিল না সেই নিয়মের পরিবর্তন করে রাষ্ট্রকে দমনপীড়নের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ছুটির অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এই মর্মে কেউ আদালতে মামলা করতেই পারে। কিন্তু ধর্মঘট করা, প্রতিবাদ করা মানুষের মৌলিক অধিকার।সেই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। তবে ওই নির্দেশ সত্ত্বেও সরকারি কর্মীরা ধর্মঘটে সামিল হবে বলে আত্মবিশ্বাসী শ্যামল চক্রবর্তী। অন্যদিকে বিশিষ্ট আইনজীবি অসীমকুমার চট্টোপাধ্যায় মনে করেন ছুটি নেওয়া যে কোনও কর্মচারীর সাংবিধানিক অধিকার। কেন্দ্রীয় শ্রম আইন অনুযায়ী তাতে হস্তক্ষেপ করা অসাংবিধানিক। তাঁর মতে, মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশিকা কার্যত নজিরবিহীন। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত।
প্রত্যাশিত ভাবেই সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয় ওই ধর্মঘটের শান্তিপূর্ণ বিরোধিতা করবে তৃণমূল। তৃণমূল ভবনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে উন্নয়নের বিরোধিতা করতেই ওই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাম সহ একাধিক দলের শ্রমিক সংগঠন। তিনি বলেন, রাস্তায় নেমে ধর্মঘটের বিরোধিতা করবেন তৃণমূল কর্মীরা।

.