DA Strike: নবান্নে পৌঁছল ডিএ ধর্মঘটীদের নামের তালিকা, সোমবার পাঠানো হচ্ছে শো-কজ নোটিস

DA Strike: শুক্রবার ডি ধর্মঘটের পরদিন অর্থাত্ শনিবার জেলায় জেলায় ধর্মঘটী শিক্ষকদের পড়তে হল বিক্ষোভের মুখে। কোথায় স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কোথায়ও শিক্ষকদের  স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। 

Updated By: Mar 11, 2023, 10:16 PM IST
DA Strike: নবান্নে পৌঁছল ডিএ ধর্মঘটীদের নামের তালিকা, সোমবার পাঠানো হচ্ছে শো-কজ নোটিস

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বকেয়া ডিএ-র দাবিতে অনশন করছেন সরকারি কর্মচারীরা। তাদের অনশন তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তার মধ্যেই ডিএ-র দাবিতে যারা ধর্মঘট করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার।

আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাঙড়ের দায়িত্বে শওকত, বেজায় চটলেন আরাবুল!

শুক্রবার ধর্মঘটী সরকারি কর্মচারীরা কর্মস্থলে হাজির না হওয়ায় তাদের শো-কজ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সোমবার থেকে শো-কজ নোটিস পাঠাবে রাজ্য। কেন তারা অফিসে হাজির হননি তা তাদের কাছ থেকে জানতে চায় সরকার। গতকালই বিভিন্ন জেলা ও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছিল যারা শুক্রবার কর্মস্থালে অনুপস্থিত ছিলেন তাদের নামের তালিকা পাঠাতে। 

নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের আধিকারিকদের একটি বড় অংশই অনুপস্থিতি কর্মীদের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার আজ তা পাঠিয়েছেন। সেই তালিকা অর্থ দফতরে আসার পরই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সোমবার থেকেই অনুপস্থিত কর্মীদের কাছে শো কজের চিঠি পাঠানো হবে। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, ঠিক কী কারণে তারা শুক্রবার অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ সপ্তাহের মধ্যেই ওই শো কজ লেটারের উত্তর দিতে হবে।

এদিকে, শুক্রবার ডি ধর্মঘটের পরদিন অর্থাত্ শনিবার জেলায় জেলায় ধর্মঘটী শিক্ষকদের পড়তে হল বিক্ষোভের মুখে। কোথায় স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কোথায়ও শিক্ষকদের  স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। 

হুগলির পান্ডুয়ায় মুজিবর রহমান হাইস্কুলের ১৬ জন শিক্ষক ও প্রাইমারি স্কুলের ৬ জন শিক্ষককে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের দাবি, তাঁরা ধর্মঘটকে সমর্থন করেছিলেন সে কারণেই গতকাল আসেননি। আজ স্কুলে আসতেই তাদেরকে হেনস্থা করা হয়। তাদের অভিযোগ ,তৃণমূল নেতারা হুমকি দেন আগামী দশ দিন তাদের স্কুলে আসতে দেওয়া হবে না। যদিও পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, রাজ্য সরকার সকলকে স্কুলে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। শিক্ষকরা সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারত। কিন্তু তা না করে তারা স্কুল বন্ধ রেখেছিল। ৩৪ বছরের রেশ এখনও রয়েছে, শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে হেনস্থা করার জন্য এসব করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষকরা ঠিকভাবে স্কুলে আসেন না , পড়ুয়াদের পঠন পাঠানো ঠিকভাবে হয় না। তাই বিক্ষোভ দেখিয়েছে এলাকার মানুষ।

শুক্রবার স্কুলে না আসায় শনিবার পূর্ব বর্ধমানের মির্জাপুরের নরেন্দ্রনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন এলাকার মানুষজন। এদিন সকালে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে গিয়ে দেখেন স্কুলের দু'টি গেটে দুটো নতুন তালা লাগানো রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ তারা স্কুলের বাইরে অপেক্ষা করেন। পরে অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি নিয়ে যান। এমনকি মিড ডে মিল যারা রান্না করেন সেই সমস্ত রাধুনীরাও  স্কুলে ঢুকতে পারেননি।  স্কুলের শিক্ষক সুব্রত সোম জানান এই তালা কে বা কারা লাগিছে, আমরা জানি না। আমরা সকালে এসে স্কুলের তালা লাগানো অবস্থায় দেখতে পাই এবং আমরা স্কুলেও ঢুকতে পারিনি। বিষয়টি আমরা এসআইকে জানিয়েছি।

আমরা ধর্মঘটে সামিল হচ্ছি। ১০ মার্চ স্কুলে আসছি না। গত কয়েকদিন ধরে পকেটে এই ব্যাজ পরে ক্লাস নিয়েছেন ডোমজুড়ের উত্তর ঝাপড়দহ নোনাকুণ্ড মহাদেব বিদ্যামন্দির স্কুলের  শিক্ষকরা। গতকাল স্কুলে আসেননি কোনও শিক্ষক। ফলে বন্ধ ছিল ক্লাস। আজ যখন প্রধান শিক্ষক সহ অন্য শিক্ষকরা স্কুলে আসেন তখন তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। এই নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় ওই স্কুলে। পরে ডোমজুড় থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে সরকারি কর্মীরা যোগ দেন। ফলে হাওড়া জেলার বেশ কিছু স্কুলে শিক্ষকরা না আসায় স্কুল বন্ধ ছিল। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা না আসায় ছাত্র-ছাত্রীরা এসেও বাড়ি ফিরে যায়। ডোমজুড় এর উত্তর ঝাপড়দহ নোনাকুণ্ড মহাদেব বিদ্যামন্দির স্কুলে প্রায় ৮০০ ছাত্র ছাত্রী আছে। টিচার এবং প্যারা টিচার মিলে ১৬ জন আছেন। রাজ্য সরকার গতকাল স্কুল খুলে রাখা নির্দেশ দিলেও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুলে আসেননি এমনটাই অভিযোগ।  ফলে ওই স্কুলে কোন ক্লাস হয়নি। সুরজিৎ চক্রবর্তী নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ওই এলাকার গরিব ঘরের ছেলেমেয়েরা ক্লাস থেকে বঞ্চিত হল। এর পাশাপাশি সরকারি মিড ডে মিলের খাবারও তারা পায়নি। তাদের প্রশ্ন, এর দায় কার ? স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মাখাল জানিয়েছেন গতকাল তিনি স্কুলে আসেননি। এর আগে তারা ব্যাজ পড়ে ক্লাস নিয়েছিলেন। ব্যাজে লেখা পড়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসেনি। তবে স্কুল খোলা ছিল বলে তিনি দাবি করেন।

-তথ্য -সুতপা সেন, বিধান সরকার, দেবব্রত ঘোষ, অরূপ লাহা

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.